পাতা:প্রবাসী (ষড়বিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৯৪৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ᎿᏅᏓr? আমাদের পাশ দিয়ে হেঁটে চ'লে যেত তা হ’লে বিশ্বয়ে আমরা ই ক’রে তার দিকে চেয়ে থাকৃতাম ; মনের ভাবট তখন এই রকম হ’ত যে “এ আবার এক কী অদ্ভুত জীব।" তার সেই বলবান চেহারা দেখে আনন্দ হওয়া ত দূরের কথা, সে যে একটা নেহাৎ “গেয়ে|” এই কথাটাই আমরা নিজের মনকে ভাল ক'রে বুঝিয়ে দিতে কোন রকম ক্ৰটী কবুতাম না। যাক কি ছিল আর কি ছিল না, সে-কথা নিয়ে বেশী লিখবার ইচ্ছা বা ক্ষমতা আমার নেই। যা কিছু সামান্য বলবার আছে তা বৰ্ত্তমানের বাঙ্গালী যুবার জীবনের পরিবর্তন নিয়ে । ক্রমশঃ সকলেই বুঝতে পারছেন যে, বাঙ্গালীর জীবনে “বগ” ও “বাবুয়ানী’র যুদ্ধে বলই জয়লাভ করছে। পুরুষের মেয়েলিপনাকে আমরা ক্রমশ আন্তরিক ঘুণ। করতে শিখছি। শরীরের বল আর মাংসপেশীর গঠনই যে পুরুষের আসল সৌন্দৰ্য্য, আর এ-দুটি জিনিষ আয়ত্ত করতে পুরলেই সে সবচেয়ে বেশী “বাবুয়ানী” করা হয় এ কথাটি ধীরে ধীরে বাঙ্গালীর মনে বদ্ধমূল হ’য়ে দাড়াচ্ছে । কোনো মতে ছচারটে “পাস’ দিয়ে, পাঠক্লাস্ত জীবন নিয়ে চাকরীতে ঢোকা ছাড়াও যে আমাদের আরো কিছু কাজ আছে তা এতদিনে আমরা বুঝতে শিখছি। এখন তাই দেশে দেশে বাঙালী ব্যায়ামের আখড়া, বাঙ্গালীর কুস্তির আখড়া আর বাঙ্গালীর সন্তরণপ্রতিযোগিতা একটির পর একটি মাথা তুলে দাড়াচ্ছে। দেখতে দেথতে যেন কোন যাদু-মন্ত্রে ছেলেদের দল তাদের সুন্দর মাংসপেশী ও তাদের শরীরের অসীম ক্ষমতা দেখিয়ে তাদের দুর্বল, ম্যালেরিয়া-গ্রস্ত অত্যধিক-পাঠে । ক্লাস্ত বন্ধুদের মনে আশার রঙীন আলো জেলে দিচ্ছে। চারিধারে যেন নূতন কিসের বেশ একটু সাড়া পড়ে গিয়েছে। তাদের এখন আর পোষাকের সে-পরিপাট্য নেই মাথায় আর সে টেরীর বহর নেই ; মেয়েল "স্বরে” কথা বলবার আর সে আগ্রহ নেই, আর সব-চেয়ে য দেখলে মন আনন্দে নেচে ওঠে তাদের সকলেরই বুক চিতিয়ে চলবার ইচ্ছা এবং ক্ষমতা দুই বাড়ছে। পথে একটি বলবান লোক যেতে দেখলে, আমরা প্রবাসী-আশ্বিন, ১৩৩৩

  • [ २७* छांनं, sञ थ७

এখনও ঠিক তেমনি ক’রে তার দিকে চেয়ে থাকি বটে, কিন্তু এ চাওয়া বিস্ময়ের চাওয়া নয় ; এ চাওয়াতে থাকে তার শরীর-গঠনের ধৈৰ্য্যের প্রতি আমাদের নীরব পুজা । ও তার সেই পুরুষকারের প্রতি একটা গভীর ভক্তি। যখন তার সেই চওড়া পিঠ আর মস্ত বুকখান দেখে আমাদের বুক আনন্দে ভরে ওঠে তখন আমরা ব্যাকুল হ’য়ে মনকে বোঝাক্ট, “আর বেশী দিন নেই, ব্যস্ত হচ্ছ কেন ? তুমিও একদিন ঠিক এমনিই শরীর নিয়ে পথে বেরুতে পারবে !” এই পরিবর্তনের দুটি কারণ প্রথমেই আমাদের চোখে পড়ে। এক হচ্ছে, পথে ঘাটে, ফুটবল ম্যাচে ও টেনে অ্যাংলো ইণ্ডিয়ান ও ইউরোপীয়দের হাতে আমাদের অশেয লাঞ্ছন ও দ্বিতীয় পাশ্চাত্য দেশের ভাল ভাল স্বাস্থ্যোন্নতি-সাধকদের জীবনী ও তাদের কাৰ্য্যকলাপ পাঠ আর তাদের স্বগঠিত ও বলবান দেহের ছবি দেখা । আমার শরীর-গঠনের মূল কারণ হচ্ছে এই শেষোক্তটি। লাহোর সিনেমাতে আমি যে-দিন “Maciste"র বিরাটকায় ও তাহার সেই স্বন্দর স্বরক্ষিত ব্যায়ামাগার দেখি এবং তার অমাতুষিক দৈহিক শক্তির পরিচয় পাই, সেইদিন থেকেই একটি ব্যায়ামের আখড়া গড়ে তুলবার আকুল আগ্রহ আমায় পাগল ক’রে তুলত। ঠিক তার দু'দিন পরে আমার একটি বন্ধুর বাড়ীতে আমরা চার পাচ জনে স্ট মিলে ব্যায়ামের একটি ঘর প্রতিষ্ঠা করলাম—তখন অবখ্য সেটাকেই আমরা জিম্ন্তাসিয়াম বলতাম। আমাদের তথনকার সম্বল ছিল একজোড়া রোম্যান রিং, একজোড়া মুগুর ও একটি বড় আয়ন। ব্যায়ামাগারখানি ছেলেদের ভিড়ে ক্রমে এত ভীরে উঠতে লাগল যে, আমাদের সেই প্রিয় ছোট ঘরখানি বদলাতে হ’ল। তার পরিবর্তে লাহোরেব কালীবাড়ীতে একটি ছোটখাট ব্যায়ামাগার দাড় করালাম । সেই হ’ল আমার শরীর গঠন করবার প্রথম প্রয়াস । ঈশ্বরের ইচ্ছায় আমার সেই চেষ্ট। ফলবতী হয়েছে। আমি লাহোরে থাকৃতে থাকৃতে প্রায় ত্ৰিশ জন ছাত্রের শরীরের আশ্চৰ্য্যরকম উন্নতি দেখে এসেছিলাম।