পাতা:প্রবাসী (ষড়বিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৯৩০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৬ষ্ঠ সংখ্যা ] ঋগ্বেদীয় উপনিষদের ব্রহ্মবাদ bWう掌 হইতে প্রাণ-সমূহ যথাস্থানে গমন করে এবং প্রাণ-সমূহ হইতে দেবগণ এবং দেবগণ হইতে লোক-সমূহ (নির্গত হয় )” । ( ৩৩ ) । ( 히 ) তৃতীয় দৃষ্টান্ত এই – “যখন সে এই শরীর হইতে উৎক্রমণ করে, তখন এই সমুদায়ের সহিতই উৎক্রমণ করে। বাকু ইহাতে (অস্মিন) সমুদায় নাম বিসর্জন করে, কারণ ইহা বাকু দ্বারাই সমুদায় নাম প্রাপ্ত হয়। প্রাণ অর্থাৎ ভ্রাণেন্দ্রিয় ইহাতে সমূদায় গন্ধ বিসর্জন করে, কারণ সে প্ৰাণেন্দ্রিয় দ্বারাই সে গন্ধ প্রাপ্ত হয় । চক্ষু ইহাতে সমুদায় রূপ বিসর্জন করে, কারণ চক্ষু দ্বারাই সে রূপ প্রাপ্ত হয় । শ্রোত্র ইহাতে সমুদায় শব্দ বিসর্জন করে, কারণ শ্রোত্র দ্বারাই সে সমুদায় শব্দ প্রাপ্ত হয় । মন ইহাতে সমুদায় চিন্ত বিসর্জন করে, কারণ সে মন দ্বারাই সমুদায় চিন্তা প্রাপ্ত হয়। প্রাণেই এই সৰ্ব্বাপ্তি ( অর্থাৎ সমুদ্ৰায়ের বিলয় )”। ইহার পরেই বলা হইল, “যাহা প্রাণ, তাহাই প্রজ্ঞা, যাহা প্রজ্ঞ, তাহাই প্রাণ। ইহার এই শরীরে একত্র বাস করে এবং একত্রই উৎক্রমণ করে।” (৩৪ ) । এই তিনটি স্থলে বলা হইল যে, (১) প্রাণ ও প্রজ্ঞা দুই হইয়াও এক । বিশেষ বিশেষ অবস্থাতে উভয়ে সম্মিলিত হইয়া একাকার ধারণ করে । এই সম্মিলিত অবস্থার নাম আত্মা । (২) স্বযুপ্তি ও মুমুধু অবস্থাতে সমুদায়ই আত্মরূপে বিলীন হয়। যখন পুরুষ সংজ্ঞালাভ করে তখন (ক) আত্ম হইতে প্রাণ-সমূহ নিৰ্গত হয় ; (খ) প্রাণ-সমূহ হইতে দেবগণ নির্গত হয় ; (গ) দেবগণ হইতে এই জগৎ নির্গত হয় । ‘প্রাণ-সমূহ অর্থে চক্ষুরাদি ইন্দ্রিয় ; আর কৌষীতকি উপনিষদে ( এবং আরও অনেক উপনিষদে ) ‘দেবগণ অর্থেও প্রাণ সমূহ। তাহা হইগে (খ) অংশের অর্থ দাড়ায় “প্রাণ-সমূহ হইতে প্রাণ-সমূহ নির্গত হয়।” ইহা অর্থশূন্ত কথা। ভাষ্যকার বলেন—‘দেবগণ অর্থে ‘অগ্ন্যাদি দেবতা” । কেহ কেহ বলেন, ইহার অর্থ “ইন্দ্রিয়-শক্তি” । পরবর্তী মস্ত্রের সহিত সামঞ্জস্য রাখিয়া ব্যাখ্যা করিলে বলিতে হয় ‘দেবগণ’ অর্থে "রূপরসাদি ভুতমাত্রা’। তাহা হইলে সমগ্র অংশের অর্থ দাড়ায় এই –আত্ম হইতে ইন্দ্রিয়-সমূহ, ইন্দ্রিয়-সমূহ হইতে রূপৰসাদি ভুতমাত্রা, এবং রূপরসাদি ভূতমাত্রা হইতে স্থূল জগৎ উৎপন্ন হয় । ভুতমাত্রার উৎপত্তি বাকৃ ইহার (অর্থাৎ প্রজ্ঞার) এক অঙ্গ দোহন করিয়াছে এবং ইহার ভুতমাত্র। ‘নাম বহির্ভাগে স্থাপিত হইয়াছে । প্রাণ (== নিঃশ্বাস-প্রশ্বাস) ইহার এক অঙ্গ দোহন করিয়াছে এবং ইহার ভুতমাত্র। গন্ধ’ বহির্ভাগে স্থাপিত হইয়াছে। চক্ষু ইহার এক অঙ্গ দোহন করিয়াছে এবং ইহার ভূতমাত্রা ‘রূপ’ বহির্ভাগে স্থাপিত হইয়াছে । শ্রোত্র ইহার এক অঙ্গ দোহন করিয়াছে এবং ইহার ভূতমাত্রা ‘শব্দ’ বহির্ভাগে স্থাপিত হইয়াছে। জিহব। ইহার এক অঙ্গ দোহন করিয়াছে এবং ইহার ভূতমাত্রা অন্নরস' বহির্ভাগে স্থাপিত হইয়াছে । হস্ত ইহার এক অঙ্গ দোহন করিয়াছে এবং ইহার ভূতমাত্র। ‘কৰ্ম্ম বহির্ভাগে স্থাপিত হইয়াছে। শরীর ইহার এক অঙ্গ দোহন করিয়াছে এবং ইহার ভুতমাত্র ‘স্বখ-দুঃখ’ বহির্ভাগে স্থাপিত হইয়াছে।... ...পাদদ্বয় ইহার এক অঙ্গ দোহন করিয়াছে এবং ইহার ভূতমাত্র গতি বহির্ভাগে স্থাপিত হইয়াছে। মন ইহার.এক অঙ্গ দোহন করিয়াছে এবং ইহার ভুতমাত্রা ‘জ্ঞান, জ্ঞেয় ও কাম’ বহির্ভাগে স্থাপিত হইয়াছে” । (৫) । - ঋষির মতে নাম, গন্ধ, রূপ, শব্দ, অমরস, কৰ্ম্ম, স্থখদুঃখ, আনন্দরতি ও প্রজাতি, গতি, এবং ‘জ্ঞান, জ্ঞেয় ও কাম’– এই দশটি ভুতমাত্র । এই দশটি ভুতমাত্রা লইয়াই জগং । বাগাদি দশটি ইন্দ্রিয় প্রাণরূপী প্রজ্ঞাকে দোহন করিয়া এইসমুদায় ভুতমাত্র উৎপন্ন করিয়াছে এবং এইসমুদায় ভূতমাত্রাকে প্রজ্ঞারুপী আত্মার বহির্ভাগে স্থাপন করা হইয়াছে । এই মতের সহিত Fichte ( ফিকূটে ) এর অধ্যাত্মবাদের সম্যক সাদৃত রহিয়াছে। এ জগৎ প্রজ্ঞামূলক ঋষি বলিতেছেন :– “(পুরুষ ) প্রজ্ঞাদ্বারা বাগিন্দ্রিয় আশ্রয় করিয়া বাক্য দ্বারা সমুদায় নাম প্রাপ্ত হয়” । ইহার পরে ঋষি অনুরূপ ভাষায় বলিয়াছেন যে, প্রজ্ঞদ্বারাই পুরুষ অপরাপর ইন্দ্রিয়কে আশ্রয় করে এবং ইন্দ্রিয়ের বিষয়-সমূহ লাভ করিয়া থাকে। প্রজ্ঞাদ্বারাই পুরুষ প্রাণ ( অর্থাৎ ভ্রাণেন্দ্রিয় ) চক্ষু, শ্রোত্র, জিহবা, হস্ত, শরীর, পদ, ধী—এইসমুদায় ইন্দ্রিয়কে আশ্রয় করে । এবং এইরূপে আশ্রয় করিয়া বাক্য দ্বারা নাম, চক্ষু দ্বারা রূপ, জিহবা দ্বারা রস, হস্ত দ্বার-কৰ্ম্ম, শরীর দ্বার স্থখ-দুঃখ, পদদ্বয় দ্বারা গতি, ধী দ্বারা ‘ধী, জ্ঞেয় ও কাম’ লাভ করে ( ૭ા૭ ) । এখানে বলা হইল, পুরুষ যাহা কিছু করে, তাহ প্রজ্ঞা দ্বারাই ; প্রজ্ঞ ভিন্ন কিছুই সম্ভব হয় না। প্রজ্ঞা ভিন্ন জ্ঞান অসম্ভব ইহার পরে বলা হইয়াছে :– معجی در