পাতা:প্রবাসী (সপ্তত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/৯০৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

b^లిపి প্রশাসন さNごリ দেওয়া হয়ে গিয়েছে ব’লে আমরা আর বদল করলাম না । # এদেশের টাকা পয়স যথেষ্ট যোগাড় করা ছিল না, সুতরাং সৰ্ব্বাগ্রে আবার যথারীতি যেতে হ’ল টমাস কুকের কাছে । তারা টাকা-পয়সা বদলে দিল এবং কত টাকায় কত দূর বেড়ানো যায় তারও একটা হিসাব বুঝিয়ে দিল । সে-হিসাবটা গরীব বাঙালীদের পকেটের পক্ষে খুব সস্ত নয়। সুতরাং আপাতত ব্যাঙ্ক থেকে বেরিয়ে চলুলাম স্বদেশী খাদ্য কোথাও পাওয়া যায় কি না তারই সন্ধানে । জাহাজে অখাদ্য খেয়ে খেয়ে প্রাণ প্রায় জিহবার কাছে এসে হাজির হয়েছিল, কাজেই আজ তাকে একটু আবাম দেওয়ার নিতান্তই প্রয়োজন ছিল । দেশে থাকৃতে শুনেছিলাম কোবে শহরে ইণ্ডিয়া লজ বলে একটা বাড়ীতে ভারতীয় ছাত্রেরা থাকে এবং তারতীয় খাদ্য খেতে পায় । সেইখানেই যাব মনে ক’বে আমরা পথে বেবলাম । হাট পথে মানুষের ভীড় নেই, কেবলই ট্যাক্সি, বস্ ট্রাম চলেছে, মাঝে মাঝে সাইকেলের পিছনে জিনিষ নিয়ে পিওন ছুটেছে, মোটর সাইকেল ও সাধারণ সাইকেলের পিছনে গাড়ী লাগিয়ে বোধ হয় ফিরিওয়ালা কিংবা দোকানের যোগানদারেরা চলেছে। সকলেই চুপচাপ, কোনও গোলমাল নেই। পথে কেউ ঝগড়া করছে না, জটলা করছে না, মারামারি গল্পগাছা কিছুই করছে না ; সবাই চলেছে নিজের নিজের কাজে । এরা যেন কথা বলতে জানে না, অথবা সবাই সবাইকার অপরিচিত। রাস্তাঘাট পরিষ্কার ঝকঝকে, পথের ধারে ধারে কোথাও টলে কোথাও মাটিতে গাছ বসান। পাইনজাতীয় গাছগুলি সবুজ, চেরিফুলের গাছে প্রাণের কোনই লক্ষণ নেই। তাতে না-আছে পাতা না-আছে ফুল, না-আছে কুঁড়ি । জাহাজের ডেকে দাড়িয়ে মনে করেছিলাম শীত তেমন বেশী বোধ হয় নয়, কিন্তু পথে বেরিয়ে দেখলাম এত পোষাক-জালাকের উপর কম্বল মুড়ি দিয়েও একটু - আলোয়াস্তি লাগছে। ওভারকোটের গলার লোমের কলারটা মাথার উপর বৈামুটার মৃত চাপ দিয়ে তবে বলা ज्वोच्नु । ” কোবের বড় রাস্ত গুলি কয়েকটা সমতল, কতকগুলি পাহাড় বেয়ে গড়িয়ে গড়িয়ে চলেছে ; সরু রাস্তাগুলি আরও উচু নীচু, ধেমন পাৰ্ব্বত্য দেশে হওয়ার কথা । এই রকম একটা সরু রাস্তায় কাঠের সরু সরু তক্তাব দেওয়াল-ঘেরা একটা বাড়ীতে ইণ্ডিয়া লজ মনে কবে আমরা এসে হাজির হলাম। দেখলাম সেটা “ইণ্ডিয়া” নয় “ইষ্টার্ণ-লজ” নামক একটি ভারতীয় হোটেল । তার কর্তা এক জন পাশী ভদ্রলোক, ইনি এক সময কলকাতাতেও ছিলেন। তিনি আমাদের খুব যত্ন-আদব ক'রে বসিয়ে এক ধারে আগুন আর এক ধাবে বৈদ্যুতিক হিটার জালিয়ে দিলেন, আমাদের তৎক্ষণাৎ চা এবং আমাক কন্যাকে দুধ আনিয়ে দিলেন এবং ভাবতীয বন্ধুদের টেলিফোনে আমাদের আগমন-সংবাদ দিলেন। র্তাব হোটেলের পরিচারিকাব৷ আমাদের জন্য জাপানী টিকিট কিনে চিঠিপত্র সব ডাকে দিয়ে দিল। হোটেলে যারা কাজ করছে তারা প্রায় সকলেই স্ত্রীলোক, এক জন মাত্র পুরুষকে একবার দেখলাম। এই মেয়েগুলি সব ভারতীয় মেয়েদের মত রুটি লুচি বেলে তেজে ডাল তরকারি বেধে আচার চাটনী ক’রে ভারতীযদেব খাওয়ায় । আমরা প্রায় এক মাস জাহাজের খাবাব খেয়ে এসেছি, কাজেই দিশী খাবার অর্ডার দিলাম। কিন্তু আপিস-ঘর ছেড়ে খাবার-ঘরে গিয়ে বসা যায় না, ঠিক ষ্টোভের পাশেই যদি বসা যায় তবেই আরাম, না হ’লে হাত পা যেন জমে আসে। শীতের চোটে মনে হচ্ছে এদেশে না এলেই হ’ত, একটা মাস এই রকম কবে কাটানো বড়ই শক্ত হবে। যাই হোক, উপায় যখন নেই সহ করতে হবে । দেখতে দেখতে সেখানে অনেকগুলি সিন্ধী, গুজরাটী ও হিন্দুস্থানী যুবক এসে হাজির হলেন। এরা সকলেই এখানে খাওয়া-দাওয়া করেন, অনেকে এই বাড়ীতেই থাকেন। এদের এদেশে বাস ব্যবসায় উপলক্ষ্যে, আমদামি আব রপ্তানির কাজেই এরা ব্যস্ত। দুঃখের বিষয়, এখানে এক জনও বাঙালী দেখলাম না। ধারা এদেশে সপরিবাবে থাকেন এমন অনেক সিন্ধী, গুজরাট, পাশা ও মুসলমান ভদ্রলোককে পরে দেখলাম, কিন্তু বাড়ী নিয়ে আছেন