পাতা:প্রবাসী (সপ্তত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/৪৭৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8Sb তাহাতে মনে মনে আনন্দ বোধ করিল। অগুমনস্কভাবে সে উত্তর দিল, “হ্যা, আসিয়াছিলাম, তাহাতে হয়ত ভালই হইয়াছে।” এই বলিয়া সে হেলগাকে জিজ্ঞাসা করিল, “এখন তবে তুমি ঘরে যাইতেছ ত?” “ইr, ঘরে এখন অবশুষ্ট যাইব ।” কেহ অপরকে সত্যিকার সাহায্য করিতে পারিলে ষেরূপ আনন্দ পায় হেলগা-সম্পর্কে সেই আনন্দই গুডমুণ্ড উপভোগ করিতেছিল । সে তখনও দাড়াইয়া আছে, বাড়ীর দিকে রওনা হয় নাই । “তুমি ঘরের চালের নীচে পৌছিয়াছ দেখিয়৷ আমি ফিরিতে চাই ।” “আমি মনে মনে ঠিক করিয়াছিলাম, বাবা-মা শুইয়া পড়ুন, তার পরে আমি ঘরে ঢুকিব ।” “না, তুমি এখনই ঘরে যাও, নহিলে হয়ত তোমার খাওয়া হইবে না।” গুডমুণ্ডের মনে হইল, হেলগার যত্ন করা তাহার জীবনে একটা সৎ কাজ । হেলগা তখন ঘরের দিকে অগ্রসর হইল এবং গুডমুণ্ডও তাহাকে আগাইয়া দিতে ঘর পর্যন্ত গেল। হেলগা তাহার খুব বাধ্য বুঝিয়া সে বেশ আত্মপ্রসাদ অনুভব করিল, ঘরের কাছে পৌছিয়া তাহারা পরস্পরের নিকট বিদায় লইল। কিন্তু গুডমুও কয়েক পা যাইতে-না-যাইতেই হেলগা পিছু ফিরিয়া আবার তাহাকে ডাকিতে আরম্ভ করিল— “আমি ঘরে না ঢোক পৰ্যন্ত আপনি একটু অপেক্ষা করুন। কেহ বাহিরে দাড়াইয়া আছে জানিলে আমার ঘরে ঢোকা সহজ হইবে ।” গুডমূও উত্তরে বলিল, “হ্যা, সঙ্কটকাল পার না-হওয়া পৰ্য্যস্ত আমি এখানে দাড়াইয়া আছি।” হেলগা দরজা খুলিয়া ঘরে ঢুকিয়াছে ; কিন্তু গুডমুণ্ড দেখিল যে, সে দরজার বেশ খানিকট খোলা রাখিয়াছে, যেন সে অনুভব করিতে পারে যে সাহায্যকারী তাহার পিছনেই আছে। ঘরের ভিতর কি হইতেছে-না-হইতেছে গুড়মুগু সে বিষয়ে বিশেষ মনোযোগ দিল না। হেলগা ঘরে ঢুকিবমৈাত্রই তাহার বৃদ্ধ মা ঈষৎ মস্তক হেলাইয়া মেয়েকে অভিবাদন জানাইলেন । তার পর তিনি শিশুটিকে দোলনার উপর মাখিয়া ভাড়ার-ঘরের দিকে প্রবাসী 8g عN< অগ্রসর হটলেন এবং বড় এক পেয়ালা দুধ ও রুটি আনিয়া টেবিলের উপর রাfখলেন । “এখন বসে থাও—” - এই বলিয়া বৃদ্ধ চিম্নীর আগুনটাকে আরও বাড়াইয়া দিবার জঙ্ক অগ্রসর হইলেন। “আমি আগুনটাকে জিয়াইয়া রাখিতে চেষ্টা করিতেছিলাম—তুমি ঘরে ফিরিয়া জামাকাপড় যাহাতে শুকাইতে পার। কিন্তু প্রথমে থাইয়া লও। আগে তোমার খাওয়া প্রয়োজন, নয় কি ?” হেলগ। তখনও দুয়ারের পাশেই দাড়াইয়া আছে। অক্ষুটম্বরে সে বলিল— “আমাকে এত অাদর করিয়া গ্রহণ করা উচিত নয়। পোরের নিকট হইতে আমি কোন সাহাধ্যই পাইব না। তাহার সাহায্য না লওয়াই আমি স্থির করিয়াছি।” বৃদ্ধ মা বলিতে লাগিলেন, “আজ বিকালবেল আমাদের এক বন্ধু দেখা করিতে আসিয়াছিলেন । তিনি আদালতে বিচারের সময় উপস্থিত ছিলেন এবং সমস্তই শুনিয়াছেন। আমরাও সব শুনিয়াছি।” হেলগা বেশ কিছুক্ষণ দরজার পাশে দাড়াঙ্গয়াছিল, এখন তাহাকে কি করিতে হইবে, যেন । সে ভাৰিয়ী পাইতেছিল না । ইতিমধ্যে তাহার পিতা বুদ্ধ কৃষক হাত হইতে কাজ নামাইয়া চশমাট ভ্রর উপর রাখিলেন এবং সমস্ত বিকালবেলা ধরিয়া ষে-কথা চিন্ত| করিয়াছিলেন তাহ বলিবার জন্য গল ঝাড়িয়া পরিষ্কার করিয়া লইলেন । তিনি বলিলেন, “হেলগা, শোন। আমি ও তোমার মা ছু-জনেই সারা জীবন সৎভাবে কাটাইতে চেষ্টা করিয়াছি। কিন্তু তোমার আচরণে আমরা সমস্ত সন্মানই হারাইয়াছি বলির মনে হইয়াছিল –কি ভাল, কি মন্দ, তাহা যেন আমরা তোমাকে কোন দিন শিখাই নাই। কিন্তু আজ তোমার আচরণ জানিতে পারিয়া আমি ও তোমার মা পরস্পর আলোচনা করিয়াছি যে, যাহা হউক সকলেই দেখিয়াছে ষে অন্ততঃ তুমি কুশিক্ষা পাও নাই । আমাদের মনে হইয়াছে যে, তোমার আচরণে আমাদের আনন্দিত হইবার কারণ আছে। তোমার মা তুমি ন-ফের পৰ্য্যস্ত শুইতে বাইতে চান নাই, যাহাতে তুমি অভ্যর্থনা ও সম্মান পাইয়া ঘরে ঢুকিতে পার।" ক্রমশঃ