পাতা:প্রবাসী (সপ্তত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/২৩২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অগ্রহায়ণ প্যারিসে আন্তজাতিক প্রদর্শনী పెవెలి বলেন যে ফ্রান্সের এই বিপ্লবী সামাজিক অভিজ্ঞতার জন্ত aায়ী অতীতের ধৰ্ম্মযুদ্ধগুলি । ষোড়শ শতাব্দীর শেষার্দ্ধে ফ্রান্সের প্রত্যেক গ্রামে গ্রামে হয়ে গেছে এই কাথলিক আর প্রোটেষ্টাস্টের সংগ্রাম, যার ফলে রাজনীতি হয়েছিল কলুষিত, এমন কি দ্বিতীয়-হেনরীর স্ত্রী ক্লোরেন্সের ক্যাথরিন দেই মেদিচি ফ্রান্সের সিংহাসনে বসে সেন্ট বার্থোলোমিউর হত্যাকাণ্ডের সহায়তা পৰ্য্যন্ত করেছিলেন। সমস্ত ফরাসী ইতিহাসে একটি মাত্র ব্যক্তি ফরাসী সমাজে এবং রাজনীতিতে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা করতে পেরেছিলেন–র্তার নাম নেপোলিয়ন বোনাপার্ট । ইহুদী, প্রোটেষ্টাণ্ট, জাকোব্যান, সাম্রাজ্যবাদী এবং বিপ্লবী— এই সবগুলি বিভিন্ন সম্প্রদায়কে একটি মাত্র জাতীয় স্বার্থের সামনে মাথা নত করতে বাধ্য করেছিলেন নেপোলিয়ন । কিন্তু ১৮৪৮ সনের বিপ্লবের সামনে নেপোলিয়নের শৃঙ্খলা গেল ভেসে, আর তারপরে প্রতিষ্ঠিত হ’ল এক নূতন প্রজাতন্ত্র বার নাম থার্ড রিপাব্লিক । বিপ্লববাদের তীর্থক্ষেত্র আর বিপ্লবীদের পীঠস্থান হ’ল এই প্যারিস। আধুনিক ঐতিহাসিকদের মতে রাশিয়ার বিপ্লববাদ ত ফরাসী প্রতিভারই সস্থান । লেনিনের কৰ্ম্মকৌশল ত ফরাসী অভিজ্ঞতারই একটা অধ্যায়। বিদ্রোহী কৰ্ম্মকৌশলের মধ্যে রাশিয়ার প্রতিভা যেটুকু নিজস্ব সেটুকু বড়ম্বন্ত্র এবং নৃশংসতার দিক দিয়ে। ষড়যন্ত্রে রাশিয়ার প্রতিভা দিগ্বিজয়ী, আর নৃশংসভায় রুশ বিদ্রোহীদলের সমকক্ষ কেউ নেই । স্পেনের বর্তমান অস্তবিপ্লবে নৃশংসতায় যাদের তাণ্ডব নৃত্য দেথতে পাওয়া গেছে তাদের প্রেরণা এবং সহায় মস্কে থেকে ধার করা । প্যারিসকে চিনতে হ’লে, জানতে হ’লে তাকে এই ঐতিহাসিক বিবর্তনের দিক থেকে দেখতে হবে। ধারা প্যারিসে গিয়ে মমাখ এবং মপার্ণশের নৈশজীবনের বিকৃত বিলাসের চিত্র দেখে মনে করেন যে প্যারিসকে চিনেছেন, তারা, মিস মেয়ে ভারতবর্ষ সম্বন্ধে যে ভুল করেছিলেন সেই স্কুলেরই পুনরছুষ্ঠান করেন মাত্র। গত জুলাই মাসের প্রথম সপ্তাহে একটি বিশেষ চঞ্চল এবং উচ্ছ,স্থল মূহুর্ভে আমার প্যারিসে থাকার স্থযোগ লৈছিল। ব্রাসেলস্ থেকে প্যারিস এক্সপ্রেসে ফরাসী পৰিধানী অভিমুখে যাত্রা করেছি। ব্রাসেলস টেসনে একখানি Paris Soir কাগজ কিনে তার পাতা ওটাতেই নজরে পড়ল ছুটি জরুরী খবর। ফ্রার স্বর্ণবিনিময়-মূল্যের নিম্ন গতি আর প্যারিসের হোটেল ও কাফেতে চাকরদের ধৰ্ম্মঘট । প্যারিসে নেমে যে সব ছোট হোটেলের সঙ্গে পূৰ্ব্বপরিচয় ছিল তাতে যেতে আর ভরসা হ’ল না, কারণ হয়ত গিয়ে দেখতে হত ষে তাদের দরজা বন্ধ । তাই সোজা গ্রাও হোটেলে গিয়ে উঠলাম। খুব ভিড় ছিল ; তবুও অতিকষ্ট্রে একটা ঘর সংগ্রহ করা গেল। ভোরবেল অপেরা স্কোয়ারের মধ্যে একটা হৈচৈ গুনে ঘুম ভেঙে গেল। জানলার ধারে গিয়ে দাড়ালাম ; দেখলামু একদল মজুর এবং কতকগুলি ভদ্রবেশী লোক “মাসাইয়েজ" গাইতে গাইতে আর চীৎকার করতে করতে চলেছে । দুপুর হতে-নী-হ’তে সমস্ত পাড়ায় চাঞ্চল্য স্বরু হয়ে গেল। বেশীর ভাগ ক্ষেত্রে একদল ছেলে লরিতে বোঝাই হয়ে লাল কমু্যনিষ্ট নিশান উড়িয়ে হৈচৈ করতে করতে চলেছে। রাশিয়ার সঙ্গে ফ্রান্সের আত্মিক পরিণয় এবং রাষ্ট্রক স্বার্থের ঐক্যের এমন দীপ্তিময় চিত্র আর কখনও দেখেছি বলে মনে পড়ে না। সোভিয়েটের অর্থে সমগ্র ফ্রান্সে আজ বহু বিপ্লবী সমিতি গড়ে উঠেছে। মজুরের মুক্তির জন্য তাই আজ মধ্যবিত্ত বেকার ফরাসী উঠে-পড়ে লেগেছে । প্যারিসে এ বছরের প্রধান আকর্ষণ অর্থাৎ প্রদর্শনীর কথা ভুলে ধাই নি। কনকর্ড থেকে ঈফেল টাওয়ার পর্য্যস্ত শুনি নদীর দুধারে বসেছে এই মেলা, আর ঠিক নদীর উপর থেকেই উঠেছে বিভিন্ন দেশের এবং বিভিন্ন বিষয়ের প্রচারপ্রাসাদগুলি । সবচেয়ে জাকাল হয়েছে রাশিয়া, জাৰ্ম্মেনী এবং ইতালীর প্যাভিলিয়নগুলি । দেখে মনে পড়ল মসিয় লিও বুমের কথা। ফুন্সের প্রধান মন্ত্রীরূপে "তিনি বলেছিলেন যে প্যারিসের আস্তজাতিক প্রদর্শনী হবে ফ্যাসিজমৃ-এর উপরে পপুলার ফ্রন্টের (ফরাসী সোগুলিষ্ট পার্টি ) শ্ৰেয়ত্বের প্রতীক। এই কথার উত্তরে জর্শ্বন এবং ইতালীয়ান প্রেসে এমন প্রতিবাদ হয়েছিল ষে ঐ দুইটি দেশের প্রদর্শনী ত্যাগ করবার মত অবস্থা হয়েছিল। কিন্তু শেষ পৰ্য্যস্ত মসিয় বুমের গর্ব সার্থক হয় নি জাৰ্ম্মেনী, রাশিয়া এবং ইতালীয় সহযোগিতায় প্রদর্শনীর ষে ঐ বৃদ্ধি হয়েছিল তাৰে পপুলার