পাতা:প্রবাসী (সপ্তত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/৭৬৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ఆs8 বিভিন্ন জাতির কথা নগর এবং রাজধানী প্রস্তুত হইয়া গেল। সঙ্গে সঙ্গে দলে দলে লোক আসিস্থা রাজধানী ভরিয়া ফেলিল। তখনকার হিন্দুসমাজে নিম্নলিখিত সম্প্রদায়ের উল্লেখ দেখা যায়। ব্ৰক্ষিণ ক্ষত্রিয়, কায়স্থ, বৈদ্য, বৈশু, ভাট, অগ্রদানী, গোপ, তেলী ও কলু, কামার, তামূলী, কুম্ভকার, তত্ত্ববায়, মালী বারুই, নাপিত, আগারী, মোদক, শরাক, গঙ্কবেণে, শঙ্খবেণে, মণিবেণে, কাসারি, সুবর্ণবণিক, সেকুর, দাস, জেলে, ধোবা, দরজী, সিউলী, ছুতার, পাটনী, চণ্ডাল, কোয়ালি বা কোয়াল, কোল, হাড়ী, চামার, ডোম, भांद्रा । কিন্তু মুসলমানদের মধ্যে এত শ্রেণীবিভাগ ছিল না। বৃত্তি-অনুসারে মুসলমানদের মধ্যেও জাতিভেদ ছিল । যাহারা রোজা এবং নামাজ করিত না, তাহাদের বলা হইত গোলাম। এক সম্প্রদায়ের অাখ্যা ছিল ‘জোলা’ । তাহারা কাপড় বুনিত। পীঠ৷ বেচিত, তাই নাম হইয়াছিল "পিঠাহারী'। মাছ যাহারা বিক্রয় করিত, তাহদের বলা হইত "কাবাড়ি’ । মুসলমানদের মধ্যে যাহার দাড়ি রাথিত না, সমাজ তাহাদিগকে বিশেষ শ্রদ্ধার চক্ষে দেখিত না । ঘরে আস্তর লাগাইত তাই নাম হইল ‘সানাকর’। ‘স্বল্পত করিয়া এক দল লোক ‘হাজাম’ আখ্যা লাভ করিল। যাহারা গোমাংস বেচিত, ওtহাদের ‘কসাই’ বলা হইত। কাপড় কাটিত বলিয়া কেহ কেহ দরজী' আখ্যা পাইল । মুসলমানসমাজে বংশেরও আদর ছিল । সৈয়দ’, ‘মোগল’, ‘কাজী ছিল আভিজাত্যে সকলের চেয়ে প্রধান । বিদ্যা ও বুদ্ধি-বলে অনেকে গ্রামের ‘মোড়ল’ হইত । সকলে তাহাকে ‘মোল্প-সাহেব' বলিয়া সম্মান করিত। মুসলমান-পাড়াকে লোকে ‘হাসানহাটী’ বলিত। তখনও দরগায় গিয়া পীরকে ‘ছিক্কি" দিতে হইত। প্রাণ গেলেও কেহ রোজা নামাজ ছাড়িত না । লম্বা দাড়ি রাখাই ছিল তখনকার জিনের রীতি। মাছ যাহার বেচিত, তাহাজের দাড়ি খাকিত না । তাহারা কোন আচারবিচার মানিত না । ষে-হাতে মাছ ধরিত, সেই হাতই আবার কাপড়ে মুছিত। বিবাহ অল্প লোকেই বরিত। অধিকাংশের ভাগেই জুটিত ‘নিক’। ব্রাহ্মণ সেকালের ব্রাহ্মণগণ সৰ্ব্বদা নানারূপ শাস্ত্রালোচনায় ব্যাপৃত থাকিতেন। মুর্থ ব্রাহ্মণের পুরোহিতের কাজ করিতেন। প্রবণসী SN988 অনেকের অাবার পেশা ছিল ৰটকালি করা । কিন্তু আশানুরূপ পুরস্কার না পাইলে তাহারা স্কুলের নামে নিদা রটাইত। বৈষ্ণব ব্রাহ্মণের নাচগান এবং হরির নাম জপ করিয়া দিন কাটাইত। ক্ষত্রিয় ইহার শরীর চর্চা করিত । আখড়াতে প্রতিদিন দণ্ডযুদ্ধ হইত। গদার মত এক রকম দও ছিল, তাহা ঘূৰ্বাইত। কেহ কেহ মৃগয়ায় যাইতে ভালবাসিত। দানে ইহার ছিল মুক্তহস্ত। পুরাণ-গান ইহাদের কাছে খুব প্রিয় ছিল । কায়স্থ চালচলনে ইহার সভ্যভব্য ছিল। ইহারা ছিল নগরের শোভাস্বরূপ। লেখাপড়ার কাজ লইয়াই থাকিত । ट्रैदल्ला সুচিকিৎসক হিসাবে বৈদ্যগণের খ্যাতি ছিল । তাহাজের সঙ্গে সৰ্ব্বদাই পুথি থাকিত। তাহদের পোষাকও সাদাসিধ ধরণের ছিল । পরণে ছিল ধুতি, মাথায় ছিল পাগড়ি এবং কপালে থাকিত ফোট। কঠিন রোগ দেখিলে এক পা দুই পা করিয়া সরিয়া পড়িত। o তখন হিন্দুদের মধ্যে ক্ষত্রিয় বলিয়া বিশেষ একটি শ্রেণী ছিল দেখা যায়। সমাজে ভাহাজের প্রাবল্যও fছল। কিন্তু বৰ্ত্তমানে হিন্দুদের মধ্যে ক্ষত্রিয় বলিয়া বিশেষ কোন সম্প্রদায় নাই বলিলেই চলে। তার পর দেখিতে পাই মারাঠারাও বাংলার হিন্দুসমাজের অস্তভুক্ত ছিল। আজ মারাঠারা বাঙালী হইতে পৃথক হইয়া গিয়াছে । উপসংহারে মঙ্গলকাব্যের দেবতা সম্বন্ধে দুই-একটি কথা বলিব । মঙ্গলকাব্যে স্ত্রী-দেবতারই বিশেষ প্রভাব দেখা যায় । নিছক শক্তির জোরে তাহারা নিজেদের পূজা প্রচার করিয়াছেন । নানা রকম অত্যাচারে অতি হইয়া যত ক্ষণ না মানুষ স্ত্রী-দেবতার কাছে মাখা হেঁট করিধাছে, ততক্ষণ দেবীর শাভি নাই। এই পূজা পাইবার জন্ত ধনপতির উপর চওঁ কি অপরিসীম লাঞ্ছনাই না বহাইয়া দিয়াছেন। ধনপতি fনদারুণ দুঃখকষ্টের মধ্যে নিমজ্জিত হইয়াও তেজের সহিত বলিয়াছে,-মানিব না তোমায়ু দেবত বলিয়া, তাহfর জঠ বাহা কিছু কাঞ্ছনা সহিতে হয়, সহিতে রাজী আছি। চণ্ডীর ঘট পদাঘাতে ভগ্ন করিয়া দিয়াছে। কিন্তু অবশেষে সেই দুরন্তু চণ্ডীর কাছেই মাখা হেঁট করিতে হইয়াছিল ।