পাতা:প্রবাসী (সপ্তত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/২২৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

سواسسواج প্রবাসী 3°88 পাইয়াছে, সুবিমলের নিক্ষিপ্ত গুলি উহাকে বিদ্ধ করিয়াছে । আশেপাশের মাটি রক্তে রাঙা । তপতী আৰ্ত্তনাদ করিয়া সেই থানেই বসিয়া পড়িল । চোখে মুখে তাহার স্পষ্ট আতঙ্ক, থাকিয়া থাকিয় সে শিহরিয়া উঠিতেছে । আহারের সময় হইয়াছে । তপতী সেই যে গিয়া নিজের ঘরে দ্বার রুদ্ধ করিয়া দিয়াছে আর তার সাড়া নাই । সুবিমল এক ফাকে আসিয়৷ ন-খাওয়ার মত খানিক নড়াচাড়া করিয়া চলিয়া গিয়াছে । ঠাকুর-চাকর বসিয়া আছে । তপতীর জন্ত তাহারাও আহার করিতে পারিতেছে না । বার-কয়েক ঘরের আশেপাশে ঘোরাফেরা করিয়াও কোন ফল হয় নাই। শেষ পৰ্য্যস্ত বুদ্ধি করিয়া তাহারা সুবিমলকে ডাকিয়া আনিয়াছে । এই সামাগু ব্যাপার লইয়া ষে তপত এতটা বাড়াবাড়ি করিবে ইহা স্ববিমলের স্বপ্নাতীত । দুয়ারে আঘাত করিয়া সে কহিল, দোর অল্প ক্ষণের মধ্যেই তপতী দরজা খুলিয়া সুবিমলের সম্মুখে আসিয়া দাড়াইল। এই কয়েক ঘণ্টাম্ব সে যেন একেবারে বদলাইয়া গিয়াছে, তাহার চুলগুলি এলোমেলো, চোখ-দুটি জবা ফুলের মত লাল । স্ববিমল খানিক বিহ্বল বিম্মিত দৃষ্টিতে চাহিয়া থাকিয়া কহিল, চাকর-বাকর সব তোমার জন্তে না খেয়ে রয়েছে ষে ? - নিলিপ্ত গলায় তপতী কহিল—তাদের খেতে বললেই চুকে যায়— স্ববিমল কিছুক্ষণ নীরব থাকিয়া কহিল—এই তুচ্ছ ব্যাপার নিয়ে তুমি এত বেণী মাতামাতি করবে এ আমি মনে করি নি । স্নান কণ্ঠে তপতী কহিল—এবার থেকে আমি আর কোন কথাই কইব না। তপতী মাথা নত করিল। স্থবিমল কহিল—ভেবে দেখলাম এ সময় তোমার দিন কয়েক ঘুরে আসা দরকার। তপতী কহিল-আমিও তোমায় সেই কথাই বলৰ ভেবেছিলাম। এ জায়গাটা আমার আর মোটেই ভাল লাগছে না । يبيا সুবিমল ভিতরে ভিতরে উষ্ণ হইয়া উঠিলেও সহজ কণ্ঠে কহিল, এ সময়টা তোমার মায়ের কাছে থাকাই উচিত । তপতী বিমন হইয়া ষেন স্বপ্ন দেখিতেছে•••উঃ ••কত রক্ত... মাটির রং বদলাইয়া গিয়াছে•••উষ্ণ আর লাল রক্তে• • •বাদরের রক্তে•••তার তার স্বপ্নের থোকার রক্তে••• তপতী উদভ্ৰান্ত চোখে তাকায়, সে-দৃষ্টির সম্মুখে স্ববিমল এতটুকু হইয়া যায়। স্ববিমল কিছুক্ষণ নীরব থাকিয়া হয়ত কিছু বলিবার জগুই মুখ তুলিয়াছিল । তপতী কহিল—কি দোষ তোমার কাছে বঁদেরটা করেছে শুনি ধার জন্তে ওটাকে গুলি না ক'রে তোমার চলল না। ঠাট্ট করবে জানি—বলবে কুসংস্কার । এ নিয়ে তোমার সঙ্গে তর্ক ক’রে আমি পারব না, ইচ্ছেও নেই, কারণ তুমি ত কোন দিনই আমাকে বুঝবার চেষ্টা কর নি । তপত শুদ্ধ হইয়া গেল । বন্দী মুক্তি পাইয়াছে। সুবিমল নিজে হাতে খাচার দরজা খুলিয়া দিয়াছে । কিন্তু আশ্চৰ্য্য, বানরটি এক প৷ নড়িল না। তাহার মুখের ভাষা স্থবিমল পড়িতে পারিল মা, কিন্তু তাহার চোখের জল স্থবিমলের দৃষ্টি এড়াইল না। চাহিয়া চাহিয়া আজ স্থবিমলের অকস্মাৎ মনে হইল, কাজটা সে ভাল করে নাই । স্ববিমল গৃহে ফিরিল, কহিল, বাঙ্গরটাকে ছেড়ে দিয়ে এলাম তপতী। তপতী মুখ তুলিয়া স্থবিমলের প্রতি চাহিল, কহিল, গুলি কি তোমার এরই মধ্যে ফুরিয়ে গেছে ? ওটাকেই বা বাকী রাখলে কেন ? তপতী আর দাড়াইল না। সুবিমল ধীরে ধীরে আসিয়া জানালার পাশে দাড়াইল । বন্দী বাহির হইয়া আসিয়াছে—কিছুপূৰ্ব্বে যে স্থানে মৃত বানরটি পড়িয়াছিল সেইখানে আসিয়া একবার স্তন্ধ হইয়া দাড়াইল । তার পর এক সময় ধীরে ধীরে বনান্তরালে অদৃগু হইয়া গেল । স্থবিমল রুদ্ধ নিঃশ্বাসে দেখিতেছিল। এত ক্ষণে একটা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলিল। তার ভারাক্রান্ত মনটা কতকটা