পাতা:প্রবাসী (সপ্তত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/৫০১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8.33 ভারতীয় সৈন্যেরা যে ইউরোপীয় যে-কোন দেশের সৈন্তদের সমকক্ষ তাহা গত মহাযুদ্ধে প্রমাণিত হইয়া গিয়াছে। তাহার ফ্রান্সে যথাসময়ে না পৌছিলে জামানর। ফরাসী ও ইংরেজ সৈন্তদিগকে পরাভূত ও অভিভূত করিয়া ব্রিটেন আক্রমণ করিতে পারিত। কেবল ভারতীয় সিপাহীরাই যে তখন আশ্চৰ্য্য সাহস ও সংগ্রামসামর্থ্য দেখাইয়াছিল তাহা নহে ; যুদ্ধে বিস্তর ব্রিটিশ সেনানায়কের মৃত্যু হওয়া, ভারতীয় সেনানায়কদিগকে সৈন্ত পরিচালন করিতে হইয়াছিল। এই নেতৃত্ব-কার্ষ্যে র্তাহারা ব্রিটিশ সেনানায়কদিগের সমকক্ষ বলিয়া প্রমাণিত হইয়াছিলেন। কিন্তু ভারতবর্ষে যুদ্ধক্ষম এত লোক থাকিতেও ব্রিটেন স্বার্থপরতা বশতঃ এবং ভারতবর্ষ পাছে স্বাধীন হইয়া যায় সেই ভয়ে ভারতবর্ধের সমুদয় যুদ্ধক্ষম লোকদিগকে যুদ্ধ শিখিবার স্থযোগ দেয় নাই । সুযোগ দিলে, ভারতবর্ষ দখল করিবার কল্পনা জাপানীদের মনে উদিত হইত না । “আকাশযান-চালক হইতে দিব না” আধুনিক যুদ্ধে সকলের চেয়ে বেশী দরকার, এরোপ্লেন ও এরোপ্লেন-চালক এবং এরোপ্লেনের বন্দুক, কামান ও বোমা । ভারতবর্ষের সামরিক বিভাগ এ বিষয়ে যথেষ্ট আয়োজন এখনও করে নাই । ভারতবর্ষীয়দিগকে সামরিক এরোপ্লেন-চালনা শিখান দূরে থাকুক, যাত্রীবাহী ও মালবাহী এরোপ্লেনের চালক যাহাতে যথেষ্টসংখ্যক ভারতীয় হইতে পারে, তাহার ব্যবস্থাও নাই । ইহার বিপরীত ব্যবস্থাই বরং আছে । ব্যবস্থা কিরূপ তাহা বলিতেছি । ব্রিটেনে এবং ইউরোপের যে-কোন দেশে দু-হাজার টাক খরচ করিলেই বাণিজ্যিক এরোপ্লেনের চালক হুইবার মত শিক্ষা ও অভিজ্ঞতা লাভ করা যায়, কিন্তু ভারতবর্ষে যায়ু না । অবস্থা এইরূপ দেখিয়া কোন কোন ভারতীয় যুবক বিলাত গিয়া বাণিজ্যিক চালক হইবার অনুমতিপত্র লইয়! আসেন। এখানকার কৰ্ত্তারা কিন্তু বলিলেন, ওটা বিদেশী অমুমতি-পত্ৰ ( licence ), এদেশে চলিবে না ! অথচ গবন্মেণ্ট ব্রিটিশ বৈজ্ঞানিক, শৈক্ষিক, চিকিৎসা-বিষয়ক ডিগ্রীগুলিকে এদেশের ডিগ্রীগুলির চেয়ে শ্রেষ্ঠ মনে করেন, আইন-ব্যবসা করিবার অনুমতিপ্রাপ্ত ব্যাfরষ্টারদিগকে এদেশের উকীলদের চেয়ে উচ্চ স্থান দেন । প্রথমে এদেশে নিয়ম করা হয়, বাণিজ্যিক এরোপ্লেনচালকের অমুমতিপত্র পাইতে হইলে ৫০ ঘণ্ট এরোপ্লেন চালনার অভিজ্ঞতা চাই । তাহাতে খরচ হইত ২•••২ প্রবাসী বিশ্ববিদ্যালয়গুলির সাধারণ, SN98g টাকা । তাহা অধিকাংশ ভারতীয় যুবকের সাধ্যাতীত হইলেণ্ড, দু-এক জন তাহা ব্যয় করিম অনুমতি পাইবার চেষ্ট্র করিল । গবন্মেন্টের উডয়ন বিভাগের ব্রিটিশ কৰ্ত্তার প্রমাদ গণিয়া নিয়ম করিলেন, ১• • ঘণ্ট না উড়িলে অনুমতি দেওয়া হইবে না। তাহাতে খরচ হয় ৪ • • • < টাকা । ইহাতেও সমুদয় ভারতীয় যুবককে নিবৃত্ত করা গেল না । মুতরাং এখন নিয়ম হইয়াছে, যে, ২০০ ঘণ্ট। না উড়িলে বাণিজ্যিক এরোপ্লেন-চালক হইবার অনুমতি দেওয়া হইবে না। তাহার খরচ ৮• • •২ টাকা । অবশু, যদি কখনও কেহ দুবুদ্ধিবশতঃ ভারতীয় ব্যবস্থাপক সভায় প্রশ্ন করে, যে, ভারতীয় সরকারী সামরিক বা অসামরিক উড্ডয়ন বিভাগে যথেষ্ট উড়ুকু ভারতীয় নাই কেন, তাহা হইলে তাহার উত্তরে বলা হইবে, উপযুক্ত ভারতীয় যুবক পাওয়া যায় না । আকাশপথে আক্রমণ হইতে রক্ষার উপায় ভারতবর্ষের ভাগ্যনিয়স্তার হঠাৎ আবিষ্কার করিয়া ফেলিয়াছেন, আকাশপথে ভারতবর্ষ আক্রাস্ত হক্টভে পারে । এখন কাৰ্য্যতঃ বলিতেছেন, “তোমরা সব নিজের নিজের বাড়ীর নীচে গৰ্ত্ত থোড়, আকাশ থেকে যখন বোমা পড়বে, তখন ইন্দুরের মত গৰ্বে লুকি৪ ; আর যদি বড় ড বেশ ভয় করে, তা হ’লে নিকটবৰ্ত্তী কোন বন জঙ্গল পাহাড় পৰ্ব্বভগুহা পধ্যস্ত সুড়ঙ্গ কেটে রাখ ; সেই পথ দিয়ে পালিও ” অবশু, ৩৫ কোটি মারুষের জন্য দু-শ পাচ-শ ব: দু-হাজার পাঁচ হাজার বিষাক্ত-গ্যাস-প্রতিরোধক মূপোসেরও ব্যবস্থা হইতেছে । তবে কি না, সেগুলা ভারতপ্রবাসী ইংরেজদিগকে দিতেই ফুরাইয়া যাইবে । বাহির হইতে কেহ যদি আকাশপথে এরোপ্লেন-যোগে আক্রমণ করে, ভারতীয় এরোপ্লেন তৎক্ষণাৎ উড়িয় তাহাকে আক্রমণ করিয়া ভূমিসাৎ করিবে, এই উৎকট কল্পনা ভারতবর্ষের মনুষুমুৰ্ত্তিধারী ভাগ্যনিয়স্তাদের মাথায় স্থান পাইতেছে না । কারণ, ভারতবর্ষের লোকের আকাশে উড়িবে, এ চিন্তা অসহ। তাহারা চিরকাল মাটিতে হামাগুড়ি দিবে, কিংবা আরও ভাল, কেঁচোর মত বুকে ইণটিবে । মহাত্মাজী আইন-আচাৰ্য্য হইবেন স্বরাজলাভের জন্ত আবশুক হইলে ব্রিটিশ-রচিত আঠন অহিংসভারে ভাঙা যাইতে পারে, এই ব্যবস্থা দেন, এবং স্বয়ং ভাঙেনওঁ মহাত্মাজী । এখন তাহাকে ব্রিটিশ আইন দ্বারা স্থাপিত নাগপুর বিশ্ববিদ্যালয় এলএল, ডী, অর্থাৎ