পাতা:প্রবাসী (সপ্তত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/১৪০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কীৰ্ত্তিক কলির মেয়ে సిడిసి মা শুনিয়া ফেলিতে পারেন । অতএব সে গলা ছাড়িয়া পুটুরাণীকে ডাকিতে লাগিল। তাহার চীৎকারে অতিষ্ঠ হইয়া পুটু খানিক পরে আসিয়া হাজির হইল। জিজ্ঞাসা করিল, “তোমার হয়েছে কি শুনি ? এত টেচাচছ কেন ?" হেমেন্দ্র বলিল, “তোর বৌদি কোথায় গেল ? তাকে ডেকে দে * পুটু গজ গজ করিতে করিতে চলিয়া গেল । খানিক পরে মুনয়নী আসিয়া জিজ্ঞাসা করিল, “কি চাই আবার ?” হেমেন্দ্র বলিল, “একটা কথার মধ্যে হট, ক'রে উঠে গেলে কেন ?” সুনয়নী বলিল, “তা আমার রান্নাঘরে কাজ প’ড়ে রয়েছে যেতৃে হবে না? আর তোমার সঙ্গে তর্কাতকি ক’রে লাভই বা কি ? পাচ বছর ত ঘর করছি, তর্কের ফল কি যে হবে তা আর আমার জানতে বাকি নেই।” হেমেন্দ্র বলিল, “তা বেশ, আমাকে বাদ দিয়ে যদি তোমার চলে ত আমারই কি চলে না ? বেশ তাসের আড়াট বসেছিল পূর্ণর বাড়ীতে, বৃথাই তাড়াতাড়ি চলে এলাম * স্বনয়নী একটু নরম হইয়া বলিল, “ভাতটা মামিয়ে আসি, নইলে বেশী গ’লে ঘ্যাট হয়ে যাবে।” এ মানুষটাকে বাদ দিলে মুনয়নীর এখানকার জগতে বন্ধু আর কেহই থাকে না। এ অন্তায় করে, অত্যাচার করে, আবার মাঝে মাঝে মিষ্টি কথাও বলে, আদরও করে । ইহার বিরুদ্ধে হনয়নীর মনে নালিশ ক্রমেই শুপাকার হইয় জমিয়া উঠিতেছে, কিন্তু মধ্যে মধ্যে সব ভুলিয়াও যায়, ইহারই সঙ্গে তাহার ইহজীবনের ভাগ্য একান্তভাবে জড়িত, এইটুকু মাত্ৰ মনে রাখিয়া সে হেমেন্দ্রের সঙ্গে আপোষ , করিতে চেষ্টা করে। কিন্তু কাচ ভিত্তির উপর গাথা সৌধ অল্পক্ষণ পরেই ধসিয়া যায়। ভাত নামাইয়া, ফেন গালিয়া ফেলিয়া সে ঘরে ফিরিয়া আসিল । হেমেন্দ্র সিগারেটট মুখের কোণে ঠেলিয়া দিয়া জিজ্ঞাসা করিল, “কাজ হ’ল ?” স্বনানী খাটের উপর বলিয়া বলিল, “হ’ল।" হেমেক্স জিজ্ঞাসা করিল, “তোমার মা তোমায় কিছু লেখেন নি ?” স্থনয়নী সংক্ষেপে বলিল, “না।” তাহার পর একটু থামিয়া বলিল, “কি আর এমন চমৎকার খবর যে আলাদা আলাদা ক’রে লিখতে হবে ? শাশুড়ীঠাকরুণকে লিখলে আমার ত আর জানতে বাকি থাকবে না ? হেমেন্দ্র বলিল, “বিশেষ কিছু নয় হয়ত, মেয়েমানুষের মন অল্পেই ব্যস্ত হয় ।” • মুনয়নী বলিল, “সব মেয়েমানুষই একরকম হয় না। আমার মায়ের মন খুব শক্ত, অল্পে কাতর হবার লোক তিনি নন। বাবা ডায়েবেটিসের রুগী, তার সব অসুখেই খুব ভয়ের কারণ থাকে এখন নানা ওজর ধ’রে আমায় যদি তোমরা না পাঠাও, তাহলে এ জন্মে বোধ হয় ৰাবাকে আর আমি দেখতে পাব না।” হেমেন্দ্র বলিল, “তুমি ত তোমরা ব'লে বেশ নিশ্চিস্ত মনে আমার ঘাড়ে সব দোষের ভাগ তুলে দিলে, কিন্তু আমার দোষটা কি শুনি ? আমি কি কিছু বলেছি ?” স্বনয়নী বলিল, “বল না যে সেইটাই ত আমার দুঃখ । আমাকে বিয়ে ক’রে এনেছ তুমি, আমার ভালমন্দ কিছুতে তুমি কথা বলবে না এ কি রকম ?” হেমেন্দ্র বলিল, “সব বাঙালী-সংসারেই এই রকম। বাপ-মা থাকতে আমি তাদের কথার উপর কথা বলতে পারি না।” স্বনয়নী বলিল, “পার আবার না, নিজের দরকার হ’লে খুব পার। গত বছর বড়দিনের ছুটিতে ষে দলবলের সঙ্গে ফুৰ্ত্তি করতে বেরলে, সে ত তাদের কখা ঠেলেই গেলে ? বল যে স্ত্রীর হয়ে তাদের কথার উপর কথা বলতে পারি " কথাটা এতই সত্য যে ইহার উত্তরে ভয়ানক রাগিয়া উঠা ছাড়া আর কিছু হেমেন্দ্রর করিবার ছিল না। সে বলিল, “বেশ তাই, আমি বলব না কিছু, তুমি যা খুল कद्र ।” s. - স্বনয়ী বলিল, "াল, আমার যা খুশী তাই-ই করব। মনে রেখে তোমার মা-বাবা তোমার কাছে যতখানি, আমার মা-বাবাও আমার কাছে ততখানিই। মা-বাপের