পাতা:প্রবাসী (সপ্তত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/৮৫৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

*Ե-Յ দশটা থেকে ছটা-সাতটা অবধি আপিসের পড়াই কি কম ! তার পর বাড়ী এলে আবার হাটবাজার, ওষুধ, ডাক্তার, ভাৰনাচিস্ত ছাইপাশ কত পড়া বল দেখি।” কথাশেষে মহীতোষ হো হো করিয়া হাসিয়া উঠিল । স্ত্রী বলিল, “খুব ভাল পড়ার কথা ছেলেকে শোনাচ্ছ যা হোকৃ!” মহীতোষ বলিল, “ইস্কুলের পড়া ত এই বই পড়ার প্রথম ভাগ গো । তুমি না বোঝ, ওদের এখন থেকে কিছু কিছু বোঝা ভাল।” স্ত্রী বঙ্কিল, “আজ তা হ’লে আপিস যাবে না ত ? যাক্ বাচা গেল। তোমার জাম-কাপড়ে সাবান দিয়ে নেয়ে নিই।” একটু থামিয়া বলিল, “এক দিন কালীঘাটে পুজো দিয়ে আসি চল । সোনার অমুখে আমি মানত করেছি যে ” “বেশ, কালও না-হয় আপিস কামাই করি । মঙ্গলরার অাছে, মায়ের পুজোট ভাল ক’রেই দেওয়া যাক।”

  • মহীতোষের সামনে ভাতের থালা সাজাইয়া দিয়া তাহার স্ত্রী বলিল, “জামা কাচবার সময় একখানা চিঠি পেলাম তোমার পকেট থেকে । জলে ভিজে লেখাগুলো মুছে গেছে, জরুরী চিঠি নয় ত?”

মহীতোষ ভাতের গ্রাস মুখে তুলিয়া উত্তর দিল, “ন, প্রজ্ঞাসী ఫి 388 তেমন জরুরী নয়। 'মার জন্বশ্বের খবর দিয়ে মা নিজে লিখেছেন।” g স্ত্রী বলিল, “অনেক দিন বাড়ী যাও নি, হয়ত তার দেখবার ইচ্ছে হয়েছে, তাই অমুখের কথা লিখেছেন ।” “স্বরেনও তাই বলে। বড়বাবু বললেন—অমুখ বেশী হ’লে জরুরী তার আসত।” ' ' “তা না-হয় একবার গেলেই পারতে ?” “বাপ রে, তা হ’লে আপিসে আর ঢুকতে হত না। ছেলের অস্থখ, বউয়ের অমুখ এ সবে কোম্পানী ছুটি মঞ্জুর করে, মা-বাপের অস্থখ বললে গ্রাহই করে না।” . স্ত্রী হাসিয়া বলিল, “আচ্ছা আপিস ত ! তা সোনার অমুখ ব’লে আর দিন কতক না হয়—” মহীতোষ মাছের মুড়া ভাঙিতে ভাঙিতে জবাব দিল, “এই বলে কত কষ্টে মঞ্জুর করিয়েছি । আচ্ছা, কাল যদি কালীঘাটে মার পূজো দিতেই হয়, কি কি জিনিষ লাগবে একটা ফর্দ করত । ঘণ্টাখানেক পরে সব কিনে কেটে এনে রাখি।” f পর দিন ভক্তিমান মহীতোষ সস্ত্রীক কালীঘাটে গিয়া মায়ের চরণ বন্দনা করিল এবং ফুল, বিল্বপত্র, চিনির নৈবেদ্য প্রভৃতি ষোড়শোপচারে পূজা দিয়া কৃতজ্ঞতার ঋণ পরিশোধ করিল। 漫 প্রদীপের আলোয় মনে হইল, দেবীর মুখের হালি বিদ্যুতের মত প্রখর হইয়া উঠিয়াছে।