পাতা:প্রবাসী (ষড়বিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৯৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

"や বুঝিতে চাই তাহা হইলে ঐ স্ফুলিঙ্গকৃষ্টির ক্ষণস্থায়ী লীলায় মুগ্ধ হইলে চলিবে না-অচপল স্থায়ী মধ্য-শিখাটির ধ্যান করিতে হইবে। ঐ ত প্রাণসবিতা ! উহার মধ্যে নিজেকে মিশাইয় দিতে হুইবে—তাপ আহরণ করিতে হইবে ; ঐ প্রাণ-উৎস হইতেই ত এই বিশ্ব-প্রাণের অসীম স্রোত উন্মত্ত হইয়া ছুটিয়া আসিতেছে। এই বিশ্বের কারণনির্দেশ যদি করিতে যাই তাঙ্গ নিজেদের মধ্যেই পাইব ; খুজিয়া ফিরিতে হইবে জানি, কিন্তু শেষে বুঝিতেই হইবে যে অস্তিত্বের চরম রহস্যটি রহিয়াছে আমাদের আমিত্বেরই মধ্যে । এই অস্বীক্ষার জন্য ভবিষ্যতের দিকে চাহিয়া থাকার প্রয়োজন নাই ; আমি এই মুহূৰ্বেই উপযুক্ত, ইহ। বিনয়ের অমান্য না করিয়াও বলিতে পারি। আমার ‘আমি’কে লইয়া এতগুলা বছর ত কাটাইয়াছি । সত্য রম্য রলাকে এখনও চিনি মাই, হয়ত কখনও চিনিব না। কিন্তু মধ্যে মধ্যে নিজের ব্যক্তিত্বের তলদেশ পর্য্যস্ত ডুবিয়া যতটুকু সত্য দেখিয়াছি ততটুকু বলিয়া যাওয়াও যথেষ্ট। আত্মার সেই অতলে দুএকবার ঠেকিয়াছি, সেখানে একটু বিশ্রাম করিয়াছি, সৰ্ব্বজয়ী প্রাণের স্রোতে স্বান করিয়াছি। বহুদিন পরে-পরে ক্ষণকালের জন্য যে অনুভূতির স্পশ পাইয়াছি, তাহী ক্রমশঃ মেন অভ্যাসগত হইয়া আসিতেছে। এই অধ্যয়সঙ্কটের কথা অনেকবার লিপিবদ্ধ করিয়া আসিয়াছি ; আমার ভগবান আমায় স্পর্শ করিয়াছেন, সজ্ঞানে সপ্রেমে তাহাতে ধেন মিলাইয়৷ গিয়াছি । চক্ষু মুদিয়া কখনও মনে হইয়াছে যেন কোন অদৃশ্য স্বৰ্গ-সঙ্গতের গায়কশিশুর মত ঘুরিয়া বেড়াইতেছি। সেই সুদূর হইতে নীচে—এত নীচে যে দেখিতে মাখ ঘুরিয়া যায়-দেখিতেছি এই পৃথিবীর স্নিগ্ধখ্যামল বিস্তার, তার বুকে কত রূপের নৃত্য কত রঙের ঢেউ ! আমার ভগবান – যার স্ফুলিঙ্গমাত্র আমার মধ্যে রূপ ধরিয়াছে— তিনি মেন তার চোপ দিয়া আমায় সব দেখাইতেছেন,তিনপ। দুরের জিনিষ যেন দূর দূরান্তরের রহস্যমণ্ডিত হইয়। দেখা দিতেছে । চকিতে দেখিতেছি, স্পষ্ট চোখ খুলিয়। সব দেখিতেছি । নৃত্য গীত আনন্দোৎসবের মধ্যে আমার চারদিকের মানুষের ভিড় ও জীবনের তরঙ্গ যতই প্রবাসী—বৈশাখ, ১৩৩৩ [ ২৬শ ভাগ, ১ম খণ্ড, প্রবল হইয়া উঠে ততই দেখি তার দৃষ্টি যেন নিবিড় হুইয়। আসে। বুঝিতেছি আমার ধৰ্ম্ম পরিণত রূপ লাভ করিতেছে-ভাষায় তাহ প্রকাশ করিবার প্রয়াস জাগিতেছে। প্রকাশ করিবার সঙ্কল্প কেন করিলাম ? আমার ভগবান যে সকল আত্মার আত্মা ; তাহাকে দিয়া স্বরু করিলে ঐ অসংখ্য আত্মার প্রাণে অকুপ্রবেশ আমার সহজ হইবে; সম্মুখের জীবন তাহাদের পরিচয় লাভ করিতে উৎসর্গ করিব। তাছাড়া এই অনুভূতিটি ভাষায় প্রকাশ করার মধ্যে আমি মুক্তির আস্বাদ পাইতেছি ; মৃত্যুর বিভীষিক হইতে আমার হৃদয় যেন श्रेङ হইতেছে। মৃত্যু বুকের মধ্যে দুর্গ গড়িবার জোগাড় করিয়াছিল, তাহাকে উৎপাত করিয়াছি, মৃত্যুকে জয় করিয়াছি। আমি বাচিয়া আছি, বঁাচাইতে চাই, মৃত্যুর পরও বাচাইয়া তুলিতে চাই ! যে কেহ আমার মত বেদনায় মুমুযু হইয়াছে সকলকে বাচাইবার, সাহায্য করিবার আমার যে স্পৰ্দ্ধ ও দুঃসাহস তাহ যেন মানুষে ক্ষমা করে—মাতুষকে ভালোবাসি বলিয়াই আমার এই দুঃসাহস । দুঃখপথের সহযাত্রী ! হে আমার দুঃখ-অভিহত ভাইবোন ! জীবন তোমাদের মধুময় হয় নাই, আমারও না । আমি দুঃখ পাইয়াছি কিন্তু সেই সঙ্গে হৃদয়ে শাস্তির সন্ধানও মিলিয়াছে ; সেই শান্তি তোমাদের প্রাণে পৌছিয়া দিতে চাই ; যে কেহ রুগ্ন, দরিদ্র, দুৰ্ব্বল, অথবা ধনী, বলবান, স্বর্থী, এ জগতে সকলকেই ঐ শান্তির সন্ধান দিতে চাই । তোমাদের সম্বন্ধে আমার ঈর্ষা দ্বেষ নাই বলিয়। আমি বেশ তামুভব করি যে, ঐ দুঃখীদের মতন, সুখী তোমরাও, কষ্ট পাও, অসহ্য নিশ্চেষ্টতা ও নিষ্ঠুর মানসিক উৎকণ্ঠ। হইতে কষ্ট পাও। তাস্থহীন অলস কল্পনাই তোমাদের সার্থী। যে কেহ দুঃখ পায় এবং যে দুঃখের স্বাদ পায় নাই সকলকেই আমি ভালোবাসি ; আমার হৃদয়ে সত্য যতটুকু আছে তোমাদের দিতে চাই-বিশেষভাবে তাদের দিতে চাই যাদের প্রয়োজন আছে। পৈতৃক সম্পত্তির মত বিশ্বাস যাদের কাছে প্রথম