পাতা:প্রবাসী (সপ্তত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/৪৬৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

مسوا8O প্রবাসী

  • \088

র্তাহার নিকট ইহার ব্যাখ্যা শুনিয়াছে—কোনটি পড়াইতে পড়াইতে পিতা কোন কথাটি বলিয়াছিলেন, তাহা একে একে মনে পড়িয়া নির্জন গৃহে ইন্দুর চোখের জল আর কিছুতে থামিতে চাহিল না। আঁচল দিয়া ঝাড়িয়া ঝাড়িয়া পুস্তকগুলি সে বাক্ষ হইতে বাহির করিল ও তার পর শয়নগৃহের দেওয়াল-আলমারি হইতে ঔষধের খালি শিশি, কাঠের বাক্স, হাতপাখা, কিছু ছেড়া খাত্তাপত্র ইত্যাদি বাহির করিয়া সেগুলাকে ঘরের এক কোণে রাখিয়া সেই আলমারিতে পুস্তকগুলি সাজাইতে বসিল । কবিতার বই হাতে পাইলে তাহা না খুলিয়, দুই-চার লাইন না পড়িয়া ইন্দু থাকিতে পারে না। তাহার আদরের বইগুলি খুলিয়া দেখিয়, তাহার পর তাহা সাজাইয়া রাখিতে যখন সন্ধ্যা হইয়া আসিল তখনও ইন্দুর কার্ষ্য অসমাপ্ত। ভৃত্য ঘরে আলো দিতে প্রবেশ করিয়া একটু ইতস্ততের পর নূতন গৃহিণীকে জিজ্ঞাসা করিল, “মা জাঙ্গ কি রান্না হবে ?" ইন্দু এ প্রশ্নের জন্ত বোধ করি প্রস্তুত ছিল না—মুখ তুলিয়া চাহিল। একটু ভাবিয়া বলিল, “রোজ ষ হয় তাই হবে। আমার জন্তে আলাদা ক’রে কিছু করবার দরকার নেই। তোমাদের যা হবে, আমিও তাই খাব।” নূতন গৃহিণী কি খাইবেন ভূত্য ঠিক সে-কথা হয়ত জিজ্ঞাসা করে নাই—কিন্তু আর কিছু জিজ্ঞাসা ন-করিয়া সে তাহার প্রাত্যহিক কাজে চলিয়া গেল । সদ্ধার পর অনুকূল যখন গৃহে ফিরিল তখন ইন্দু চুল বাধিয়া কাপড় ছাড়িয়া একখানি কাব্য-গ্রন্থ হাতে করিয়া জানলার ধারে আসিয়া বসিয়াছে । অনুকূল বোধ করি মনে মনে আশা করিয়াছিল যে নববধূর হস্তম্পর্শে তাহার গৃহসজ্জা ও শয্যারচনায় প্রতিদিনকার মলিনতা আজ ঘুচিয়া গিয়া থাকিবে—কিন্তু চারি দিক চাহিয়া কোনও থানে গৃহলক্ষ্মীর ঐহস্তের স্পর্শচিহ্ন তাহার চোখে পড়িল না। প্রথমেই মনটা যেন ছোট হইয়া গেল- কিন্তু তরুণী স্ত্রীর দিকে চাহিতেই তাহার আর আনন্দের যেন অবধি রহিল না। ইন্দু একখানি বর্ষার মেঘের মত নীল শাড়ী পরিয়াছে। তাহার কাপড় পরিবার ভঙ্গী, তাহার চুল বাধিবার ধরণ, তাহার স্নিগ্ধ খামবর্ণ, তাহার হুকুমার মুখখানি, প্রদীপের স্বল্প আলোকে অনুকূলের চোথে যেন অপরূপ সুন্দর মনে হইল। মনে হইল জীবনের এতগুলা বৎসর বৃথাই নষ্ট করিয়াছি—লক্ষ্মীপদম্পর্শে স্বে-গৃহ নন্দনকানন হইয়া উঠিতে পারিত, এতদিন মিথ্যাই তাহ শ্মশান করিয়া রাখিয়াছিলাম। শয্যা আজিও মলিন, ছিন্ন পর্দা এখনও বর্ষার বাতাসে স্থলিতেছে, কিন্তু ইন্দুর উপস্থিতির অভাবনীয় সৌন্দর্ঘ্য গৃহের সকল মলিনতাকে cफ्रां८ष्पंद्र यांप्लांब्ण कब्रिध्न शिज । রাত্রে থাইতে বসিয়াও প্রাত্যহিক নিয়মের কোনরূপ ব্যতিক্রম ঘটিল না । ভোজ্যদ্রব্যের দিকে চাহিয়া জাবার যেন অমুকূলের মন ছোট হইয়া আসিতে চাহিল। কিন্তু অনুকূল নিজের মনকে ধমক দিয়া ভাবিল—ছি, আমি যেন fক জাজ প্রথম দিনেই বেচারী ক্লান্ত হয়ে রয়েছে—আঞ্জ কি ক’রে সব দিক দেখবে ? আমার ওরকম ভাবাই অস্থায়।” মুখে বলিল, “চকেরটা যা বিত্র রাধে—আমার তো তবু খেয়ে খেয়ে এক রকম অভ্যাস হয়ে গেছে—তুমি কি এ মুখে দিতে পারবে ?” ইন্দু সলজে বলিল, “হ্যা। খাওয়াতে আমার কিছু বাচবিচার নেই—আমি সব খেতে পারি।” ס\ ইহার মাসখানেক পরে সেদিন সন্ধ্যাবেলা অনুকূল স্বরেশের কাছে আসিয়াছে। স্বরেশ তাহার বাটীর সম্মুখের ছোট বাগানে একটি বেতের চেয়ার লইয়া তখন বসিয়াছিল —হাতে একখান স্থচিত্রিত বাধাই মেঘদূতের বাংলা অনুবাদের বই-পাশ্বে রক্ষিত অপর চেয়ারখানা খালি পড়িয়া আছে। অনুকূল হাসিয়া ডাকিল, “কি রে, মুখটা অত বিরল কেন ? হাতে মূৰ্ত্তিমতী বিরহ নিয়ে আকাশের দিকে চেয়ে বসে আছিস ; পাশ্বসঙ্গিনী তোকে ফেলে গেলেন কোথা ?” * স্বরেশ বইখানা মুড়িয়া সোজা হইয়া বসিল। বলিল, “আয় আয় তুই-ই না হয় বসবি আয় পাশে—আমার যেমন কপাল ! পাশ্বসঙ্গিনী আর যাবেন কোথা ? যেখানে র্তার স্থান—অর্থাৎ রান্নাঘরে ।” অনুকূল হাসিয়া বলিল, “সে গানটা শুনেছিল । সেই যে বর্ষাসন্ধ্যায় কৃষ্ণ রাধিকার জন্তে দোলনায় বসে কুঞ্জবনে অপেক্ষ করছেন—এদিকে শ্রীরাধা গৃহ কাজে বাধা, আসতে পাচ্ছেন না। বনমালীর কালো মুখ নিরাশার অন্ধকারে আরও কালো হয়ে গেছে—‘ব্যাকুলিত বনমালী কালো মুখে লাগে কালি –সেই ষে রে, মনে নেই ? ছদটন্দ সব যে আমার মনে থাকে না ছাই, তাই সবটা বলতে পারছি নে – তোকে দেখে মনে পড়ল গানটা, তাই বললুম।" সুরেশ বলিল, “কৃষ্ণের অবস্থার সঙ্গে কতকটা মিলেছে বটে আমার, কিন্তু ভাই রাধা যে মেলে না। এ রাধরি তো এখানে আসতে আটক নেই, ইচ্ছে ক’রেই গৃহকাজে বেঁধেছেন নিজেকে। কৃষ্ণের সান্নিধ্যের চেয়ে রান্নাম্বরটাই এর ষে বেশী পছন্দ।” অনুকূল আসিয়া খালি চেয়ারটাতে বসিল। বলিল, "সংবাদ । বৌদিকে জানিয়ে জালি ষে জামিও এসেছি