পাতা:প্রবাসী (সপ্তত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/৮২৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Պa8 $ to হইয়াছে। আমার অনেকগুলি কবিতা এবং কিছু কিছু নাটক তর্জমা করিয়াছি—সেগুলি এখানকার রসজ্ঞ ব্যক্তিদের ভাল লাগিয়াছে—এবং সেগুলি ছাপা হইলে সমাদৃত হইবে এমন আশা আছে। এমনি করিয়া এখানকার গোলমালের মধ্যে দিন কাটিতেছে—যতই অাদর অভ্যর্থনা পাই না কেন-মনের ভিতরটাতে একটা ক্লান্তির ভার অনুভব করিতেছি—দেশে ফিরিয়া গিয়া সেখানকার অবারিত আকাশ অপৰ্য্যাপ্ত আলোক এবং অনবচ্ছিন্ন অবকাশের মধ্যে নিমগ্ন হইবার জন্য হৃদয়ের মধ্যে প্রায়ই একটা উদ্বেগ অষ্টভব করিতেছি । কিন্তু এখানে আমার কিছু কাজ আছে—সে কাজে ভঙ্গ দিয়া গেলে সেটা অন্যায় হইবে তাই এই আবর্তের মধ্যে ঘুরিয়া বেড়াইতেছি । আশা করিতেছি দেশে ফিরিয়া গিয়া আরো উৎসাহ ও শক্তির সঙ্গে আমার কাজে লাগিতে পারিব । তোমার রধি ঐযুক্ত অবলা বস্ব মহোদয়াকে লিখিত ] ઉં বোলপুর বৌঠাকুরাণী আজ আপনার সস্নেহ পত্র পাইলাম। ইচ্ছা ছিল লিথি যে আমার শরীর অত্যন্ত খারাপ—কিন্তু দুই কারণে লিখিলাম ন—এক, লিখিলেও আপনার দয়া উদ্রেক করিত না, দুই, সম্প্রতি আমার শরীর খারাপ নয়। শেষ কারণটা তেমন গুরুতর বলিয়া গণ্য করি না কিন্তু প্রথমটা মারাত্মক—অতএব খুব উচ্চ কণ্ঠে সতেজে বলিতেছি বেশ আছি, ভাল আছি, রোগের কোনো চিহ্নও নাই । নিবেদিত যে আপনার ওখানে পীড়িত অবস্থায় তাহ। আমি জানিতাম না—আমি একখানা বই চাহিয়া তাহাকে কলিকাতার ঠিকানায় কয়েক দিন হইল পত্র লিখিয়াছি । আপনি দয়া করিয়া এমন ব্যবস্থা করিবেন যে, সে পত্রের যেন তিনি কোনো নোটি না লন। তাহাকে আমার সাদর নমস্কার জানাইবেন এবং বলিবেন যে উৎসুক চিত্তে তাহার আরোগ্য প্রত্যাশায়'রহিলাম। 躲 প্রবাসী ১৩৪৪ আমি বোলপুর বিদ্যালয় খোলার অন্তত দুই সপ্তাহ পরে শিলাইদহ অভিমুখে রওনা হইব অতএব আপনাদের সঙ্গে তংপূৰ্ব্বে নিশ্চয় দেখা হইবে । আপনি যদি বোলপুরে পদার্পণ করেন তবে আরো সত্বর দেথা হইতে পারে বিশেষ আপনি যখন অনেকবার—, থাক, এ নিফল আলোচনায় প্রয়োজন নাই । বেলা ও তাহার স্বামী আসিয়াছিল দিন তিনেক হইল চলিয়া গেছে—মীরাও তাহাদের সঙ্গে মজঃফরপুর গেছে— তাই আমার এখানকার আশ্রম সম্প্রতি আমীর পক্ষে অত্যন্ত শূন্য হইয়া গেছে। অরবিন্দর সহপাঠীরা সকলেই কাৰ্ত্তিক মাসের জন্য বাড়ি গেছে—কেবল যোগেন আছে । সেও দুই এক দিনের মধ্যে চলিয়। যাইবে । কেবল ছুটির জন ছয় সাতেক ছাত্র থাকিবে । অজিতও আজ বায়ু পরিবর্তনের জন্য দিল্লি অভিমুখে রওনা হইল। অরবিন্দ ফিরিয়া আসিলে, যদি ইচ্ছা করেন, ত এথানে পাঠাইতে পারেন । তাহার অঙ্ক ও সংস্কৃতের অধ্যাপক এখানে আছেন । ইতুি। ৩১শে আশ্বিন ১৩ { কীটদষ্ট ] আপনাদের শ্রীরবীন্দ্রনাথ ঠাকুধু সোমবার মাননীয়াস্ত্র বিদ্যালয় আজ খুলিয়াছে। আমার কাজ আরম্ভ হইল। এ কয়দিন ছুটির সময় কয়েকটি ছেলে ছিলতাহাদিগকে অল্পস্বল্প পড়াইতেছিলাম—আজ এখানকার শূন্তত অনেকটা পূর্ণ হইয়া আসিয়াছে। এখন হইতে এই কাজের মধ্যেই আমার বিশ্রাম—এই কাজের মধ্যেই আমার শরীর মনের চিকিৎসা। কাজ হইতে দূরে গিয়া কি আমার মন শাস্ত হইবে ? আমার অবর্তমানে বিদ্যালয়ের যে যে অংশ বিকল হইয়া গিয়াছিল—সেই সমস্ত অংশ আমাকে সংস্কার করিতে হইবে । অধ্যাপক ও ছাত্রদের অন্তরের মধ্যে ভস্ম হইতে আগুনকে জাগাইয়া তুলিতে হইবে