পাতা:প্রবাসী (সপ্তত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/৫২৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মাঘ প্রতি যে বিশ্বাস ও নির্ভরশীলতা জন্মায় তাহা সঙ্কটের সময় একান্ত প্রয়োজনীয় হইয়া দাড়ায়। হিংসামূলক যুদ্ধে সৈন্তগণকে প্রস্তুত করিবার জঙ্ক যেমন ড্রিলের আবগুক আছে, অহিংস সংগ্রামেও সংগঠনমূলক কাজের তেমনই প্রয়োজন আছে । যদি জনগণকে যথাযথভাবে তৈয়ারী করা না যায় তবে কয়েকজন সত্যাগ্রহী ব্যক্তিগতভাবে তাহাজের মধ্যে আইন অমান্ত করিলেও কোন ফল হইবে না। যে নেতৃবৃন্দের প্রতি জনগণের বিশ্বাস উৎপন্ন হয় নাই, যাহাদের তাহার চেনে না, এমন নেতার আদর্শ জনগণের মনে কোনও প্রভাব বিস্তার করিতে পারে না। এরূপ অবস্থায় ব্যাপকভাবে সত্যাগ্রহ অনুষ্ঠান করা অসম্ভব । অতএব আমরা সংগঠনমূলক কাজে যতই অগ্রসর হইতে থাকিব আইন অমাগুের সম্ভাবনাও তত বৃদ্ধি পাইতে থাকিবে ।” (७) भांशौछौ नडां★iरश्द्र श्राद्ब्रांसन नश्रक श्रांद्र একটি কথা বলিয়াছেন তাহ আমাদের প্রণিধানযোগ্য । দক্ষিণ আফ্রিকায় সত্যাগ্রহের বিষয় বর্ণনাপ্রসঙ্গে তিনি লিখিয়াছিলেন, “আমার বিশ্বাস সত্যাগ্রহের মত ধে-যুদ্ধে প্রধানতঃ আত্মবলের উপর নির্ভর করিতে হয় সেখানে আন্দোলন চালাইতে হইলে একটি সংবাদপত্রের বিশেষ প্রয়োজন আছে। দক্ষিণ আফ্রিকায় ভারতীয়গণকে সত্যাগ্রহের বিষয় যথাযথভাবে শিক্ষা দিবার ব্যাপারে ইfগুয়ান ওপিনিয়ন নামক সংবাদপত্রখানি খুব উপকার দিয়াছিল । ইহার সাহাধ্যে ভিতরেও ধেমন, আফ্রিকার বাহিরেও তেমনই সৰ্ব্বত্র ভারতীয়গণকে আমরা সত্যাগ্রহের সম্বন্ধে সজাগ রাখিতে পারিয়াছিলাম । আন্দোলনের সাফল্য অনেকাংশে ইণ্ডিয়ান ওপিনিয়নের উপর নির্ভর করিয়াছিল। আর একটি লক্ষ্য করিবার বিষয় হইল এই ষে আন্দোলনের সঙ্গে সঙ্গে ভারতবাসীর চরিত্রে যেমন পরিবর্তন সাধিত হইতে লাগিল ইণ্ডিয়ান ওপিনিয়নের পরিচালনায় ও চরিত্রেও তেমনই পরিবর্তন সমান তালে চলিতে লাগিল ।” ( ) নানাবিধ ব্যবস্থা অবলম্বন করিবার উপদেশ দিয়াও د --س?t সত্যাগ্রহের দার্শনিক ভিত্তি ও কৌশল 8Ses গান্ধীজী কিন্তু সৰ্ব্বশেষে বলিয়াছেন, “সত্যাগ্রহ যুদ্ধের পরিবর্তে অনুষ্ঠিত হইয়া থাকে। ইহার শক্তি অপরিমেয়। তাই সত্যাগ্রহী ইহা সহসা প্রয়োগ করিতে ইতস্তুত করেন। তিনি পূৰ্ব্বে অন্ত সমস্ত উপায়ে প্রতিপক্ষের সহিত নিম্পত্তির চেষ্টা করিবেন। তিনি সৰ্ব্বসাধারণের মধ্যে ব্যাপকভাবে প্রচারকার্ষ্য চালাইবেন, যে কেহ তাহার কথা শুনিতে চায় তাহারই সহিত ধীরভাবে আলোচনা করিবেন। নিজের দাবী শাস্ত ভাবে পেশ কfরবেন। এরূপ চেষ্টার ফলেও যখন কিছুতেই সমস্তার সমাধান হইবে না তখনই তিনি সত্যাগ্রহের অস্ত্র ধারণ করিবেন । অস্তরের মধ্যে একান্ত ভাবে যখন সত্যাগ্রহে অগ্রসর হইবার আহবান পাইবেন, যখন তম্ভিন্ন উপায় আর অবশিষ্ট থাকিবে না, তখনই তিনি এই পথ গ্রহণ করিবেন। কিন্তু একবার সত্যাগ্রহে নামিলে আর তাহার ফেরা চলিবে না।” সত্যাগ্ৰহী সৰ্ব্বদা হিংসাকে পরিহার করিয়া চলিবেন। মনে বচনে ও কৰ্ম্মে তাহাকে পরিহার করিবেন। যখন চারি দিকে হিংসার ঘনঘটা দেখা দিবে তখন সত্যাগ্রহী পরাপ্ত না হইয়া সহকৰ্ম্মীদের হিংসা এবং প্রতিপক্ষের হিংসা, এই উভয় হিংসার মধ্যে শস্ত যেমন করিয়া জাভার দুই চাকার মধ্যে পিষ্ট হয় তেমনই করিয়া পিষ্ট হইবেন। মেঘ যেমন fনজের সর্বস্ব দান করিয়া জল বর্ষণ করে তেমনই ভাবে নিজের সৰ্ব্বস্ব দিয়া জীবনকে ধূলিমুষ্টির মত হেলায় ছাড়িয়া সত্যাগ্রহী মৃত্যুকে বরণ করিবেন। তবু তাহার হৃদয় হইতে প্রতিপক্ষের প্রতি মানুষ হিসাবে শ্রদ্ধা এক কণাও ক্ষুন্ন হইবে না। তবেই জগতের হিংসাকে অহিংসার দ্বারা জয় করা যাইবে, মাস্থ্যকে পশুর পদবী হইতে উচ্চত্তর পদবীতে লইয়া যাওয়া যাইবে । তাহার কম চেষ্টায় কিছু হইবে না । চারি দিকে হিংসা ও ভেদবুদ্ধির ঘটা যতই ঘোর হইয় আসিবে সত্যাগ্রহীর দায়িত্ব এবং কৰ্ম্মতৎপরতা ততই বৃদ্ধি পাইবে ।