পাতা:প্রবাসী (সপ্তত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/৬৫২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মাঘ ৰিবিধ প্রসঙ্গ—সর চিমনলাল শেভলবাদের অভিভাষণ @b〜* জন ডিউইর ( John Deweyর ) নেতৃত্বে মেক্সিকোতে গত বৎসরের ১১ই হইতে ১৭ই এপ্রিল পৰ্য্যস্ত বসিয়াছিল, তাহার রিপোর্ট উক্ত পুস্তকে দৃষ্ট হয়। ট্রটস্কি ষ্টেলিনের উক্ত অভিযোগ ও বিচারকাৰ্য্যকে মানব-ইতিহাসে সৰ্ব্বাপেক্ষা অধিক অলীক ঘটনা বলিয়া উল্লেখ করিয়াছেন। ট্রটুস্কি বলেন যে, এ-কথা প্রতিপদেই এক্ষণে গুন ধায় যে, রাশিয়ায় তাহার মতাবলম্বী লোকের সংখ্যা নগণ্য এবং তাহাদিগকে রাশিয়ার জনসাধারণও বিশেষ ঘৃণা করিয়া থাকে। কিন্তু বিচারালয়ে ঐ সকল ষড়যন্ত্রকারীদের বিচারের সময় যে সাক্ষ্য দেওয়ান হইয়াছে তাহাতে মনে হয় ষে, সাক্ষ্যে বর্ণিত ঐক্সপ কাৰ্য্য গবন্মেণটশাসনযন্ত্ৰে যড়যন্ত্রকারীদের প্রাধান্ত বিনা সম্ভব নহে। এই দুই বাক্যের সামঞ্জস্ত দৃষ্ট হয় না। ট্রটস্কির অভিমত এই ষে, ষ্টেলিন এক্ষণে যে তথাকথিত ষড়যন্ত্রকারীদের অপসারণ বা হনন কার্ধ্যে প্রবৃত্ত হইয়াছেন তাহার উদ্দেশু রাজনীতিক। ধাহা হউক, তিনি মনে করেন যে, বৰ্ত্তমান রুশ-গবন্মেন্টের ব্যাপারের অস্তঃসারশূন্ততা (bankruptey) এক নূতন "ইনটারন্যাশক্ষাল” প্রতিষ্ঠার পথ প্রস্তুত করিয়াছে। ট্রটস্কি বলেন যে, ১৯৩৩ সাল হইতেই পৃথিবীর নানা স্থানে বিভিন্ন বিদ্রোহী সম্প্রদায় “চতুর্থ ইনটারন্যাশন্যাল”এর পতাকাতলে সমবেত হইয় এক নূতন দল গঠনে বিশেষ সাফল্য লাভ করিয়াছে। এক্ষণে ষ্টেলিনের উক্ত কার্ধ্য এই ‘চতুর্থ ইন্টারন্যাশঙ্কাল"কেই অস্কুরে বিনাশ করিবার প্রাণপণ চেষ্ট । —N. সর চিমনলাল শেতলবাদের অভিভাষণ উদারনৈতিক সংঘের গত বাৎসরিক অধিবেশনে সর চিমনলাল শেতলবীজ তাহার অভিভাষণের প্রারম্ভেই কানিজম হইতে ভারতের বিপদ সম্বন্ধে যাহা বলিয়াছেন তাই প্রণিধানযোগ্য। তিনি বলেন যে, সোগুলিজমের ছদ্মবেশে ভারতে কমু্যনিজম যে-ভাবে প্রসার লাভ করিতেছে তাই কেবল যে কংগ্রেসের পক্ষে বিপজ্জনক , তাহা নহে, ই সমগ্র দেশের পক্ষেই বিপজ্জনক। সোণ্ডালিজম ° কমু্যনিজমের মত ও পথে অনেক পার্থক্য আছে। ষে সমাজতন্ত্রবাদ এক্ষণে ইউরোপের অনেক দেশে চলিত আছে, তাহাকে সোপ্তালিজম্ বলে, আর রাশিয়ায় যে সমাজতন্ত্রবাদ প্রবর্তিত তাহাকে কমুনিজম বলে । কমুনিজমের মত ও পথ সংগ্ৰামমূলক ( militant), কিন্তু সোশ্বালিজমের তাহা নহে। শ্রমিক প্রভূতিদের অবস্থার উন্নতির ব্যাপারে সোগুলিষ্টরা নিয়মতান্ত্রিক পন্থ উপযুক্ত বলিয়া মনে করেন, কিন্তু কমুনিষ্টদের মত ইহার বিপরীত। সবু চিমনলাল বলেন, ইউরোপভূখণ্ডে সোণ্ডালিজম বা সমাজতন্ত্রবাদ বলিতে যাহা বুঝায়–অর্থাৎ জনসাধারণের সম্যক অধিকার লাভ, ধনিক ও শ্রমিকের মধ্যে স্থায্যভাবে লভ্যাংশ বণ্টন এবং কোন কোন শিল্পঅাদি গবষ্মেন্টের অধিকারভুক্তকরণ, তাহাতে র্তাহার সম্মতি আছে। ভারতে কংগ্রেসীদের মধ্যে অধিকাংশেরই সোশালিজমের সহিত সহানুভূতি আছে, কিন্তু তাহার কমু্যনিজমুকে ভারতের পক্ষে ক্ষতিকারক বলিয়া মনে করিয়া থাকেন। ইহারাই এক্ষণে ংগ্রেসের পরিচালক। কিন্তু বামপন্থীদের ইহাতে বিশ্বাস নাই । কংগ্রেস-মন্ত্রীরা যে নিয়মতান্ত্রিক উপায়ে জনগণের কল্যাণ সাধন করিতে চাহেন তাহাতে উক্ত বামপন্থীদের আস্থা নাই। তাহারা উহাকে তুচ্ছ বলিয়া মনে করিয়া থাকেন। সেই জন্য র্তাহারা এখনও শ্রমিক প্রভূতিদের ক্ষেপাইয়া থাকেন । ইহাতে কংগ্রেস-মন্ত্রীদের অনেক ক্ষেত্রেই বিশেষ অক্ষবিধা ভোগ করিতে হইতেছে, এবং তাহারা উক্ত আন্দোলনকারীfদগকে অনেক সময় সাবধান করিয়া দিতে বাধ্য হইতেছেন। বাস্তবিক ইহাতে দেশের অধিকাংশ লোকেরই সহানুভূতি আছে । কমু্যনিষ্টর রাষ্ট্র ও সমাজের যে বিপ্লবকারী পরিবর্তন এক দিনেই আনয়ন করিতে চাহেন, তাহা অনেকেই দেশের পক্ষে বিশেষ ক্ষতিকর ও অমঙ্গলজনক বলিয়া মনে করিয়া থাকেন। পরিবর্তন সকলেই চাহেন, কিন্তু তাহ ধীরে ধীরে ঘটুক ইহাই অধিকাংশের মত। কংগ্রেস মন্ত্রিত্ব গ্রহণ করিয়া এক্ষণে তাহাই করিতে চাহেন বলি লোকদের সহাহভূতি তাহারে পশ্চাতে আছে। কিন্তু এই সহানুভূতি এক্ষণে স্বপ্ত বা নিক্রিয় থাকিলে চলিবে না, উহা এমন রূপ ধারণ করা উচিত যাহাতে কমুনিষ্টদের প্রোপাগাও দেশের .ক্ষতিসাধন করিতে নাপারে । -N.