পাতা:প্রবাসী (সপ্তত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/২৬৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

షెఫిషి মামীম বলিলেন, “তা ত পাবেই, সেই সাত সকালে খাওয়া, তাতে কি আর সারা দিন যায় ? আমি তোর জন্তে ভাতে জল দিয়ে রেখেছি, তুই হাত মুখ ধুয়ে আয় ।” মৃণাল বাষ্ম খুলিয়া প্রথম চিনি-টিনিদের ফরমাসী লজেন্স চকোলেট বাহির করিয়া দিল, তাহার পর হাত-মুখ ধুইয়া ট্রেনের কাপড় বদলাইয়া রান্নাঘরে থাইতে চলিল। মামীমা ক্ষুদ্রকুড়ে যা থাইতে দেন, তাহাই মৃণালের মুখে অমৃতের মত লাগে । অথচ কলিকাতার বোড়িঙে কত রকম উপকরণ দিয়া তাহার রোজ খায়, তাহীদের পেট ভরে ত মন ভরে না কেন ? মামীম আজকের দিনটাই মাছ একেবারে পান নাই, শুধু পোস্তচচ্চড়ি, কুমড়োর ঝাল আর ডাল দিয়া ভাগ্নীকে ভাত বাড়িয়া দিলেন । বলিলেন, “ন থেয়ে এত পথ এসেছিস, এই থা, আর ত দেরি করা চলে না। না হলে থানা মাছ ভেঙ্গে দিতাম।” মৃণাল বলিল, “রাত্রে সকলের সঙ্গে খাব এখন, আত ভাড়া কিসের ? এখন এইতে বেশ হবে।” খাওয়া চুকিলে পর মৃণাল নিজের জিনিষপত্ৰ শুইবার বড় ঘরের এক কোণে গুছাইয়া রাপিল। বিছানা খুলিয়া চিনি-টিনির খাটের উপর এক পাশে পাতিয়া রাখিল । এখানে আসিলে বরাবরই সে ইহাদের সঙ্গে শোয় । পড়ার বইগুলি কোথায় রাখিবে তাহাই ভাবিতে লাগিল। এইসব ক্ষুদ্র দস্থ্যদের হাতে পড়িলে ত আর তাহাদের আয়ু বেশীক্ষণ থাকিবে না ? ছবি দেখার ছুতায় তাহারা প্রত্যেকটি পাতা আলগা করিয়া রাখিবে। মামীম বলিলেন, “কি এত ভাবছিস বাক্স সামনে নিয়ে ?” মৃণাল বলিল, “এগুলি কোথায় রাখি বল ত মামীম, সব আমার পড়বার বই।” মামীম বলিলেন, “ওঁর ঘরের তীকের একেবারে মাথায় তুলে রাখ, না হ’লে এ দস্যিরা একেবারে সব শেষ করে রাখবে ” মৃণাল বই-খাতার রাশ’ তুলিয়া লইয়া মল্পিক-মহাশয়ের ধরে চলিল। দেওয়ালের গায়ে বসানো তাক, তাহার সৰ্ব্বোচ্চ খাৰুটি এত উচু ৰে মৃণালও সহজে নাগাল পায় না। একটা প্রবাসী S°88 টুল যোগাড় করিয়া আনিয়া, সে কোনও মতে জিনিষগুলি তুলিয়া রাখিল । দেখিতে দেখিতে সন্ধ্যা ঘনাইয়া আসিতেছে । আজকার দিনটা মৃণাল নিজেকে ছুটি দিবে স্থিরই করিয়া আসিয়াছিল। সে মামীমার হাত হইতে তাড়াতাড়ি লণ্ঠনগুলি কাড়িয় লইয়া মুছিতে বসিয়া গেল। তাহার পর মাছ কুটিল, সরিষা বাটিয়া দিল, দুষ্ট খোকাকে অনেকক্ষণ সামলাইয়। রাখিল। কলিকাতায় শীতের লেশমাত্র নাই, এখানে সন্ধ্য হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বারে বারে গায়ে কাটা দিয়া উঠিতে লাগিল। টিনি-চিনির তাহাতে ভ্ৰক্ষেপও নাই, তাহার ভুরে শাড়ীর আঁচল গায়ে জড়াইয়াই নিশ্চিন্ত । মৃণাল কিন্তু গায়ে একটা গরম জাম না দিয়া থাকিতে পারিল না। মামীমাণ্ড শীতকে গ্রাহ করেন না, জামা কোনও সময়েই গায়ে দেন না, দারুণ শীতেও একথানা মোট কাথা মুড়ি দিলেই তাহার চলিয়া যায়। রাত্রে খাইতে বসিয়া মল্পিক-মহাশয় বলিলেন, “মিনুর কল্যাণে আজ খাওয়াটা ভালই হ’ল ।” চিনি জিজ্ঞাসা করিল, “আর একটা মাছ আনলে না কেন ? তা হ’লে কাল আমরা চচ্চড়ি ক’রে খেতাম, টক ক’রে খেতাম ?” তাহার ম৷ বলিলেন, “হ্যা, মাছ সব তোমার শ্বশুরের কিনা, তাই যত চাইবে তত বিনি পয়সায় দিয়ে দেবে।” খাওয়া চুকিয়া গেলেই এখানে আর কোনও কাজ থাকে না । ছোটর দল হাত পা ধুইয়া, কাপড় ছাড়িয়া বিছানায় গিয়া চটুপটু চুকিয়া পড়িল। মৃণাল খানিক ক্ষণ মামীমার সঙ্গে সঙ্গে রান্নাঘরের কাজ সারিতে লাগিল, কিন্তু মামীম খানিক পরেই জোর করিয়া তাহাকে গুইতে পাঠাইয়া দিলেন । যতবারই ছুটিতে বাড়ী আসে, প্রথম রাতটা আনন্দেই বোধ হয় মৃণালের ঘুম হয় না। আবার ফিরিয়-কলিকাতায় যাইবার আগের রাতটাও না ঘুমাইরা কাটে সম্পূর্ণ অন্ত কারণে। আজও তাই ভাল করিয়া সে ঘুমাইতে পারিল না । চিনি আর টিনিও জাগিয়া থাকিতে তাহাকে যথেষ্ট সাহায্য করিল, তাহাজের শ্ৰান্তি নানামাৰি এক অভিা