পাতা:প্রবাসী (সপ্তত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/৮৮৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

沈5百 নিৰ্দ্ধারণের অভ্যাস আমরা অনেক দিনই হারাইয়৷ ফলিয়াছি । প্রকৃতির সমগ্ৰ কৰ্ম্মধারার মূলে রহিয়াছে একটি নিরস্তর প্রবৃত্তি, ব্যষ্টি ও সমষ্টির মধ্যে সমন্বয় সাধন করা । ব্যষ্টি সমগ্র বা সমষ্টি কর্তৃক পুষ্ট হইতেছে, সমষ্টি ব্যষ্টি কর্তৃক গঠিত হইতেছে--প্রকৃতি জীবনের এই দুই প্রান্তের মধ্যে ভারসাম্য রাখিয়া চলিয়াছে । অতএব মানবজীবনের পূর্ণতার জন্য অবশ্যপ্রয়োজন হইতেছে, সামাদের জীবনের এই দুই প্রান্তের মধ্যে, ব্যষ্টি ও সামাজিক সমষ্টির মধ্যে সামঞ্জস্য বিধান করা । সিদ্ধ সমাজ হইবে সেইটিই বাহা ব্যষ্টির পূর্ণতম বিকাশের সম্পূর্ণভাবে অনুকূল ; আবার ব্যষ্টির সিদ্ধি অপূর্ণ রহিয়া পাইবে যদি সে যে-সমাজের অন্তর্গত তাহার পূর্ণতালাভে এবং শেষ পৰ্য্যন্ত বৃহত্তম মানবগোষ্ঠীর, সমগ্র মানবজাতির পূর্ণতা লাভে, সহায়তা না করে । সৰ্ব্বাঙ্গসিদ্ধ সমাজে এবং শেষ পর্য্যন্ত সৰ্ব্বাঙ্গসিদ্ধ মানবমণ্ডলে ব্যষ্টির জীবনের দুৰ্ব্বাঙ্গসিদ্ধি ও পূর্ণতা-ইহাই প্রকৃতির অবশুম্ভাবী লক্ষ্য। কিন্তু সমাজের মধ্যে সকল ব্যক্তির বিকাশ যুগপৎ সমান ভাবে এবং সমগতিতে হয় না । কেহ কেহ অগ্রসর হইয়া যায়, তাহাদের সহিত তুলনায় কেহ কেই দাড়াইয়া থাকে, আবার কেহ কেহ পিছাইয়া পড়ে। অতএব সমষ্টির মধ্যে কোন বিশেষ শ্রেণীর প্রাধান্য অবশ্যম্ভাবী, ঠিক যেমন সমষ্টিসকলের মধ্যে বিশেষ বিশেষ দেশ বা জাতিরও প্রাধান্য অবশ্যম্ভাণী । প্রকৃতি সাময়িক ভাবে তাহার প্রগতির জন্য ( কিংবা এমনও হইতে পfরে যে, পশ্চাদ্বর্তনের জন্য ) যেগুণ চায়, যে-শ্রেণী সৰ্ব্বাপেক্ষ সিদ্ধভাবে সেই গুণের পিকাশ করিতে পারে সেই শ্রেণীই প্রাধান্ত লাভ করে। যদি প্রকৃতি শক্তি ও চরিত্রবল চায়, তাহা হইলে অভিজাতশ্রেণীর প্রাধান্ত হয় ; যদি সে জ্ঞান-বিজ্ঞান চায়, তাহা ইষ্টলে শিক্ষিত ও পণ্ডিতশ্রেণীর প্রাধান্ত হয় ; যদি কাৰ্য্যকরী দক্ষতা, চাতুর্ধ্য, অর্থনীতি ও সামৰ্থ্য সংগঠনের আবশ্বক হয়, তাহা হইলে বুর্জোয়া বা বৈশ্বশ্রেণীর প্রাদুর্ভাব হয় এবং সাধারণতঃ উকীলেরাই তাহাদের নেতা হয় ; যদি সাধারণের সুখস্বাচ্ছন্দ্যের বিস্তার এবং শ্রম У о о-by À. শ্রেণী-সংগ্রাম

  • のご)

ংগঠনের আবশ্বকত হয়, তাহা হইলে শ্রমিক-শ্রেণীর প্রাধান্যও অসম্ভব নহে । কিন্তু এই যে ঘটনা, শ্রেণী-বিশেষেরই হউক, আর দেশবিশেষেরই হউক, প্রাধান্ত ও আধিপত্য, ইহা কেবল একটি সাময়িক প্রয়োজন ব্যতীত আর বেশী কিছু হইতে পারে না । কারণ মানবজীবনে প্রকৃতির ইহা কখনই চরম লক্ষ্য হইতে পারে না যে, কতিপয় লোক অধিকসংখ্যক লোককে শোষণ করিবে ( এমন কি অধিকসংখ্যক লোকই কতিপয় লোককে শোষণ করিবে ), মানবসমাজের অধিকাংশকে অবনত ও পরাধীন করিয়া রাখিয়া কেবল কতকগুলি লোক পূর্ণতা লাভ করিবে ; এ-সব কেবল সাময়িক কৌশল মাত্র হইতে পারে। অতএব আমরা দেখিতে পাই যে, এই সব প্রাধাত্যের মধ্যে সকল সময়েই তাহাদের পৰ্ব্বংসের বীজ নিহিত থাকে। হয় তাহদের শোষণকারী শক্তিটি বিতাড়িত বা বিনষ্ট হয়, অথবা তাহারা সাধারণের সহিত মিশিয়া সমান হইয় যায়। ইউরোপ এবং আমেরিকায় আমরা দেখিতে পাই যে, প্রাধান্তশালী ব্রাহ্মণ এবং প্রাধান্তশালী ক্ষত্রিয় উভয় শ্রেণীরই উচ্ছেদ সাধিত হইয়াছে অথবা তাহারা জনসাধারণের সহিত সমান হইতে চলিয়াছে। এখন কেবল দুইটি তীব্রভাবে বিভক্ত শ্রেণী রহিয়াছে। , এক দিকে প্রাধান্যশালী ধনিক-শ্রেণী এবং অন্য দিকে শ্রমিক-শ্রেণী এবং আজিকার সকল গুরুত্ববিশিষ্ট আন্দোলনেরই লক্ষ্য হইতেছে এই অবশিষ্ট প্রাধান্তের উচ্ছেদ সাধন করা। এই অবিচল প্রবৃত্তিতে ইউরোপ প্রকৃতির প্রগতির একটি মহান নীতি অনুসরণ করিয়াছে, সেইটি হইতেছে শেষ পৰ্য্যস্ত সমতার দিকে তাহার গতি । অবশু, পূর্ণ সমতা সম্ভব ন হইতে পারে, আর ইহাও ঠিক যে, পৃণ সমরূপতা ও “একাকার” অসম্ভবও বটে এবং আদেী বাঞ্ছনীয়ও নহে ; কিন্তু এমন একটা মূলগত সমতা যাহাতে বৈচিত্র্যের গেল। কোন অনর্থের স্তজন করিবে না —ইহা মানবজাতির প্রকৃত পূর্ণত্বের পক্ষে অবশু প্রয়োজনীয়। o অতএব প্রাধান্যশালী লঘিষ্ঠ সম্প্রদায়ের পক্ষে সৰ্ব্বো"ম, পরামর্শ হইতেছে, তাহীদের ক্ষমতা ত্যাগের যথাসময় উপস্থিত হইলেই অবিলম্বে তাহা স্বীকার করা