পাতা:প্রবাসী (সপ্তত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/১১৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

প্রবাসী 穹\°8$ r w প্রাচীন মারু* অর্থাৎ জমিদারদের সখের বজরা দুলতে লাগলু । জাহাজ ডাঙার থেকে সরে যাচ্ছে, ফিতার বাধনে টান পড়ছে। তীরের বন্ধুরা যেন বিরাট জাহাজটাকে সমূত্রে ঘুড়ির মত ওড়াচ্ছে, জাহাজ যতই দূরে সরে যায় ততই তারা লাটাইয়ের স্থতার মত ফিতার পাক খুলে খুলে দেয়। লাটাইয়ের স্থতো দিয়ে আকাশের ঘুড়ি যেমন মাটির মামুষের সঙ্গে বঁtধা থাকে, তেমনই ফিতা যতক্ষণ আলগা দেওয়া চলল ততক্ষণ ডাঙার বন্ধুর সমুদ্রযাত্রী বন্ধুদের বেঁধে ধ’রে রাখল। ষে ফিতার দৈঘ্য শেষ হয়ে যায়, জাহাজের টানে পট ক'রে সেটা fছড়ে যায়, সে বন্ধুর মায়ার বন্ধন কেটে গেল। কেউ বা বেশী উৎসাহ করে একটা ফিতার মুখে আর একটা ফিতার শেষ বেঁধে তাকে দ্বিগুণ লম্বা ক’রে , তুলছিল। কিন্তু এক এক করে সব বন্ধনই টুটে গেল, জাহাজ তীরের মায়ামুক্ত হয়ে সমুদ্রে, পাড়ি দিল, তাকে আর পিছু ডাক গেল না। বন্ধুদের হস্তচু্যত ক্ষিতাগুলি জলে ভেসে ভেসে জাহাজের সঙ্গে চলল । মনে করেছিলাম এইবার বুঝি সবাই ঘরে ঢুকবে। কিন্তু কারুর সে-রকম উৎসাহ দেখা গেল না । অৰ্দ্ধচন্দ্রের মত বোম্বাই শহর সমুদ্রকুল ঘিরে রয়েছে, তাঁর ৰেসে জাহাজ চলেছে, সবাই সেইদিকে তাকিল্পে আছে । হঠাৎ দেখি, গুটি পাঁচ-ছয় জাপানী মহিল৷ ভিন-চারটি বাচ্চtঙ্কাচ ও একজন ভদ্রলোককে সঙ্গে ক’রে মোটর গাড়ীতে এসে হাজির। এটাও ডকের মত দেখতে । এর এক জায়গায় বিদায়-পৰ্ব্ব শেষ ক'রে অrর এক জায়গায় বন্ধুদের আবার দেখতে এসেছে । এখানেও সেই ফিতা ছোড়া, ফি তার জাল বোন । কচি কচি ছেলেরা ৪ ঘুড়ির স্ব তার মত ক’রে ফিতা টানতে লাগল। সব ফিভার বাধন শেষ ক’রে জাহাজ একটা একটা ক'রে লক-গেট পার হয়ে চলল । শরীর ক্লাস্ত হয়ে পড়াতে বোম্বাইএর শেষ দৃপ্ত আর দেখা হ’ল না। কেবিনে ঢুকে শুয়ে পড়লাম। জামাদের কেবিনের নম্বর ২৭ ছিল। কিন্তু জাহাজের থোলে ঢুকেই চারটে দিক এমন একরকম লীগত যে প্রথম দিন কতবার যে আমি কেবিন ও পথ ভুল করেছি তার ঠিক নেই। রবিবাবুর প্রথম সমুদ্র-ধাত্রার মত কাও অবগু করিনি, কিন্তু সেটা নেহাৎ অদৃষ্ট স্বপ্রসন্ন ছিল বলে। প্রথম দিন চাবি দিয়ে পরের কেবিন খুলতে খুব চেষ্টা ক'রেও যে খুলতে পারি নি তার কারণ চাবিট। তাতে লাগল না । কেবিন-বস্তু আমার অবস্থা বুঝে ঠিক পথটা আমায় দেখিয়ে দিতে এল । তার কথাও ভাল ক'রে না বুঝে এক মনে চাবি ঘোরাচ্ছি, হঠাং চোখে পড়ল –ওমা এ ষে ২৪ নম্বর ঘর ছেলেমাহষর বোধ হয় সব জিনিষ তাড়াতাড়ি চেনে । আমার মেয়ে এক মূহুর্তেই জাহাজের পথঘাট অন্ধিসদ্ধি সব চিনে ফেলল। কোন ঘরে কে কে থাকে সব তার মুখস্থ। আমাদের সামনের কেবিনে দুটি আমেরিকান মহিলা ছিলেন। তারা এই দেশেই শিক্ষয়িত্রীর কাজ করেন, ছুটিতে বাড়ী যাচ্ছিলেন। একটি মহিলা এমন রোগা যে তার এক পাটি দাত ছাড়া আর কিছু প্রায় চোখে পড়ে না । দেখলেই হাসতেন, কিন্তু কথা খুব কম বলতেন । পাশের কেবিনে, একটি সাহেব ছোকরা থাকত। সে যাচ্ছিল' হংকং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে। বেচারীর অবস্থা বড় কাহিল। খাবার টেবিলে তার সঙ্গে বসভেন পাচটি