পাতা:প্রবাসী (সপ্তত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/৬৯০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

झोछुन्म সংস্কৃতির cষাগসাধনা శ్రీకాNరి এই দুৰ্গতির পুনরভিনয় না হয় তাই বিশ্বভারতীর মধ্য দিয়া রবীন্দ্রনাথের বাণী সারা ভারতকে সারা জগতকে ডাক দিয়াছে—“সকলে এই সাধনার বেদীমূলে সমবেত হও, পরস্পর পরম্পরকে জান, ভাইয়ে ভাইয়ে সকল বৃথা স্বন্দ্বের ও দুর্গতির অবসান হউক।” র্তাহার এই মহামন্ত্র কি নিরাধার হইয়া আকাশে নিরালম্ব ভাবে ভাসিতেই থাকিবে ? যদি আজও এই সাধনা প্রতিষ্ঠিত হইয়া জীবন্ত হইয়া না ওঠে, তবে কিসের আজ নব যুগ কাজেই যাহারা এই মিলনের যজ্ঞবেদীর পাশে একটি একটি সাধনাকে ও সংস্কৃতিকে অগ্রসর করিয়া আনিতেছেন, র্তাহারা ভবিষ্যতের জন্য একটি মহাতীর্থ রচনা করিতেছেন । তাহারা আমাদের নমস্ত, তাহাদের নমস্কার করি । এখানে বৈদিক, আবেস্তিক, বৌদ্ধ, বৈষ্ণব প্রভৃতি সাধনা সমবেত হইয়াছে, ইসলামের সাধনাও এখানে আসিয়া পৌঁছিয়াছে, তিব্বত চীন ও বৃহত্তর ভারতের সাধনা এখানে যুক্ত হইয়াছে, শুধু কি ভারতের সকল প্রদেশের সংস্কৃতি এখানে সমবেত হইবে না ? এই উপলক্ষ্যে প্রাদেশিকতার সর্ববিধ বেড়া কি বিলীন হইয়া আসিবে না ? বড় দুঃখে সাধকশ্রেষ্ঠ কবীর বলিয়াছিলেন, “বেঢ়াহী ক্ষেত খায়।” অর্থাৎ “বেড়াই খাইল ক্ষেত ” এই দারুণ বেড়া র্যাহাদের সহায়তায় উঠিয়া যাইতে বসিয়াছে তাহারা নমস্ত, তাহাদের নমস্কার করি । সমগ্র ভারতের পক্ষে এইরূপ একটি মিলনক্ষেত্রের যে কত দূর প্রয়োজন তাহা কি মুখের কথায় বুঝান সম্ভব ? সমবেত না হইলে বিভিন্ন প্রদেশগুলির পক্ষেও কি আর কোন ভরসা আছে ? র্যাহারা সনাতন বর্জন-ধর্মের (exclusiveness) গর্ব করেন তাহাদিগকে স্মরণ করাইয়া দিতে চাই যে “বিষ্ণু” আমাদের পরম দেবতা। বিষ্ণু অর্থই যিনি ব্যাপনশীল। বিষ্ণুর উপাসক বৈষ্ণব হইয়াও যদি আমরা ক্ষুদ্র সীমার মধ্যেই আপনাদের বদ্ধ করিয়া রাখিতে চাই তবে তাহাই হইবে অবৈষ্ণবজনোচিত আচরণ। সার্থকতার দিক দিয়াও এই পদ্ধতি একান্ত নিফল । চীনের মালীর খুব রক্ষণশীল (conservative), তাহারাও তাহাদের ক্ষেত্রের জন্য দূর দেশের নৃতন নূতন সব বীজ খোজে। কারণ জিজ্ঞাসা করিলে বলে, “বীজ যদি পুরাতন হইয়া যায় বা বাহির হইতে যদি বীজ না আনা যায় তবে কখনই ফলন ভাল হয় না।” ইহা একটি জীববিজ্ঞানসিদ্ধ (biological) সত্য। তাই কি সগোত্রে বিবাহ নিষিদ্ধ ? সংস্কৃতির জগতে এই সত্যটি আরও বেণী সার্থক, হিন্দীর ক্ষেত্রে বাংলার চিন্ময় বীজ এবং বাংলার ক্ষেত্রে হিন্দীর চিন্ময় বীজ আরও বেশী সফল হইবার কথা । যাহাদের সহায়তায় এখানে এই দুইটি সংস্কৃতির মিলনের ব্যবস্থা সম্ভব হইতে পারিল, তাহারা আমাদের নমস্ত, র্তাহাদিগকে নমস্কার করি । এখানে এই যে যোগ তাহা প্রেমের, কাজেই উভয়ের পক্ষেই ইহা সমান প্রয়োজন। এই প্রেমের মিলনে উভয় প্রদেশের সংস্কৃতিই নিরাপদ থাকা চাই । তাই কেহ কাহাকেও গ্রাস করিয়া রাক্ষসী রীতিতে আপনাকে বীভৎস ভাবে স্ফীত করিয়া তুলিবার কথা এক্ষেত্রে মনেও জানিতে পারিবে না। সেইরূপ বর্বর আচার চলিতে পারে শুধু ইম্পিরিয়ালিজমের নৃশংস ভূমিতে। রাজনীতির মিলন হইল সজারুর আলিঙ্গন। সেই ক্ষেত্রে কেহ কাহারও কাছে যাইতে কি কাহাকেও কাছে টানিতে সাহস পায় না, সবাই সবাইকে ভীষণ ভাবে গ্রাস করিতেই বদ্ধপরিকর । মাৎস্তম্ভায়ের চরম লীলা সেখানে দিনরাত্রি চলিয়াছে ! - ভারতবর্ষে যুগের পর যুগ দেখা গিয়াছে ধর্মের পা:ে ধর্ম, মতের পাশে মত বিরাজমান । কেহ কাহাকেও নিঃশেষ করে নাই, বরং একে অন্যকে অনুপ্রাণিত করিয়াছে। অন্যকে মারিয়া গ্রাস করিয়া আপনি স্ফীত হইয়া উঠিবার রাক্ষসী বৃত্তিটা অভারতীয়, বাহির হইতে আমদানী করা। কাজেই এইরূপ সংস্কৃতির মিলনক্ষেত্রের কথা বুঝিতে আমাদের দেশের লোকের পক্ষে কঠিন হইবে না। প্রেমের মিলনক্ষেত্রে কি এই সব বীভৎস নীচ প্রবৃত্তির স্থান থাকিতে পারে? এখানে কে উচ্চ কে তুচ্ছ