পাতা:প্রবাসী (সপ্তত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/২৯৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অগ্রহণয়ণ "চুড়া সমূদ্র ফুড়ে যেন বরফ মাখায় করে উঠছে, আবার ভেঙে পড়ছে । ডেকে এসেই মেয়ের বমি স্থক হয়ে গেল। জাহাজের চাকর-বাকররা এসব সময়ে খুব চটপট কাজ করে। একজন বাল্তি নিয়ে এল, একজন ডাক্তার ডাকতে ছুটল। ডাক্তার থাৰ্ম্মোমিটার নিয়ে ছুটে এসে হাজির ৷ ছুটি মেয়েরই জর এসেছে। ডাক্তারকে জিজ্ঞাসা করা হল "এরা খাবে কি ?” ডাক্তার ডাক্তারী জানেন বটে, কিন্তু ইংরেজী জানেন না। হাত মুখ নেড়ে কথা চলে। এ সেই, “সীতা নাড়ে হাতটি বানর নাড়ে মাথ, বুঝিতে নারিস্থ নর-বানরের কথা ।” জবাব দিতে না পেরে ডাক্তার পলায়ন করলেন এবং গুধের গায়ে নাম লিখে স্থার্ডের হাতে পাঠিয়ে দিলেন। ছোট ডাক্তার যাবার পর বড় ডাক্তার এলেন। তিনি অনেক কষ্টে বুঝিয়ে দিলেন, “মেয়ের যা খেতে চাইবে তাই দি” ” গুনে ফরাসী বালিকা মহা খুশী ! কিন্তু খাবার সামনে ধরে দেখা গেল কোনটাই তাদের পছন্দ নয়, সবেই মঞ্চfচ । ক্রমে আকাশে মেঘ করে এল, জাহাজের সঙ্গে সঙ্গে মাথাটাও টলঙে লাগল, মন্দ লাগছিল না। কিন্তু মেয়েটি কেঁদে জয় পেয়ে আর বমি করে এমন অস্থির করে তুলল যে জিনিষটা কিছুমাত্র উপভোগ করা গেল না। বসে বসে দেখতে লাগলাম থার্ড ক্লাসের মা’রাও সমূদ্র-পীড়াগ্রস্ত ছেলেদের পিছনে জল নিয়ে ছোটাছুটি করছে। মেমসাহেবদের মধ্যে র্যারা একটু ভাল আছেন তারা সারাক্ষণ পরস্পরকে জিজ্ঞাসা করে যাচ্ছেন, “not feeling well ?" আমাকেও কয়েকবার জিজ্ঞাসা করলেন। আমি জাপান ভ্ৰমণ RR రి ‘বেশ ভালই আছি’ বলাতে সবাই বিস্মিত হয়ে বল্লেন, “এই না তোমার প্রথম সমুদ্রযাত্ৰা ।” আমি বললাম, “হ্যা, তা বটে কিন্তু আমার শরীর খারাপ লাগছে না, ভালই লাগছে।” তখন প্রথম সমুদ্রযাত্রায় যে কে কয় সপ্তাহ বিছানা অঁাকড়ে পড়েছিলেন তার গল্প স্বরু হয়ে গেল। একজন বললেন, “আমেরিক থেকে প্রথম ভারতবর্ষ যাবার সময় আমি ছয় সপ্তাহই গুয়ে ছিলাম।" তার পর বৃষ্টি স্বরু হল । জলের উপর বৃষ্টির ফোট, যেন কোন দক্ষ শিল্পী এক মুহূৰ্বে কালো কাপড়ে শত শত কালো বুট ফুটিয়ে তুলল। জলের রং কুর্যাক কালির মত। জাহাজটা নাগরদোলার মত দু-দিন ধরে দুলতে লাগল। একবার এই কোণটা আকাশের মাথায় গিয়ে ঠেকে আর একবার ও কোণটা আকাশের মাথায় ঠেকে। দ্রুত ট্রেন ছুটলে যেমন মনে হয় ডাঙার গাছপালা ল্যাম্পপোষ্ট সব দৌড়াচ্ছে, এতেও তেমনি মনে হয় সমূদ্র যেন কেবলি লাফিয়ে লাফিয়ে দিক্‌চক্ররেখা ছাড়িয়ে আকাশের মাঝখানে গ্রিয়ে ঠেকছে। জলের মধ্যে আশেপাশে স্থির আর কিছু দেখা যায় না বলে এ ভ্রাক্টিট কাটতে সময় লাগে। ছুদিনই এই বৃষ্টি আর দোলানি। কুয়াশায় চারিদিক ঢেকে গেছে, জাহাজ ভয়ে ক্রমাগত কুয়াশার বঁাশি (fog horn) ভে ভে করে বাজাচ্ছে। যাত্রীরা কেউ বর্ষাতি পরে বেড়াচ্ছে, কেউ বসবার ঘরে বই কাগজ নিয়ে বসে আছে । পীড়িত বালিকা দুটি হাওয়া পাবার আশায় চলাচলের পথে লম্বা ডেক-চেয়ার পেতে শুয়ে আছে। বেচারী ডেকধাত্রীদের বড় দুৰ্গতি । একটি তামিল মেয়ে অনেকগুলি কুচোকাচা নিয়ে তেরপলের পর্দার তলায় ভিজছে। এক বছর দু-বছরের সব বাচ্চ ! عجیه مسحيمي صسے *- مصمميه