পাতা:প্রবাসী (সপ্তত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/৮৭৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৮০২ ৷ বিশ্বাস নয়, দার্শনিক প্রণালীতে এই সত্যে উপনীত হওয়া স্বায় । বিজ্ঞান ও দর্শনের প্রণালী আপাততঃ ভিন্ন ব’লে বোধ হয়, কিন্তু বস্তুতঃ জ্ঞানলাভের প্রণালী একই। বিজ্ঞানের প্রণালী পৰ্য্যবেক্ষণ (observation), আর দর্শনের প্রণালী unfo off ( criticism of experience ) - বিজ্ঞানের নিম্নতম স্তরে, যাকে ভূতবিজ্ঞান ( physical science ) বলা হয় তাতে, পৰ্য্যবেক্ষণ-ক্রিয়াকে স্থূলভাবে গ্রহণ করা হয়, পৰ্য্যবেক্ষণ করতে গিয়ে পৰ্য্যবেক্ষণকারীকে কাৰ্য্যত: ছেড়ে দেওয়া হয়, পৰ্য্যবেক্ষণের বিষয় ও বিষয়ীর মধ্যে যে অচ্ছেদ্য সম্বন্ধ আছে সেট বোঝা হয় না, মনে রাখাও হয় না, তাতেই বিজ্ঞান ও দর্শনের প্রণালীতে একান্ত ভেদ করা হয়। মনোবিজ্ঞান পৰ্য্যন্ত না গেলে এই ভুলটা, এই একদেশদর্শিতা, ধরা পড়ে না । দর্শনাভিজ্ঞ বৈজ্ঞানিকের ক্রমশ: এই ভুল বুঝতে পারছেন। আশা করা যায় যে অনতিদীর্ঘ কালের মধ্যেই বৈজ্ঞানিক ও দার্শনিকগণের মধ্যে একটা বোঝাপড়া হবে, তাদের প্রণালীর মৌলিক একতা স্বীকার করা হবে । ইতিমধ্যেই মনোবিজ্ঞান, নীতিবিজ্ঞান, সমাজ-বিজ্ঞান প্রভৃতি বিদ্যাকে mental or philosophical science8 (IfafR* <f wfoifç fJgata) বলা হচ্ছে । তাতেই বিজ্ঞান ও দর্শনের মিলবার ইচ্ছে বোঝা যাচ্ছে । ( দর্শন ) হচ্ছে science of sciences (fosfogo fossa ) গ্রীক দার্শনিক-প্রবর এরিস্টটল্ বারো-শ বছর আগেই Metaphysics: Theo'ogy ( Grifwyl ) {'ty costszą i ঔপনিষদ ঋষির তিন হাজার বছর আগেই পরা ও অপরা বিদ্যার ভেদাভেদ বুঝেছিলেন। মুণ্ডক উপনিষৎকার তার প্রথম শ্লোকেই ব্রহ্মবিদ্যাকে বলেছেন "সৰ্ব্ববিদ্যাপ্রতিষ্ঠা” । ষাহোক, আধুনিক পাশ্চাত্য দর্শনের সংক্ষিপ্ত বিবরণ অবলম্বন ক’রে দর্শনের প্রণালীটা বুঝাতে চেষ্ট৷ করছি। ফরাসী দার্শনিক ডেকার্ট এই দর্শনের প্রতিষ্ঠাতা । তিনি ঈশ্বর, জগৎ, জীব, সকল বিষয়ে সন্দিহান হয়ে দেখলেন যে সন্দেহ ব্যাপারটা নিঃসন্দিগ্ধ, সন্দেহের অস্তিত্বে .পন্দেহ করাখায় না । কিন্তু সন্দেহ একটা চিন্তা, চিন্তাটা আমার, আমি চিন্তা করছি, ongito, এটা নিঃসন্ধি, আর “আমি চিন্তা করছি’র অর্থই “আমি আছি” । Cagito Metaphysics 6धवों★ी SNరి38; ergo sum, আমি চিন্তা করছি, স্বতরাং আমি আছি । এটা অনুমান নয়, একটা মূল সত্যের প্রকাশ বা ব্যাখ্যা । এই মূল সত্যই হ’ল আধুনিক প্রতীচ্য দর্শনের ভিত্তি । জার্মান দার্শনিক ক্যান্ট এই ভিত্তিকে আরও স্পষ্ট করলেন । তিনি আর তার দ্বারা প্রভাবিত র্তার সমসাময়িক ও অব্যবহিত পরবর্তী দার্শনিকেরা দেখালেন যে জ্ঞান অখণ্ড বস্তু। ভিন্ন ভিন্ন মনোবৃত্তিদ্বারা যে আমরা ভিন্ন ভিন্ন বস্তু জানি, তা নয় । লোকে যে মনে করে যে আমরা ইন্দ্রিয় ( sense ) দ্বারা দেশকাল-গত জগৎকে জানি, বুদ্ধি ( understanding )-দ্বারা নিজ নিজ আত্মাকে জানি, wett: 2ses ( reason zij intuition ) wfi wTRogow Pitz5 জানি, এই মত ভুল। এক অখণ্ড জ্ঞানক্রিয়ার ভিতরে ইন্দ্ৰিয়বোধ, বুদ্ধি ও প্রজ্ঞা অবিভাজ্য উপাদানরূপে রয়েছে, জ্ঞান-পরীক্ষণরূপ প্রণালী অবলম্বন করলে জ্ঞানের সাক্ষ্য, জ্ঞানের গোট ( concrete ) বিষয়, স্পষ্টরূপে প্রকাশিত হয়। প্রত্যেক জ্ঞানক্রিয়ার অখণ্ডিত বিষয় এই,— “আমি বিশেষ দেশে, কালে, বিশেষ কোন বর্ণ দেখি, শব্দ শুনি’ ইত্যাদি। এই জ্ঞানকণিকাতে দেশকালাশ্রিত সমগ্র বিশ্ব, সসীম জীব ও অসীম ব্রহ্মের জ্ঞান নিহিত রয়েছে, জ্ঞানক্রিয় বিশ্লেষণ করলেই তা ধরা পড়ে। বর্ণ, শব্দ, স্পর্শ, ঘ্ৰাণ, স্বাদ, এসকলকে আপাতত: আত্মা থেকে স্বতন্ত্র জড়বস্তুর গুণ ব’লে বোধ হয় । কিন্তু জ্ঞান বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় ‘আমি দেখি’ এই তত্ত্ব থেকে বর্ণকে তফাৎ করা যায় না, ‘আমি দেখি'র সঙ্গে বর্ণ অচ্ছেদ্য ; বর্ণ আত্মার একটি বিজ্ঞান বা অমুভব ( sensation ) । শব্দ, স্পৰ্শ, ঘ্ৰাণ, স্বাদ এসবই এরূপ বিজ্ঞান | এসব বিজ্ঞান কোন অচেতন পদার্থের গুণ, কোন অচেতন শক্তির কার্য্য (effect), একথার কোনও অর্থ নেই। কিন্তু বৈজ্ঞানিকেরা এরূপ একটা বস্তু বা শক্তির কল্পনা করেন, আর তাকেই জড় বলেন । জড় বলতে র্তারা আমাদের সাক্ষাং জ্ঞানগোচর এসকল বিচিত্র বস্তুকে বুঝেন না। তারা জেনেছেন যে এই সাক্ষাং বিচিত্র জগং আত্মসাপেক্ষ। এ-বিষয়ে লৌকিক জড় আর বৈজ্ঞানিক জড় সম্পূর্ণ ভিন্ন। যা হোক, গুরুপ একটা বস্তু মেনে নেওয়া সম্পূর্ণ অযৌক্তিক । বিজ্ঞান বা অনুভব যার ভিতরে নেই তা