পাতা:প্রবাসী (সপ্তত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/৭৩৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

వgha প্রবাসী See88 ভাল লাগে নাই। কিন্তু সৰ্ব্বাপেক্ষা দুঃখের বিষয় হিলন্ধুর নিজের মতকে যুক্তিযুক্ত নয় বুঝিয়াও মত পরিবর্তন করে নাই। শুধু জিদ বজায় রাখা ছাড়া ইহার অঙ্ক কোন কারণ গুণ্ডমূও খুজিয়া পাইতেছিল না। হিলদুরকে সে বলিয়াছিল যদি হিলছুর নিজের মত প্রমাণিত করিতে পারে গুডমুণ্ড নিশ্চয়ই তাহ মানিয়া লইবে । কিন্তু ব্যাপার ঘটিয়াছিল ঠিক উন্টা—হিলছুর মাত্র নিজের জিদ বজায় রাখিবার জগুই নির্দয় ভাবে আপন মত তাহার উপর চালাইয়াছে। ইহার পর হইতে গুণ্ডমুণ্ড হিলছুরের সঙ্গে দেখা করিতে গেলে হিলছুরের ব্যবহার বিশেষ ভাবে লক্ষ্য করিত। সম্প্রতি সে হিলছুরের সম্বন্ধে যে পরিচয় পাইয়াছে তাহাই কি তবে সত্য ? একবার সন্দেহ হইবার পর সে হিলছুরের ব্যবহারে অবাঞ্ছনীয় অনেক ক্রটিই লক্ষ্য করিয়াছে। প্রতিবারই সে মনে মনে বলিয়াছে, “হ্যা, আমি ধাহা ভাবিয়ছিলাম সত্যই ত দেখি তাই।” কত দিন পৰ্য্যস্ত হিলছুরের ভালবাসা অক্ষুণ্ণ থাকিবে, এই প্রশ্নই সৰ্ব্বদা তাহার মনে জাগিত । জাবার সে নিজেকে এই বলিয়া সাত্বনা দিত ধে, সংসারে সকলেরই ত্রুটিবিচ্যুতি আছে, ইহা লইয়া মাথা ঘামাইয়া লাভ নাই। কিন্তু পরক্ষণেই তাহার মনে পড়িত হেলগার কথা, তাহার চোখের সামনে ভাসিয়া উঠিত সেই আদালতের চিত্র-হেলগা বিচারকের সম্মুখে দাড়াইয়া বাইবেল টানিয়া চীৎকার করিতেছে, “আমি মোকদ্দমা তুলিয়া লইতে চাই । আমি এখনও তাঁহাকে ভালবাসি। ষে মিখ্যা শপথ করে আমি ভাহা চাই না।” হিলছুরও সেরূপ হউক, ইহাই তাহার ইচ্ছা। কাহাকেও বিচার করিতে হইলে এখন সে হেলগার সহিত তুলনা করিয়া ভাবে, অধিকাংশ লোকই ভালবাসার ক্ষেত্রে হেলগার সমকক্ষ নহে। দিনের পর দিন হিলদুরের প্রতি তাহার ভালবাসার টান কমিয়া জাসিতেছিল ; অবগু, সে তাহাকে বিবাহ করিবে না এমন কৰা মোটেই ভাবে নাই। এই বলিয়া সে নিজের মনকে বুঝাইতে চেষ্টা করিত যে সাহসের অভাব কাপুৰ্বযৈর লক্ষণ। এই সেদিনও ত সে হিলছুরকে জগতের সৰ্ব্বশ্রেষ্ঠ রমণী বলিয়া,স্থির করিয়াছিল । বিবাহ স্থির হইবার পূৰ্ব্বে যদি এইরূপ ঘটিত তাহা হইলে হয়ত বা সে নিজের মত বদলাইবার স্থধোগ পাইত ; কিন্তু এখন সব ব্যবস্থা হইয়া গিয়াছে, এদিকে বিবাহের দিন পর্য্যন্ত স্থির ; এবং সেজন্ত তাহাদের ঘরবাড়ী মেরামতের কাজ আরম্ভ হইয়া গিয়াছে। ভবিষ্যতে ধে ধনসম্পত্তি ও পদমর্যাদা তাহার জন্ত অপেক্ষা করিতেছে, তাহাও সে হারাইতে চায় না ; আর এখন বিবাহ ভাঙিতে চাহিলে তাহার কারণ কি দেখাইবে ? হিলছুর-সম্পর্কে সে যে-সব ক্রটি লক্ষ্য করিয়াছে তাহ লোকের কাছে এভ তুচ্ছ যে বলিতে গেলে তাহা তাহার মুথেই থাকিবে, কেহই তাহ শুনিবেও না, বুঝিবেও না। নিতাস্ত মানসিক অশাস্তির মধ্যে তাহার দিন কাটিতেছিল ; কোন কাজ লইয়া স্থানান্তরে গেলেই সে আনন্দলাভের আশায় মদের দোকানে ঢুকিয়া মদ কিনিয়া পান করিত। কয়েক বোতল মদ শেষ হইয়া গেলে আবার সে এই বলিয়৷ গৰ্ব্ব করিত ধে হিলছুরের সঙ্গে তাহার বিবাহ হইবে। তাহার মনঃকষ্টের কারণ যে কি তাহা আর সে বুঝিতে পারিত না । প্রায়ই হেলগার কথা তাহার মনে পড়িত, হেলগাকে দেখিবার জন্ত তাহার মন উতলা হইত। সে ভাবিত, হেল্গা নিশ্চয়ই তাহাকে অমুকম্পার চক্ষে দেখে ; কারণ স্বতঃপ্রণোদিত হইয়া সে যে প্রতিজ্ঞা করিয়াছিল তাহা সে রক্ষা করিতে পারে নাই। এই জঙ্ক সে হেলগাকে এড়াইয়া চলিত। * এক দিন সকাল বেলা পথে হেলগার সঙ্গে তাহার দেখা ; হেলগা তখন নিকটের এক গ্রাম হইতে দুধ কিনিয়া বাড়ী ফিরিতেছ। গুডমুণ্ড হেল্গার সঙ্গে বাড়ী পর্যন্ত গেল ; কিন্তু তাহার সঙ্গ হেলগাকে আনন্দ দেয় নাই, সে যেন গুডমুণ্ডকে এড়াইয়াই চলিতে চায় এই ভাবেই দ্রুতপদে হেলগা পথ অভিবাহন করিতেছিল, একটি কথা পৰ্য্যস্ত বলে নাই। গুণ্ডমুণ্ড প্রায় নীরবই ছিল, কি বলিয়া কথা আংগু করিবে তাহাই সে খুজিয়া পাইতেছিল না। পথে চলিতে দূর হইতে দেখা গেল একটা ঘোড়ার গাড়ী তাহদের দিকে আসিতেছে। গুডমুণ্ড চিস্তিত মনে পথ চলিতেছিল বলিয়া গাড়ী ভtহার চোখেই পড়ে নাই, কিন্তু হেলগরি চোখে তাহা কাল করিয়াই পড়িয়াছে—সে হঠাৎ গুড়মুণ্ডের দ্ধিকে চাহিয়া বলিল, “গুডমুও, তোমার ও আমার একসঙ্গে পথ চলা ভাল দেখায় না; আমার দৃষ্টির ভুল না হইয়া থাকিলে