পাতা:প্রবাসী (সপ্তত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/৬৮৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

せ、RR বনমধ্যে কোথায় এক দল শেয়াল ডাকিয়া উঠিল। ভালুক বা বাঘ পথ না আটকায়। ফিরিবার পথে এক দিন প্রথম বন্য ময়ুর দেখিলাম বনান্তস্থলীতে শিলাখণ্ডের উপর। এক জোড়া ছিল, আমার ঘোড়া দেখিয়া ভয় পাইয়া ময়ুরটা উড়িয়া গেল, প্রবাসী SN○88 তখন ময়ুর দেখিবার অবকাশ ছিল না, তবু একবার সেটার সামনে থমকিয়া দাড়াইলাম। বস্ত ময়ুর কখনও দেখি নাই, লোকে বলিত এ অঞ্চলে ময়ূর আছে, আমি বিশ্বাস করিতাম না। কিন্তু বেশীক্ষণ বিলম্ব করিতে ভরসা হইল না, কি জানি, মহাব্লিথারূপের বাঘের তাহার সঙ্গিনী কিন্তু নড়িল না। বাঘের ভয়ে আমার গুজবটাও যদি এরকমে সত্য হইয়া যায় ! ক্রমশঃ ংস্কৃতির যোগসাধনা [ শাস্তিনিকেতনে হিন্দী-ভবনের ভিত্তিস্থাপন উপলক্ষ্যে স্বাগতবাণী ] শ্ৰীক্ষিতিমোহন সেন আজ মহোৎসব-তিথি, বহু মান্যগণ্য সজ্জন আজ এখানে অভ্যাগত, তাহাদের অমূল্য সব কথার জন্যই সময় দেওয়া প্রয়োজন, আমাদের বক্তব্যের জন্য সময় অল্প থাকাই উচিত। অনেক কিছুই আজ মনে আসিতেছে, সংক্ষেপে তার মধ্যে দুই-একটি কথা মাত্র বলিব । মামুষের জ্ঞান ও শক্তি তাহার প্রেম ও সাধনাকে অতিক্রম করিয়া আজ উচ্ছৃঙ্খল হইয়া পড়িয়াছে, তাই সারা পৃথিবীতে আজ আর দুঃখের অন্ত নাই। সমগ্র মানবসভ্যতা আজ সঙ্কটাপন্ন। ভরসার কথা এই যে দেশে দেশে এক-আধ জন মহাপুরুষ “চলতি” জাতীয়তার উপরে উঠিয়া সকল মানবকে বিশ্বজনীন সত্যের মধ্যে মহাযোগের ডাক দিয়াছেন। জাতীয়তার তরফ হইতে তাই তাহারা আজ বহু লাস্থিত। কিন্তু কোনো দুখকষ্ট-অপমানই তাহাদিগকে কিছুমাত্র নিরস্ত করিতে পারে নাই, পরিবেও না, কারণ র্তাহাদের কণ্ঠেই আজ বিশ্ববিধাতার বাণী ধ্বনিত । রবীন্দ্রনাথের সেই ডাকের প্রত্যক্ষ विश्वश् ७३ विश्वভারতী। এখানে আর কিছু সম্পন্ন করা যদি না-ও সম্ভব হয় তবু এখানে পরস্পরের পরিচয়ের ও মিলনের যে একটি মহাক্ষেত্র রচিত হইয়া উঠিতেছে, তাহার কি মূল্য কম ? যদি এখানে পরস্পরের পরিচয় ও মিলন অব্যাহত হইতে পারে তবে এই ক্ষেত্র ধন্য হইবে, রবীন্দ্রনাথের সকল দুঃখ কষ্ট ও শ্রম সার্থক হইবে। রাজনীতির দৃষ্টিতে এক দিন এই মিলনের ডাক মনে হইত নিরর্থক। কিন্তু এখন সবাই বুঝিয়াছেন যে-ভীষণ দিন আসিতেছে তাহাতে কোনো বর্জন-ধর্মী (exclusive) রাজনীতি মাতুষকে রক্ষা করিতে আর সমর্থনহে। পরস্পর পরম্পরকে ভাল করিয়া না-জানাটা যে কত বড় সৰ্ব্বনাশ কথা তাহার সাক্ষী মহাভারত। কুরুক্ষেত্রের প্ৰলয়যুদ্ধে অষ্টাদশ অক্ষৌহিণী নিমূল হইল, ভারতের সকল শক্তি রসাতলে গেল, এদেশের সর্বনাশের পথ চিরকালের জন্য খুলিয়া গেল। কিন্তু এই সবের মূলে একমাত্ৰ হেতু, পরিচয়ের অভাব। কৰ্ণ অজুন দুই সহোদর ভাই। দুইই মহারথী বীর। পরস্পরকে তাই বলিয়া না জানিতেই লাগিল সঙ্ঘর্ষ। সেই সঙ্ঘর্ষেই মহাভারতের প্রলয়াগ্নি জলিয়া উঠিল ।