পাতা:প্রবাসী (সপ্তত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/৫৪৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ՅԵաՅ প্রবাসী ●N?88 January, 191 ), বোম্বাই গেজেটিয়ারও এই কথায় সায় cRA (Vol. 1, Pt. 1, p.493) ঘবদ্বীপে আকারের উচ্চারণ ঠিক আমাদের বাংলা দেশের মত “ও”কার ঘেসা । অর্থাৎ হিন্দীতে যাহাকে বলে “গোল গোল ।” সেখানকার বরবুদ্ধর প্রভৃতি মন্দিরের গঠনপ্রণালী বাংলা দেশের পাহাড়পুরের মন্দিরের সঙ্গে চমৎকার মেলে। পাহাড়পুর প্রাচীনতর। শু্যাম, চম্পা প্রভৃতি দেশ গুম দেশেও হিন্দু দেবদেবীর পূজা প্রচলিত। হিন্দু আচার বিচার ব্ৰত নিয়ম উপবাস এখানে পালিত হয় । এখানে ব্রাহ্মণ আছেন। এখানে "পৌণা”ও আছেন। ব্ৰহ্মদেশের বিবরণে পৌশাদের কথা বলা হইবে। ব্রাহ্মণ এখানে যাহারা আছেন তাহীদের আচাৰ্য্য বা আচান বলে । র্তাহারা বঙ্গদেশীয় পদ্ধতিতেই জ্যোতিষ গণনা করেন । অর্থাৎ তাহাদের জন্মকোষ্ঠি অক্টোত্তর রীতিতে রচিত হয় । বিংশোত্তর পদ্ধতি এখানে নাই। পৌরাণিক দেবতা ব্ৰহ্ম৷ বিষ্ণু মহেশ্বর ও বৈদিক ইন্দ্র অগ্নি বায়ু বরুণ সমান ভাবে অর্চিত হন । আচার্ধ্যেরা অনেকে সৌর উপাসক। এখানকার নদীর নামও হিন্দু। শ্রাদ্ধাদি অনুষ্ঠানে নদীতে যাইতে হয়। আঙ্কোরবট মন্দিরদ্বারে নাকি বঙ্গাক্ষরে শ্লোক লিখিত আছে । ঐতিহাসিক বাউরিং বলেন, “শু্যামদেশীয়গণ গঙ্গাতট হইতে খুব সম্ভব বাংলা হইতে আগত। তাদের চেহারা বাঙালীর মত । বাংলার সঙ্গে তাদের বাণিজ্যাদির যোগ ছিল । বজবণিকদের সন্ততি এখনও ঐ সব দেশে আছেন।” (Siam, vol. II ) ধৰ্ম্মানন্দ মহাভারতী নাকি আসাম রাজ্যে বাংলার সব যোগfচহ্ন দেখিয়াছেন। ( বঙ্গের বাহিরে বাঙালী, कृउँौग्न थ७ भूः 88४-88७) মহাপ্রাচ্যে ধৰ্ম্মপ্রচারের সুফল বাংলা দেশের শৈব ও বৈষ্ণব ধৰ্ম্মগুরুগণও যথেষ্ট উদার । তাহারাও সেই যুগে ঐ সব দেশান্তরে ধৰ্ম্ম প্রচার করিয়াছেন। বৌদ্ধদের তো প্রচারে কোনো বাধাই নাই। তাই ভারতের পূৰ্ব্বদিকটাই ভারতীয় ধৰ্ম্ম ও সভ্যতার যোগে ভারতের সঙ্গে আত্মীয়ভার স্থত্রে বদ্ধ হয়। একবার বিশ্বভারতীতে বকৃত কালে আচার্ষ্য সিলভ। লেভিমহাশয় বলিয়াছিলেন, “বাংলা দেশ ভারতের পূৰ্ব্বদেশগুলিকে ধৰ্ম্ম ও সংস্কৃতি দান করিয়া আপন করিয়া ভারতকে ঐ দিক্ দিয়া নিরাপদ করিয়া রাখিয়াছিল। ভারতের পশ্চিম দ্বিকে ধাহারা ছিলেন, র্তাহারাও যদি ভারতের পশ্চিম সব দেশে তেমন করিয়া ভারতীয় ধৰ্ম্ম ও সংস্কৃতি প্রচার করিতে পারিতেন তবে ঐ দিক হইতেও ভারতের আর কোন বিপদের শঙ্কা থাকিত না ।” বাঙালী ব্ৰহ্মদেশে ব্ৰহ্মদেশেও বৌদ্ধ ধৰ্ম্ম গিয়াছিল এবং তাহাতে বাংলা দেশের সঙ্গেও যোগ ছিল। ব্রহ্মদেশে শৈব ও বৈষ্ণব ধৰ্ম্ম৪ প্রবেশ করে, তাহাতে বাংলার আচাৰ্য্যগণের হাত ছিল । ব্রহ্মদেশের কল্যাণীর শিলালেখ (১৪৭৬) অনুসারে বুঝা যায় গোলমট্রিক নগর আসলে গৌরদের মাটির বাড়ীর নগর। তৈফুলও গৌরদের উপনিবেশ। এই সব সংবাদ দিয়াছেন সেই দেশের প্রত্নতত্ত্ব-বিজ্ঞানের কৰ্ত্তা ভাওসেন-কে। ইণ্ডিয়ান এন্টিকোয়ারী ১৯শ, ২১শ, ২৩শ, ৩২শ, ৪২শ খণ্ডে এই বিষয়ে যথেষ্ট সংবাদ পাওয়া যায়। বাঙালী মুসলমান ব্রহ্ম, খাম প্রভৃতি দেশে বিস্তর বসবাস করিতেছেন। তাহাদের সে-দেশে বিবাহাদি করিবারও বাধা নাই। ব্ৰহ্মদেশে সেই যুগের পরে আর এক শ্রেণীর বাঙালী গিয়াছেন। র্তাহাদের নাম পৌণ । পৌণ শ্বস্ব কেহ বলেন “পাবন’ কেহ বলেন “ব্রাহ্মণ” হইতে উৎপন্ন । চারি শত বৎসর পূৰ্ব্বে অনেক বাঙালী ব্রাহ্মণ আরাকান পথে ব্ৰহ্ম দেশে যান । তাহারা ব্ৰাহ্মণের আচার প্রতিপালন করেন । তন্ত্রে জ্যোতিষে র্তাহাদের বিলক্ষণ অধিকার ; তাই ব্ৰক্ষে, গুামে এবং কাম্বোডিয়ায় পৰ্য্যস্ত র্তাহাজের সমাজর । পরে ব্ৰহ্ম-রাজারা মণিপুর জয় করিয়া কিছু মণিপুরী ব্রাহ্মণ ধরিয়া লইয়া যান। তাহারাও পৌণ। রেশমের কাজ করিতে জানেন বলিয়া তাহাদের আদর ছিল । তাহারী পূৰ্ব্বেই মহাপ্রস্তুর বৈষ্ণব ধৰ্ম্ম গ্রহণ করিয়াছিলেন। এখন আমরাপুর প্রভৃতি স্থানে তাহদের বসতি । ব্রহ্মের রাজারা অনেক সময় বাঙালী কারিকর বিশেষতঃ কামান-ঢালাই ৰাজের শিল্পীদের ধরিয়া লইয়া যাইতেন। পূৰ্ব্বে ব্রহ্ম-রাজার বাড়ীর কাছে একটি বৃহৎ কামান ছিল। স্বাহাতে বাংলা অক্ষরে "কালীকুমার দে” নাম লেখা।