পাতা:প্রবাসী (সপ্তত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/৬০৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মাঘ এই কি আর্ধ্য ? হ্যা •-ওই ত তার কানের কাছটায় কাটার দাগ আজও মিলিয়ে যায় নি। সেবার স্কুলের হয়ে ফুটবল খেলতে গিয়ে ওখানটা কেটে যায়। “আমাকে চিনতে পারিস ?” স্বত্ৰত জিগ গেস করল। “আপনাকে...আপনাকে..." ভদ্রলোক যেন একটু বিব্রত হয়েই মাখা চুলকাতে লাগলেন। “আপনাকে কোথায় যেন দেখেছি...কোথায় যেন জারে জারে, তুই স্বত্রত না কি ?” “তোর আবিষ্কারের প্রশংসা করি।” সুব্রত বলল, “ঙ, কতক্ষণ তোর জন্তে অপেক্ষা করছি জানিস ? আরও দেরি করলে সত্যিই হয়ত আজ আমি চলে যেতাম !" আধ্য ততক্ষণে স্বব্রতর পাশের সোফায় বসে পড়েছে। মরা গাছে লেগেছে যেন নবীন ফান্ধনের উষ্ণ হাওয়t •• তার শুকৃনো ভালপালাগুলো উঠেছে মর্শ্বরধ্বনি ক’রে । “তুই একটা আস্ত ইভিয়ট " অনেকটা আগেকার স্বরে আধ্য বলে চলল, “তা নইলে খবর না দিয়ে এমনি চলে আসিস্ ? বেশ হয়েছে, ঠিক হয়েছে ; বসে থাকতে হবে না ? পাপের প্রায়শ্চিত্ত হয়েছে খানিকটা !” আধ্য হাসতে লাগল । "খাম থাম। আর লেকচার দিতে হবে না । চায়ের জন্তে একটা ইকি দে ভাই। দোকানের আর চাকরের তৈরি চা খেয়ে মুখটা ত তেতো হয়ে গেছে।” আধ্য ইঙ্গিতটা বুঝল, তাই তাড়াতাড়ি ভিতরে চলে গেল । কিন্তু এত পরিবর্তন কি সম্ভব ?=স্বত্রত ভাবতে লাগল । —এ কি চেহারা হয়েছে আর্ধ্যর ? তাকে ত আর চেনাই ধায় না ! এ যেন কোন একটা বুড়ো মানুষের চেহারা। চোখে-মুখে নেই সেই বুদ্ধির প্রখরত, দেহে নেই প্রাণের সেই উচ্ছল চাঞ্চল্য। শুধু চোখ দুটাে যেন সাক্ষী দিচ্ছে তাঁর মৃত অতীতকে ; সেখানে যেন এখনও বেঁচে রয়েছে সেই অদ্ভুত আলো এক সময়ে যা শুধু দেখা যেত আৰ্যর ভিতর ! “আচ্ছা স্বত্রত, তুই এ রকম গুড,বয় হলি কবে থেকে রে ? আমি ত তোর কাছ থেকে এসব অঁাশা করি নি।” “चर्थीं९ f" আঠার বছর পরে €+\es “অর্থাৎ তুই যে এই বৈঠকখানাতেই তখন থেকে বসে আছিস । উপরে গিয়ে বাড়ীটা ঘুরে জাসিস্ নি।” “সে রকম দুঃসাহস আর স্বারই থাক না কেন, অামার একেবারেই নেই। এখন ত তোর উপর বা তোর বাড়ীর উপর আমার আগেকার সেই অধিকার নেই। সে রকম দুঃসাহস দেখাতে গেলে আমাকে হয়ত পথ দেখতে হ’ত ” “হয়েছে হয়েছে " কোনও ভাল উত্তর খুঁজে না পেয়ে আৰ্য্য বলে উঠল, “এখন উপরে চল দেখি । বিপদ ঘদি কিছু আসে এই বুক পেতে নেব তাকে বরণ করে।”— একটু থিয়েটারী ঢঙে জাৰ্য্য কথাগুলো বলল । দু-জনেই তারা হেসে উঠল। উপরে তিনটি ঘর, সব কটিই বেশ সুন্দর ক'রে সাজানে । স্বত্রত চুপি চুপি বলল, “তোর ত কোনকালে এ রকম পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকবার অভ্যাস ছিল না " । “এখনও কিছু আছে না কি ?" একটু হেসে আর্য্য বলল, “তবে ভাই সমস্তই ওই গিল্পী ।...আরে এই যে, ঘাচ্ছ কোথায় ? এ যে স্বত্রত, যার কথা তোমাকে কত দিন বলেছি। এস এস, আলাপ করিয়ে দিই।--ইনি হচ্ছেন স্বত্রত রায়, আমার পরম বন্ধু—আর ইনি জামার গৃহিণী, নাম স্বরম। " হাত দুটোকে মাথার কাছে ঠেকিয়ে স্বত্রত বলল, *নমস্কার বৌদি । আপনাদের জালাতে এলুম, কিছু মনে করবেন না যেন ।” স্বরম কি একটা ঘরের কাজে ব্যস্ত ছিল। কপালে তার পরিশ্রমজনিত মুক্তোর মত এক সার স্বাম, চুলগুলো এলোমেলো, ঘাড়ের কাছটায় গোল গোল হয়ে পাকিয়ে গিয়েছে, দেহ ঈষৎ স্কুল, তবে বিশেষ বেমানান নয়, গায়ে একটা নীল জ্যাকেট ••ডান হাতের ওপরটা অনেকটা ছেড়া, পরনের লাল শাড়ীটার পাড় মাঝে মাঝে গুটিয়ে গিয়েছে, কয়েক জায়গায় অস্পষ্ট হলুদের দাগ। স্বামীর সঙ্গে এক অপরিচিত যুবককে নিঃশঙ্কচিত্তে বাড়ীর ভিতর আসতে দেখে সে অপ্রস্তুত হয়ে পড়েছিল, কিন্তু পরিচয় খনে বিশেষ কুষ্ঠিত হ'ল না। হুব্রতর কথা সে গুনেছে অনেক অনেক বার ; স্বত্রত তাই যেন অনেকটা চেনা-চেনা ! কুষ্ঠিত ভাবৰে তাই চাপা দেবার জন্তে ঘাড়ের উপরকার খসে-জাসা ঘোমটাটা