পাতা:প্রবাসী (সপ্তত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/৬০৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মাঘ অগঠণর বছর পরে ●BN? দেশে আর যা কিছুর অভাব থাকু না কেন, কনের অভাব যে কোন দিনই হবে না, সে কথা আমি জোর করে বলতে পারি ! তুই যদি বলিস বিয়ে করব তা হ’লে এখনও অনেক ভাল ভাল পাত্রী আসবে ; বুঝেছিস্ ?” স্বব্রত কেমন একটু করুণ ভাবে হাসল। আজও তার বেশ মনে পড়ে যায় যে আঠার বছর আগে সে কিংবা আধ্য যদি গুনত কোনও প্রৌঢ় বাঙালী বিয়ে করতে চলেছে, সে বিয়ে পও করবার জন্তে তারা তাদের শক্তির শেষ বিন্দুটি খরচ করতেও কাপণ্য করত না ! “তুই হাসছিস যে ?” করল । “তোর এই অনাৰ্য্য বৰ্ব্বরের মত কথা শুনে।” স্বত্রত আবার হেসে উঠল ; তার পর হাসি থামিয়ে গম্ভীর হতে চেষ্টা ক'রে বলল, “জাছ আধ্য, মনে পড়ে কি এ-রকম বিয়ের প্রস্তাব যদি আঠার বছর আগে কোনও চল্লিশ বছরের বাঙালী প্রৌঢ় আমাদের কাছে করত, তা হ’লে তার পক্ষে অক্ষত নাকমুখ নিয়ে ফিরে যাওয়া বোধ হয় যথেষ্ট কষ্টকর হ’ত ; নয় কি ?” বিজ্ঞের হাসি হেসে দার্শনিকের মত মাথা নেড়ে আর্য্য বলল, “দেখ হে ; রক্ত গরম থাকলে লোকে আমন কত কথাই বলে ! ও-সব কৃোনও কাজের কথা নয়। আমি বলি কি, কত দিন আর এই রকম এক এক ঘুরবি ; বিয়ে-থা ক'রে এবার গেরগু হ, বুঝলি ?” সুরমা এদিকেই আসছিল । কাপড়জামা তার ধোপভাঙা ; চুলগুলো ভদ্রস্থ । ঘরে ঢুকে সেও বলল, “সত্যি ঠাকুরপো, এবারে আপনার বিয়ে করা উচিত ” “উচিত যদি বলেন, তা হ’লে বিয়ে করা আমার অনেক আগেই উচিত ছিল। কিন্তু ঔচিত্যবোধ তখন যখন হয় নি এখন জার সে-সম্বন্ধে কোনও আলোচনা না করাই ভাল । কোনও মেয়ের সৰ্ব্বনাশ করতে আমি রাজী नझे ” সৰ্ব্বনাশ —স্বরম যেন আকাশ থেকে পড়ল । “আপনার মত স্বামী পেলে কত মেয়ে ধস্ত হয়ে বাবে জানেন ? তা ছাড়া পুরুষমামুষের বয়েল, সে আর কে দেখতে যাচ্ছে বলুন "

  • abr—S S

আশ্চৰ্য্য হয়ে আধ্য প্রশ্ন “অন্ত কেউ না দেখুক, আমি একাই আছি তা দেখবার জন্তে ।”—একটু হেসে হব্রত বলল, “কিন্তু এই নারীপ্রগতির যুগে আপনি যদি ও-রকম যুক্তি দেন, আপনাকে তাহলে কেউই যে মানবে না তা আমি জোর ক’রে বলতে পারি ”—মুত্রত আবার স্বচ্ছ হাসিতে ফেটে পড়ল । “আপনি দেখছি এক কথায় রাজী হবেন না !" একটু চিন্তিত হয়ে স্বরমা বলল ; “আচ্ছা, ও তর্ক না-হয় পরে হবে। উপস্থিত উঠুন, খাবার প্রস্তুত । সেটার সদ্ব্যবহার করা বিয়ের মত আমন দুঃসাধ্য ব্যাপার নয় ; আর স্ববিধে এই ষে প্রৌঢ়র দু-বেলাই ওটার সদ্ব্যবহার করেন, এবং তাতে লোকনিন্দার ভয় একেবারেই থাকে না ।" ছ-বন্ধুই হে হে ক'রে সরল হাসিতে ফেটে পড়ল । খাবার ঘরে ঢুকেই স্বত্রত চেচিয়ে উঠল, “আরে. কোন রকম অখাদ্যই ষে বাদ যায় নি বৌদি । মাংস আর লুচি থেকে আরম্ভ ক’রে কোন জিনিষটা যে নেই তা দস্তুরমত গবেষণাসাপেক্ষ । নাঃ বৌদি,* গম্ভীর হ’তে চেষ্টা ক'রে স্বত্রত ব’লে চলল, “লোকনিন্দার ভয় থাকলেও এ সমস্ত অখাদ্যগুলো আমি ছাড়ছি নে ?” হেসে সুরমা বলল, “দেখুন, যে লোক বেশী কথা বলে তারই পাতে থাবার পড়ে থাকে সবচেয়ে বেশী ! অতএব•••* বাধা দিয়ে স্বত্রত ব'লে উঠল, “আর-যার সম্বন্ধে সে রকম দুর্ভাবনা থাকুক না কেন আমার সম্বন্ধে ষে নেই, সে কথা আৰ্য্যই বোধ হয় ভাল ক'রে বুঝিয়ে বলতে পারবে।” হালকা হাসি ও গল্পের ভিতর খাওয়া শেষ হ’ল। নিমাইয়ের খাওয়া আগেই শেষ হয়ে গিয়েছিল ; সারাদিনের খেলাধুলোর পর ক্লাস্ত হয়ে এরই মধ্যে সে বিছানায় আশ্রয় নিয়েছে ! দুই বন্ধুতে আবার যখন উপরের ঘরে এল, রাত তখন দশটা ৷ বাইরে আবাঢ়ের আকাশ ভেঙে পড়েছে । জানুলাটা খুলে দিতেই ভিজে মাটির গন্ধে ঘরটা ভরে গেল। “এই বৃষ্টিতে স্বত্রত তুই বাড়ী ধাবি কি ক'রে r আর্ধ্য জিজ্ঞেস করল । 蠢 “বাড়া যাব মানে ? এই বৃষ্টিতে কেউ কখনও বাড়ী যায় । আর বৃষ্টি না থাকলেও আমি বুঝি আজ বাড়ী যেভাম?” 娜