পাতা:প্রবাসী (সপ্তত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/৯৩৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

চৈত্র হিলফুর জিজ্ঞাসা করিল-“সেখানে গিয়া কি লাভ r “তোমাকেসেখানে গিয়া বলিতে হইবে ষে, গুডমূও ষে কাজ করিয়াছে তাহা সত্বেও তুমি তাহারই এবং যে পৰ্য্যস্ত সে জেলখানায় থাকিবে, তত দিন তুমি বিশ্বাসের সহিত তাহার জন্য অপেক্ষা করিবে ।” “কিন্তু সে ত সম্ভব নয়। যে-লোক জেলখানায় যাইবে তাহাকে আমি বিবাহ করিতে চাই না ।” হেলগা চঞ্চল হইয়া উঠিল, কিন্তু একটু পরেই সে বুঝিতে পারিল, হিল দুরের মত সম্পন্ন ও ক্ষমতাশালী পরিবারের মেয়ে এই ভাবেই চিস্ত করিতে অভ্যস্ত । সে পরে বলিল—“গুডমুণ্ড নির্দোষ না জানিলে আমি তোমাকে নেরলুদায় লইয়া যাইবার জন্য কখনই আসিতাম না ।” এইবার হিলছর হেলগার দিকে কয়েক পা অগ্রসর হইয়া বলিল—“তুমি কি সত্যই তাহা জান—ন, এ শুধু তোমার মনের ধারণা ?” “এখন গাড়ীতে উঠিয়া যত শীঘ্র সম্ভব গেলেই ভাল হয়। তাহা হইলে পথে সমস্ত বলিতে পারিব।” . "না, আগে আমার জানা আবশ্বক, তুমি কি কৰিতে চাও ? আমি কি করিতেছি না-করিতেছি, তাই আমার জানা নিতান্ত প্রয়োজন ।” ঔংস্থক্যের আধিক্যে হেলগা একস্থানে স্থির হইয়া দাড়াইতে পারিতেছিল না ; তবুও হিলছরের কাছে সমস্ত বলা প্রয়োজন। গুডমুণ্ডের নির্দোষিতার কথা তাই সে বলিতে আরম্ভ করিল। “তুমি কি গুডমুণ্ডকে তখনই তাহ বল নাই ?” “না, হিল জ্বর, আমি তোমাকেই শুধু একথা বলিতেছি। এ-সম্বন্ধে আর কেহ কিছুই জানে না ।”. “কি জন্ত তুমি এই খবর লইয়া আমার কাছে আসিয়াছ ?” “তোমাদের মধ্যে সমস্ত গোলমাল মিটিয়া যাক এই, লইয়া আমি আসিয়াছি। শীঘ্ৰ গুডমুণ্ড শুনিবে: ষে সে দোষী নয়, কিন্তু আমার ইচ্ছা যে তুমি স্বেচ্ছায় তাহার নিকট গিয়াসমস্ত মিটাইয়া লও יין খসে ষে , সে খবর কি তাহাকে দিব না ?” “al, স্বেচ্ছায় তাহার নিকট যাইতেছে এইরূপ ভাবে ব্যবহার করিও । আমি যে তোমার সঙ্গে এই আলাপ করিয়াছি, ইহা তাহাকে ঘূণাক্ষরেও দিও না। নহিলে, তুমি আজ সকালে তাহাকে বলিয়াছ, লেজন্ত কোনদিনই তোমাকে সে ক্ষমা করিবে না ।” তরাইয়ের ভরুণী bజఆS হিলফুর নীরবে হেলগার.কথা শুনিতেছিল। এই ব্যাপারে এমন কিছু ছিল, যাহা সে জীবনে পূৰ্ব্বে কখনও অনুভব করে নাই। নিজের অমুভূতিকে সে পরিষ্কার করিয়া বুঝিয়া লইবার চেষ্টা করিতেছিল । “তুমি কি জান ষে আমি তোমাকে নেরলুদা হইতে সরাইয়াছি ?” “আমি জানি যে, নেরবুদার কর্তা-কত্ৰী দুজনেই আমাকে রাথিতে চাহিয়াছিলেন ।” “আমি বুঝিতে পারিতেছি না যে, আজ কেন তুমি আমাকে সাহায্য করিতে আসিয়াছ ?” “এখন ত আমার সঙ্গে চল, ব্যাপারটা ভাল ভাবে মিটিয়া স্বাক ৷” কিন্তু হিলছুর চিস্তান্বিত হইয়া হেল্গাকে দেখিতেছিল, সে প্রশ্ন করিল—“গুডমুণ্ড হয়ত তোমাকে ভালবাসে ?” হেলগার ধৈর্য্য শেষ সীমায় উপনীত হইয়াছে। সে তিক্ত মুরে উত্তর করিল—“আমাকে বিবাহ করিয়া তাহার কি লাভ হইবে ? তুমি ত তাল করিয়াই জান যে, আমি গরীব-ঘরের এক জন মেয়ে বই কিছুই নই এবং শুধু সে-কথা বলিলে আমার সম্বন্ধে সব কথা বলা হয় না।” দুই তরুণী গোপনে অপরের অলক্ষ্যে বাড়ী হইতে বাহির হইয়া গাড়ীতে চড়িয়া বসিল । হেলগা এত দ্রুত গাড়ী চালাইল যে অল্প সময়ের মধ্যেই তাহারা অনেকটা পথ আসিয়া পড়িল । কাহারও মুখে কথা নাই। হিলছর নীরবে হেলগাকে দেখিতেছিল—পরম বিশ্বয়ে হেলগার কথাই বেশী করিয়া ভাবিতেছিল । নেরলুদার কাছে আসিয়া হেলগা ঘোড়ার লাগাম হিলছরের হাতে দিল । “এখন গুডমুণ্ডের সঙ্গে দেখা করিতে তুমি একাই যাও । আমি ছুরি সম্বন্ধে যাহা জানি, তাহা বলিবার জন্য পরে আসিব । কিন্তু তোমার কথায় গুডমুণ্ড যেন বুঝিতে না পারে যে, আমিই তোমাকে - লইয়া আসিয়াছি।” নেরবুদায় বড় ঘরে গুডমুণ্ড তাহার মায়ের কাছে বসিয়া আলাপ করিতেছিল। তাহার বাবা কিছু দূরে এক চেয়ারে বসিয়ু আপন মনে তামাক খাইতেছিলেন। যদিও তিনি কোন কথায় যোগ দেন নাই, তবু তাহাকে বেশ সন্তুষ্ট দেখাইতেছিল—অর্থাৎ সবই ঠিকঠাক চলিতেছে, কোন কথাবার্তায় যোগ দিবার প্রয়োজন নাই । গুডমূও বলিতেছিল—“ম, তুমি কি বলিবে আমার জানিতে ইচ্ছা করে, যদি হেলগাকে বৌ করিয়া ঘরে