পাতা:প্রবাসী (সপ্তত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/২৪৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

نحواج প্রবাসী 88כאכל ব্রিটেনে শ্রেষ্ঠ না জাৰ্ম্মানীতে, তা নিয়ে তর্ক উঠেছে এবং যদিও কোন জাতিই নিজের পন্থাকে অপকৃষ্ট বলে স্বীকার করবে না, নিপুণতা ও শৃঙ্খলায় জামান-রীতি বিস্ময় স্বষ্টি করেছে। অলিম্পিক ক্রীড়াতে যেরূপে জামানী উত্তরোত্তর সাফল্য লাভ করছে তাতে ভবিষ্যতে কোন দেশই তার সঙ্গে পাল্লা দিতে পারবে না। স্কুলে ব্যায়াম একটি প্রধান বিষয় ; ইউনিভার্সিটির শ্রেষ্ঠ শিক্ষার আগে শরীরচর্চায় কুশলতা দাবী করা হয় । ব্যবসায়েও এর প্রয়োজন স্বীকার করা হয়েছে । দেশের প্রতি কোণটিকে এর গভীর প্রীতি ও সহানুভূতির চোখে দেখতে শিখেছে। দেশ বলতে কোন ভৌগোলিক মৃত্তিকাখণ্ড মনে করে নি, তার মধ্যে প্রাণপ্রতিষ্ঠা করেছে। দেশের প্রত্যেকটি অংশে, বনে উপবনে পৰ্ব্বতে বেড়িয়ে তার সঙ্গে নিবিড় চাঙ্গুষ পরিচয় করছে । শ্রেষ্ঠ “গ্লোব ট্রটারে’র জাতি ভূ-পৰ্য্যটক থেকে স্বদেশ-পৰ্য্যটকে পরিণত হয়েছে। মোটর গাড়ীর প্রাচুর্য্যে, দেশব্যাপী রাজপথের প্রসিদ্ধিতে ও এরোপ্লেনের প্রসারে শ্রেষ্ঠ এই দেশের যুবকরা পায়ে হেঁটে দেশ দেখছে। “হরগুীরফগেল” আন্দোলন এদেশেই প্রথম স্বষ্টি হয়, পরে ইংলণ্ডে “ইয়ুথ হোষ্টেল মুভমেণ্ট নামে তার প্রচলন হয়। এই পায়ে-হেঁটে বেড়ানোতে যে নিবিড় আনন্দ পেয়েছি তার সঙ্গে তুলনা কোন মামুলি প্রথায় দেশ-ভ্রমণে পাই নি । কিন্তু ইংলণ্ড ও জামর্শনীর দেশ বেড়ানোতে প্রভেদ আছে । ইংলণ্ডে নিছক মনের আনন্দে হাইল্যাণ্ডসের সাগরপ্রাস্তে, হেব্রিডিস দ্বীপপুঞ্জে, লেক-অঞ্চলে ঘুরে বেড়ালাম। প্রকৃতির শু্যামস্পর্শ, তারকাখচিত নীলাকাশের অতন্দ্র নীরবতা, বিজন পৰ্ব্বত্তের মৌন মহিম মনকে সংসার ও রাজনীতির চিন্তা ভুলিয়ে দেয়। ডাৰ্ব্বিশায়ারে প্রস্তরশিখর-কণ্টকিত নির্জনতায় চন্দ্রের পাণ্ডুর কিরণ পড়ে যে চির-রহস্যের স্বষ্টি করে, দূর-দূরান্তরে সন্ধ্যাতারা যে অপলক দৃষ্টিতে আহবান করে তা ছাড়া আর কিছুরই অস্তিত্বের কথা মনে আসে না। কিন্তু জামর্শনীতে “শুধু অকারণ পুলকে” আত্মহারা হবার উপায় নেই। নব-বিধান অনুসারে আলপসের শুধু কোন অঞ্চলে বেড়ান যাবে তা পর্য্যস্তনিদিষ্ট করে দেওয়া হয়েছে । “হিটলার যুব-আন্দোলনে" যোগ দেবার সময় শপথ করতে হয়—অলসতা, স্বার্থপরতা, ক্ষয়িষ্ণুতা ও পরাজয়-স্বীকারপ্রবণতার বিরুদ্ধে ক্ষমাহীন যুদ্ধ করতে হবে । তার ফলে রাইন-বক্ষে বা প্রকৃতির যে-কোন নিভৃত অঞ্চলেই ধাই না কেন—জামান যুবকের কানে বিজনতার বাণী নয়, এই শপথ বিবেকানন্দের অমর বাণীর মত ধ্বনিত হতে থাকে “হে জামান ভুলিও না, তুমি জন্ম হইতেই দেশের কাছে বলি প্রদত্ত ।” “আনন্দের মধ্য দিয়ে শক্তি-সাধনার’’ সংঘ স্মৃষ্টি হয়েছে । তার উদ্দেশ্য হচ্ছে শ্রমিকদের ছুটি ও বিশ্রামের সময়টা আনন্দে–বলকারক আনন্দে-কাটানোর উপায়ের সন্ধান দেওয়া। শক্তিই হচ্ছে শ্রেষ্ঠ লক্ষ্য। সব কৰ্ম্ম, চিন্তা, আনন্দ ও উপভোগেরই লক্ষ্য শক্তিসঞ্চয় । বিদেশীরা আতঙ্কে বলে, এই শক্তি-উপাসনা হচ্ছে যুদ্ধের জন্ত প্রস্তুত হওয়ার নামাস্তর । জামানরা বলে নায়মাত্ম বলহীনেন লভ্য: ; আমরা শক্তির পথে মনীষার সাধনা করছি । দৈহিক স্বাস্থ্য ও শক্তির জন্য বৰ্ত্তমান জামর্শনী দার্শনিক চিন্তাশীলতাকেও ক্ষুন্ন করতে পশ্চাৎপদ হয় নি। এদের মতে মনীষার আতিশধ্যে দেশে অবসাদ এসেছিল ; কাজেই মানসিকতার চর্চার চেয়ে দেহচর্চাই বেশী প্রয়োজন । থাকুক শুধু সেই বিদ্যাচর্চ। যার ব্যবহারিক উপকারিত। রাষ্ট্রকে বৈজ্ঞানিক সম্পদে বিভূষিত করবে ; দূরে যাক ধৰ্ম্মশাস্ত্র পাঠ ও ইহুদী-সুলভ আস্তর্জাতিকতার ব্যাখ্যা । নারী ফিরে যাক তার নিভৃত নীড়ে ; পুরুষের ভিড়ে ভার প্রতিযোগিতায় অকল্যাণ হবে । গাহ স্থ্য ধৰ্ম্ম ও দেশকে স্বস্থ সবল সস্তান দানই তার শ্রেষ্ঠ কৰ্ত্তব্য । বহু বৎসরের কষ্টার্জিত নারী-স্বাধীনতা জামর্শনীতে নারী আবার হারাবে। সভ্যতার উন্নতির ঘড়ির কাটাটি জামর্শনী পিছিয়ে দিতে 'চায়। বাইবেলের উপর হস্তক্ষেপ করা হয়েছে ; নূতন সংস্করণ বাইবেলের দৈহিক শক্তির প্রশংসামূলক ব্যাখ্যা করা হয়েছে । মিউনিকের ব্রাউন হাউসই জামর্শনের বেথলিহেম ; আর হিটলারের “আমার সংগ্রাম” বইখানিই নব-বাইবেল । রাষ্ট্রপতির আদেশ শীতকালে বেকারদের সাহায্যের জন্য প্রতি রবিবারে মাত্র এক “কোসে’র খাদ্য থেয়ে বাকী অংশের দাম তুলে রাখতে হবে। সমস্ত জাতি অমানবন্ধনে তা পালন করছে। এমনি একটি “হিটলার সন্টাগে"