পাতা:প্রবাসী (সপ্তত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/৬১৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

●●* প্রবাসী S\రిgg প্রৌঢ়ের মধ্যে এতটা ব্যবধান কি সম্ভবে ? অবশ্ন, ছিপছিপে অলক রায় মেদবাহুল্যে হইয়াছেন স্বস্থল। সে চোয়াল-উচু গাল, ভাসন্ত চোখ অথবা টিকলো নাক তার নাই। মাখার কেশ-পারিপাট্যে রুচির বহু পরিবর্তন দেখা যায়। হাসিলে গালে তেমন টোল পড়ে না বা হাত নাড়িলে হাত্তের পেশী শিরা সমেত স্থপ্রকট হইয়া উঠে না। অনেকখানি লম্বা ছিলেন বলিয়া মোটা হইয়াও বামনাবতার হন নাই। মনের মধ্যে র্তার স্বাকী আছে বিশ বৎসর পূৰ্ব্বের ছবি । সেই ছবি দেখার মোহেই হয়ত তিনি গ্রামে ফিরিতেছেন । বিলের ঢালু তীরভূমি আর শরতের স্বনীল আকাশ কোনটারই বিশেষ পরিবর্তন হয় নাই। বিশেষ করিয়া অপরিবর্তিত আছে ঐ নীল আকাশ। চতুর্থীর ক্ষীণ কলাময় চাদ অপরাষ্ট্রেই চিত্ৰলেখার মত আকাশে উঠিয়াছেন, তরল অন্ধকারে তারার চুমকিতে আশমানী শাড়ীখানি একটু পরেই ভরিয়া উঠিবে। নৌকা বড় বেশী দুলিতেছে ; অলক রায় মাঝখানে সরিষা বসিলেন । নৌকার দু-পাশে কুমুদ-কলোরের ঝাড় ; চক্চকে পাতার শোভা ও ফুটন্ত ফুলের শোভা কোনটাই উপেক্ষণীয় নহে, তথাপি অঙ্গক রায় মাঝখানে সরিয়া বসিলেন । জনশ্রুতি, মৃণাল-বুস্তের তলায় বঙ্গ-বিতাড়িত বিষধর জাসিয়া আশ্রয় লয়। মৃণাল তুলিতে গিয়া কত হতভাগাই ন অহি-দংশনে প্রাণ জিতেছে প্রতি বৎসর । এক সময়ে অবশু শোনা কথায় অলক রায়ের তেমন বিশ্বাস ছিল না। নৌকায় চাপিয়া কমলদলের এমন নিরাপদ সান্নিধ্যে আসিয়া সেগুলি নাড়াচাড়া করিবার সৌভাগ্যও হয় নাই তখন। বাজী রাখিয়া সাতার কাটা ও সবচেয়ে বড় পদ্মফুল তুলিবার গৌরব লাভের আকর্ষণ ছিল খুব বেশী । চকুচকে পদ্মপাতায় ভাত খাইবার তৃপ্তিই কি ছিল কম । - আজ মনের ইচ্ছা প্রবল হইলেও ভয়ের খাদট। সেখানে বেশী করিয়াই মিশানো রহিয়াছে। বয়স বাড়িবার সঙ্গে সঙ্গে জীবনের মমতাও বুঝি বাড়িয়া চলে। মাঝখানে সরিয়া दनिश चनक ब्रांश्च नख्द्र विषt६ ७क्मूहे कभण-क्लाम्बद्र শোভা দেখিতে লাগিলেন । নৌকাটা বড় বেশী দুলিতেছে, মাঝিকে হসিয়ার করিয়া দিলেন। একবার সাভার শিথিলে জীবন-ভোর নাকি ভোলা যায় না, তথাপি আপন পরিবর্ধমান স্কুল দেহটার উপর অলক রায়ের বিশ্বাস নাই । এই গুরুভার কোন কৌশলে তিনি জলের উপর ভাসাইবেন, সে-ও একটা সমস্তার কথা ! ভয়ের কি একটিই রকম ? আশ্বিনের শিশির লাগিয়া শরীরের বৈকল্য যে-কোন মুহূৰ্ত্তে ঘটিতে পারে, তাই অপরাহ্ল হইতেই তিনি কোটের উপর পাতলা এণ্ডি চাদরখানি জড়াইয়াছেন, গল। বেড়িয়া পাতলা সিস্কের মাফলার মাথার খানিকটা ঢাকিয়াছে, পায়েও রেশমী মোজা উঠিয়াছে। তীরে অনেকগুলি লোক নৌকার পানে চাহিয়া দাড়াইয়া আছে। কাহারও গাধে সামান্ত একটি ফতুয়া, অধিকাংশেরই পায়ে মোজাত দূরের কথা, জুতা পৰ্য্যস্ত নাই। কেহ কেহ বা খালি গায়ে নদীর হাওয়া লাগাইয়া মূৰ্ত্তিযুক্ত উচ্চকণ্ঠে বাক্যালাপ করিতেছে। এই রকম তাহারও এক দিন গিয়াছে। আশ্বিনের গুমোটে খালি গায়ে মৃদ্ধ মুক্ত বাতাস লাগিলে মন শুদ্ধ তৃপ্তিতে হাস্ক হইয়া উঠিভ। সেই অতীত আশ্বিনের দিনগুলিতে স্বাস্থ্যতত্ত্বের কোন বিধানই লেখা ছিল না, অথচ স্বাস্থ্য ক্ষুন্ন হইলেও সেদিন ভাবিয়া ভাবিয়া তিনি মুখচোখ মলিন করিয়া তুলেন নাই! ধাৰ্থ । হউক, হেলিতে ছুলিঙে নৌকা জাসিয়া অশ্বখতলায় লাগিল। সেই স্বপ্রাচীন শিকড়-ওঠা প্রকাও বনস্পতি । কুড়ি বৎসরের কালপ্রবাহ অশ্রাস্ত ভাবে তাহার উপর দিয়া বহিয়া গেলেও স্থল দৃষ্টিতে কোন পরিবর্তনই দেখা যায় না। অশ্বথতলার ধার দিয়া যে-রাস্ত সোজা গ্রামের মধ্যে গিয়াছে সেটার অবশু কিছু পরিবর্তন হইয়াছে। তখনকার ধূলায়-ভৰ্ত্তি কাচ রাস্তা ইট-বাধানে পাক হইয়াছে। ধীরে ধারে বহুদূর অন্তর কেরোসিনের আলোকস্তম্ভও দেখা যায়। নৌকা থামিতেই অনেকগুলি লোক সামনে ভিড় করিয়া দাড়াইল । তাহার একদৃষ্টে স্থসজ্জিত নৌকা দেখিতেছে, কি অলক রায়ের প্রকাও দেহটার পানে চাহিয়া আছে, বোঝা দুষ্কর। অবশু, ছুটি জিনিষই পল্লীবাসীদের চোখে খুব কম পড়ে। এমন নৌকার পাশে এদেশের মাছধরা জেলে-ভিত্তি—যেগুলির দরমার ছই, ভিতরে ঢুকিতে গেলে