পাতা:প্রবাসী (সপ্তত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/১৩০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কীৰ্ত্তিক বলে—দেখ বাবা, উৎপাতটা দেখ একবার। গরু মাঠে । নিতে দেয় না। দাও দিকি এক নম্বর ফৌজদারি ঠুকে— ডাকাত মেয়ে জেল খেটে মক্লক— কানাই বলল—আচ্ছা হাবা ছেলে ত তুই । কড়কড়ে ধানবন—তার মধ্যে গরু নিয়ে যাস কোন আক্কেলে ? সত্যি কথাই ত বলেছে দুলি-মা ! আমি বলে গোলা বাধতে বায়ন দিয়ে এলাম, আর তুই গরু দিয়ে খাওয়াতে ধাস । মন্দরাম আশ্চৰ্য্য হয়ে জিজ্ঞাসা করল—ধানগাছ গরু দিয়ে খাওয়াবার কথা,—ধান আমাদের গোলায় তুলতে দেবে কেন ? কানাই বলতে লাগল—ন,–দেবে না। চাটুজ্জেমশাস্থের চেয়ে আইন ত কেউ বেশী জানে না—তিনি বললেন, আলবৎ দেবে । নন্দা, গরুগুলোকে রাত্রে জীবন দিবি,-ধানবনে নিয়ে যাস না আর— কানাই ঘরে গিয়ে উঠল । নন্দ দুলির দিকে চেয়ে দেখল, মেয়েটার খুশীর অবধি নেই। আবার জিজ্ঞাসা করে— ঞ্জিত হ’ল কার ? নদ বলে—কার শুনি ? —আমার, আমার । হাবা মেয়ে দন্তে যেন ফেটে পড়ছে -কেমন, ধান খাওয়াতে যেও এবার । চুপি চুপি আমি কানাই-জেঠাকে ব’লে দিয়ে যাব, তখন বুঝবে মজা— সন্দর চোখে জল আসতে চায়। সামলে নিয়ে বলল— আচ্ছা দুলি, এত কষ্ট করে চাষ করলি তোরা,—ফাকি দিয়ে আমরা সে-সব নিয়ে নিচ্ছি। তা কষ্ট হচ্ছে না তোর ? দুলি বলল—আমার কষ্ট হয় লক্ষ্মীর অযত্ন দেখলে । গরু দিয়ে ধান খাওয়ালে আমার এক-একটা পাজরা খসে যায় যেন । এবার ত তা চলবে না । হাসতে হাসতে বিজয়ীর মত দুলি চলে গেল । নন্দ নিজের মনে বলতে লাগল—এই বুদ্ধি নিয়ে গয়লা গয়লা করিস আমায়। টের পাবি, যখন উপোস করে থাকতে ठूtद ! ক্ষেতে নামুবার হুকুম নেই, আ’লের ঘাস কেটে এনে & গন্ধকে খাওয়াতে হয়। একদিন সন্ধ্যা গড়িয়ে গেছে, নন্দ বাসের বোঝা মাথায় নিয়ে আসছে। হঠাৎ দেখল, শাস্ত আউশ ধান ఫ్రెs ডোমের ভিটার ধারে তালগাছের গোড়ায় একটা লোক চুপচাপ বসে আছে। —-কে ? —আমি, বাবা । বুড়া জীবধর একলা ধানবনের দিকে মুখ ক'রে বসে আছে। কৈফিয়তের ভাবে বলতে লাগল— কাজকৰ্ম্ম নেই, কি করি—বেড়াতে বেড়াতে চলে এলাম এদিক পানে— বৃষ্টির জল পেয়ে নাটা ও কালকীস্বন্দের ঝোপ মাথা তুলে দাড়িয়েছে, ভাসা বাদার দু-দশটা জাত-কেউটেও ধে আস্তান না নিয়েছে, এমন নয়। এটা বেড়াবার জায়গাই বটে ! মাথার বোঝা মাটিতে ফেলে নন্দরাম তার উপর এক পা তুলে দাড়াল। o - —ক্ষেত্তটা তাহলে আমাদেরই সাব্যস্ত হ’ল ? জীবধর বলল—ক্ষেত ত নয়, ক্ষেতের ধান— —কিন্তু ধানগাছ আমাদের,—ধানের চুক্তি ত কিছু ছিল না— -গাছ হ’লে তার ফলও পাওয়া སི་ বাবা । চাটুজেমশায় ব’লে দিয়েছেন । t —ত বলে,—বাড়ীতে ভারে ভারে দুই-ইন'-য়ে নিয়ে গেলে সবাই আমন ব’লে থাকে । নন্দরাম ফ্লেন ক্ষেপে গিয়েছে। বলতে লাগল-চাটুজে বললেই অমনি হবে নাকি ? জমিদারের কাছারি নেই ? জীবধর বলল—হা রে কপাল! কানাইয়ের নামে বলতে আমি যাব জমিদারের কাছারি ? —তুমি না যাও, যাবার কত লোক রয়েছে, সর্দারখুড়ে । রাঙী দড়ি ছিড়ে দু-গোছ ধান খেল, দুলি তাতে খোট। দিল--হেন-তেন কত কি গালমন্দ করল । কেন করল অমন ? গোলমাল ত সেই থেকে। আমি কি করেছি ? আমি টাকা আদায় ক’রে দিয়েছি—চুক্তির সময় ছিলাম আমি যত গণ্ডগোলের গোড়াই ত ছলি! কথা আর সে বলতে পারল না। ভাড়াতাড়ি বোঝাট মাথায় তুরে হন হন করে চলে গেল। ক'দিন পরে নহ্ম জীবরের একেবারে সামনে পড়ে গেছে,