পাতা:প্রবাসী (সপ্তত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/৮৭৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বিজ্ঞান, দর্শন ও ধৰ্ম্ম পণ্ডিত সীতানাথ তত্ত্বভূষণ গত বৎসর এই দ্বিনে "ঋষিকাহিনী ও ঋষিপস্থা”শীর্ষক বক্তৃতায় আপনাদের বলেছিলাম ঔপনিষদ ঋষিদের শ্রেণীভেদ, মতভেদ ও পন্থাভেদ সম্বন্ধে । দেবর্ষি, ব্রহ্মর্ষি ও রাজর্ষি, ঋষিদের এই তিন শ্রেণী। দেবর্ষিরা বৈদিক দেবতা, সম্ভবতঃ ঐতিহাসিক পুরুষ নন। ঐতিহাসিক পুরুষ হ’লেও তারা ঔপনিষদ যুগের লোক নন। কিন্তু সৰ্ব্বত্র-প্রচলিত প্রাচীন প্রথা অনুসারে ঔপনিষদ রাজধিগণের কেউ কেউ তাদের দার্শনিক মত কোন কোন দেবতার উপর আরোপ করেছেন। তারাই উপনিষদের দেবর্ষি । ব্রহ্মর্ষিগণ ব্রাহ্মণ-জাতীয় এবং রাজর্ষিগণ ক্ষত্রিয়জাতীয় ঋষি । এই হ’ল ঋষিদের শ্রেণীভেদ । তাদের মতভেদ এই যে তিন শ্রেণীর ঋষিই অদ্বৈতবাদী বটেন, কিন্তু ব্রহ্মর্ষিদের অদ্বৈতবাদ নির্বিশেষ, আর দেবধি ও রাজর্ষিদের অদ্বৈতবাদ সবিশেষ বা বিশিষ্ট । অর্থাৎ সব শ্রেণীর ঋষিই বলেন ব্রহ্ম মূলে জীব ও জগতের সহিত এক, ব্ৰহ্ম থেকে জীব ও জগতের কোন স্বতন্ত্রতা নেই। কিন্তু দেবধিরা ও রাজৰ্ষিরা বলেন যে এই মৌলিক একত্বের সঙ্গে এর অবিরোধী একটা ভেদ বা বিশেষত্ব আছে । এই মতটা ইংরেজীতে প্রকাশ করলে বোধ হয় ইংরেজী-জানা লোকেরা আরও স্পষ্টরূপে বুঝবেন । মতটা এই ষে সসীম str s gots, vrsta arī cetter distinct Ti distinguishable, few divisible xi separable to of coro, ঋষিদের এই মতভেদ থেকে তাদের পন্থাভেদ হয়েছে। ব্ৰক্ষর্ষিদের মতে জীব-ব্রহ্মের ভেদবোধ সাধকের যত দিন থাকুবে তত দিন তার যজ্ঞ, পূজা বা উপাসনা চলবে। তত দিন তিনি পিতৃষাণ পথে পিতৃলোক বা স্বৰ্গলোকে গিয়ে তার সঞ্চিত পুণ্যফল ভোগ করবেন আর পুণ্যফল-ক্ষয়ে পূৰ্ব্বজয়ের ' কৰ্ম্মফলামুসারে পুনঃ পুনঃ জন্মপরম্পর গ্রহণ করবেন, তার মুক্তি হবে না। যখন জীব-ত্ৰক্ষে, সাধক ও সাধ্যে, একত্ব اه مسدسه ولا يج বোধ হবে তখন তার সদ্যোমুক্তি অর্থাৎ মরণ-মুহূর্তেই ব্ৰন্ধে লয়প্রাপ্তি হবে। দেবধি ও রাজর্ষিদের মতে প্রকৃত ব্ৰহ্মজ্ঞানীকে পিতৃষাণ পথে যেতে হবে না। তার জ্ঞান ও পুণ্যের পরিপক্কতার জন্তে তিনি দেবযান পথে গিয়ে, নানা সোপান অতিক্রম ক’রে, ব্ৰহ্মলোকে, ব্রহ্মসন্নিধানে, উপনীত হবেন, এবং ব্রহ্মের আদেশে সেই লোকে, মুক্তাত্মাদের সঙ্গে, চিরবাস করবেন । তার পুনর্জন্ম হবে না, ব্রহ্মে লয়প্রাপ্তিও হবে না। এই মুক্তির নাম ক্রমমুক্তি। এই পস্থায় আমি গতবারের বক্তৃতায় সাধ্যানুসারে ব্যাখ্যা করেছিলাম। আমার বক্তৃত ‘প্রবাসী’ পত্রের গত বৈশাখের সংখ্যায় প্রকাশিত হয়েছে ; আপনাদের কারো ইচ্ছা হ’লে তা পড়তে পারেন। আজ আমি শেষোক্ত পন্থা সম্বন্ধে কিছু বিশেষভাবে বলতে চাই। দুটি কারণে আমার এ বিষয়ে বলতে ইচ্ছা হচ্ছে । একটি কারণ আচার্ষ্য জগদীশচন্দ্রের দেহত্যাগ ও তার বৈজ্ঞানিক আবিষ্কারগুলির সম্বন্ধে আলোচনা । দ্বিতীয় কারণ ভারতীয় বিজ্ঞান-সঙ্ঘের রৌপ্য জয়ন্তী ও তদুপলক্ষে এদেশে কতিপয় পাশ্চাত্য বৈজ্ঞানিক-প্রবরের শুভাগমন । গত ৫ই ডিসেম্বর আমি আচার্ষ্য জগদীশের ধৰ্ম্মনিষ্ঠ ও অপূৰ্ব্ব আবিষ্কারগুলির সম্বন্ধে এই বেদী থেকে কিছু বলেছিলাম। আমার উপদেশের শেষভাগে বিজ্ঞান ও দর্শনের প্রণালীভেদ সম্বন্ধে সংক্ষেপে কিছু বলেছিলাম। আজ সে বিষয়ে আরও কিছু বলা আবশ্বক বোধ করছি । জগদীশ তার গবেষণায় বৈজ্ঞানিক প্রণালীই অবলম্বন করেছিলেন, কিন্তু তার চেষ্টার মূলে ছিল দার্শনিক সিদ্ধান্ত,—বৈদাস্তিক ব্ৰহ্মবাদ। তা না থাকলে তিনি তার অদ্ভুত আবিষ্কারগুলি করতে । পারতেন না । সেই সিদ্ধান্ত হচ্ছে—“প্রালেক্ষে বঃ সৰ্ব্ব- , ভূতৈর্বিভাতি" (মুণ্ডক ৩৩৪), অর্থাৎ যিনি সৰ্ব্বভুক্তরূপে । প্রকাশ পাচ্ছেন তিনি এই প্রাণ। এই উক্তি কেবল