পাতা:প্রবাসী (সপ্তত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/৫৬০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মাঘ অণরণ্যক 8ఇవి ৭ধদেশ রেখাকারে দিগবলয়ের সে-অংশে এ-প্রাস্ত হইতে ওপ্রাস্ত পৰ্য্যস্ত বিস্তৃত । কোথা হইতে আসিল এত বড় বন ওখানে ? কাছারিতে কেহ ত’একথা বলে নাই যে মৈথণ্ডির মেলার কাছাকাছি কোথাও আমন বিশাল অরণ্য বৰ্ত্তমান ? পরক্ষণেই ঠাহর করিয়া বুঝিলাম, পথ হারাইয়াছি, সম্মুখের বনরেখা মোহনপুরা রিজার্ভ ফরেষ্ট না হইয়া যায় না—যাহা আমাদের কাছারি হইতে খাড়া উত্তর-পূৰ্ব্ব কোণে অবস্থিত। এসব দিকে চলতি বাধা পথ বলিয়া কোন জিনিষ নাই, লোকজনও কেহ বড়-একটা হাটে না । তাহার উপর চারি দিক দেখিতে ঠিক একই রকম, সেই এক ধরণের ভাঙা, এক ধরণের পাহাড়, এক ধরণের গোলগোলি ও ধাতুপ ফুলের বন, সঙ্গে সঙ্গে আছে চড়া রৌদ্রের কম্পমান তাপতরঙ্গ। দিকৃভূল হইতে বেশীক্ষণ লাগে না আনাড়ি লোকের পক্ষে । ঘোড়ার মুখ আবার ফিরাইলাম। হসিয়ার হইয়া গন্তব্যস্থানের অবস্থান নির্ণয় করিয়া একটা দিকৃচিহ্ন দূর হইতে আন্দাজ করিয়া বাছিয়া লইলাম। অকুল সমূত্রে জাহাজ ঠিক পথে চালনা, অনন্ত জাকাশে এরোপ্লেনের পাইলটের কাজ ও এই সব অজানা সুবিশাল পথহীন বনপ্রাস্তরে অশ্বচালনা করিয়া তাহাকে গন্তব্যস্থানে লইয়া যাওয়া প্রায় একই শ্রেণীর ব্যাপার। অভিজ্ঞতা যাহাদের অাছে, তাহাজের এ-কথার সত্যত বুঝিতে বিলম্ব হইবে না। আবার রৌপ্রাপ্ত, নিম্পত্র, গুল্মরাজি, আবার বনকুসুমের মৃদ্ধ মধুগন্ধ, আবার অনাবৃত শিলাস্তুপসদৃশ প্রতীয়মান গগুশৈলমাল, আবার রক্তপলাশের শোভা । বেলা বেশ চড়িল, জল খাইতে পাইলে ভাল হইত, ইহার মধ্যেই মনে হইল, কারো নদী ছাড়া এপথে কোথাও জল নাই জানি, এখনও আমাদের জঙ্গলেরই সীমা কতক্ষণে ছাড়াইব ঠিক নাই, কারো নদী ত বহুদুর—এ চিন্তার সঙ্গে সঙ্গে তৃষ্ণা যেন হঠাৎ বাড়িয়া উঠিল। মুকুন্সি চাকলাদারকে বলিয়া দিয়াছিলাম আমাদের মহালের সীমানায় সীমানাজ্ঞাপক বাবলা কাঠের খুটি বা মহাবীরের ধ্বজা অনুরূপ ধাহা হয় কিছু পুতিয়া রাখে। এ সীমানায় কখনও আসি নাই, দেখিয়া বুঝিলাম চাকলাদার সে আদেশ পালন করে নাই। ভাবিয়াছে, এই জঙ্গল ইলিয়া কলিকাতার ম্যানেজার বাৰু আর সীমান-পরিদর্শনে আসিয়াছেন, তুমিও যেমন । কে খাটিয়া মরে । যেমন আছে তেমনই থাকুকু ৷ পথের কিছু দূরে আমাদের সীমানা ছাড়াইয়া এক জায়গায় ধোয় উঠতেছে দেখিয়া সেখানে গেলাম । জঙ্গলের মধ্যে এক দল লোক কাঠ পুড়াইয়া কম্বুল করিতেছে—এই কয়লা তাহারা গ্রামে গ্রামে শীতকালে বেচিবে । এদেশের শীতে গরীব লোকে মালসায় কয়লার আগুন করিয়া শীত নিবারণ করে, কাঠকয়লা চার সের পয়সায় বিক্রি হয়, তাও কিনিবার পয়স অনেকের র্বোটে না আর এত পরিশ্রম করিয়া কাঠকয়লা পুড়াইয়া পয়সায় চার-সের দরে বেঢ়িয়া কয়লাওয়ালাদের মজুরীই বা কি ভাবে পোষায়, তাও বুঝি না। এদেশে পয়সা জিনিষট। বাংলা দেশের মত সস্তা নয়, এখানে আসিয়া পৰ্য্যস্ত তা দেখিতেছি । শুকনো কাণ ও সাবাই ঘাসের ছোট্ট একটা ছাউনি কেঁদ ও আমলকীর বনে, সেখানে বড় একটা মাটির হাড়িতে মকাই সিদ্ধ করিয়া কাচা শালপাতায় সকলে একত্রে খাইতে বসিয়াছে, আমি যখন গেলাম। লবণ ছাড়া অন্ত কোন উপকরণ নাই। নিকটে বড় বড় গর্ভের মধ্যে ডালপালা পুড়িতেছে, একটা ছোকরা সেখানে বসিয়া কাচা শালের লম্ব ভাল দিয়া আগুনে ভালপালাউণ্টাইয়া দিতেছে। জিজ্ঞাসা করিলাম—কি ও গর্ভের মধ্যে, কি পুড়ছে ? তাহারা খাওয়া ছাড়িয়া সকলে একযোগে দাড়াইয়া উঠিয়া ভীতনেত্রে আমার দিকে চাহিয়া খতমত খাইয়া বলিল—লকুড়ি কয়লা হুজুর। আমার ঘোড়ায় চড়া মূৰ্ত্তি দেখিয়া লোকগুলা ভয় পাইয়াছে, বুঝিলাম আমাকে বন-বিভাগের লোক ভাবিয়াছে। এসব অঞ্চলের বন গবর্ণমেণ্টের খাসমহলের অন্তভুক্ত, বিনা অঙ্কমতিতে বন-কাটা কি কয়ল-পোড়ান বে-আইনী । তাহাদের আশ্বস্ত করিলাম। আমি বন-বিভাগের .कईकांद्रौ नझे, cकॉम छद्र नॉरें उांtभद्र, शृङ हेछ् कब्रल করুক। একটু জল পাওয়া যায় এখানে ? খাওয়া কেলিয়া এক জন ছটিয়া গিয়া মাজা ঝকঝকে জামবাটীতে পরিষ্কার জল আনিয়া দিল। জিজ্ঞাসা করিয়া জানিলাম কাছেই বনের মধ্যে বরণ আছে, তার জল ।