পাতা:প্রবাসী (সপ্তত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৩৫০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

రిసై8 মোহিনী মাকে জিজ্ঞাস করিলেন, “লতির এখনও বিয়ে দাও নি কেন গা ? মস্ত ডাগর মেয়ে হয়েছে যে ? আমার শ্বশুরের গুষ্ঠার কোনো মেয়ে ত ন’ পেরিয়ে দশে পা দিতে পায় নি। কৰ্ত্তা বলতেন, সময় মত মেয়ের বিয়ে না দিলে নিমিত্তের ভাগী হতে হয়।” মা বলিলেন, “নিমিত্তের ভাগী হ’লেই বা করছি কি ? তোকে দুঃখের কথা বলব কি মা, ভিটেটুকু যুদ্ধ, বাধা পড়েছে বড় দুই আবাগীকে পার করতে। আমার হীরের টুকরো নিতু বুঝি এবার পথে বসে। এখনও ত এ রাক্সী পাকি।” গলা নামাইয়া বলিলেন, “শত্তরের মুখে ছাই দিয়ে এটা ত পনর পূরতে চলল, যতই লুকোই ছাপাই লোকে বিশ্বাস করবে কেন ? তাদেরও ত চোখ আছে ?” মোহিনী গালে তাত দিয়া বলিলেন, “ওম, কোথাৎ যাব গে। শীগগির একে পীর কব, কখন বুঝি বা কি অনখ হয় ।” - মা বলিলেন, “পাত্তর কোথা ? বিনে পয়সায় ত বুড়েহাবড় দোজবরেও ঘরে নিতে চায় না ।" মোহিনী খানিক ভাবিয়া বলিলেন, “ছেলে একটি আছে, তা কি আর তোমাদের পছন্দ হবে ? টাকার থাইও তাদের বড় নেই, আমি ধরাধরি করলে বিনা পণেই হয়ে যেতে পারে ।” ম! বলিলেন, “বলে ও ক্যাংলা ভাত খাবি, না হাত ধোব কোথায় ? তুষ্ট নাম ঠিকানা দে দেখি, কেমন না ওর মেয়ের বিয়ে দ্যায় তাই আমি দেখব । টাকা নেই যার, তার আবার পছন্দ অপছন্দ কি ? কোনমতে মেয়ে উচ্ছুণ্ড্য হয়ে গেলে হয় ।” মোহিনী ঠিকানা দিলেন। ছেলে দর সম্পর্কে তাহার ভাগিনেয় হয় । আই-এ পাস, চাকরি-বাকরি করে না । দেশে জমিজমা বাড়ীঘর সব আছে, তাহাক্ট দেখাশুনা করে। বাবা মা নাই, দুটি ছোট ছোট ভাই আছে ও রুগ্ন জ্যেঠামহাশয় আছেন। সংসার গৃহিণী-অভাবে অচল, তাই তাহারা বড়সড় মেয়ে খুজিতেছে। পছন্দমত মেয়ে হইলে তাহারা পণ চায় না। তবে গহনাগাটি দু-একথানা, বরাভরণ, বাসন-কোসন এসব চাহিবে বই কি ? এ না হইলে কি বিবাহ হয় ? প্রবাসী ১৩৪৪ মালতীর মা বলিলেন, “তাই বা আমি কোথা থেকে দিচ্ছি ?” শাশুড়ী ননদ একবাক্যে বলিয়া উঠিলেন, “তা বললে চলবে কেন ? তিন-তিনটে মেয়ে গর্ভে ধরেছ যখন, তখন মাথার চুল বাধা দিয়েও টাকা আনতে হবে।” পাত্রপক্ষের সঙ্গে কথাবার্তা চল্লিতে লাগিল । গ্রামসম্পর্কে এক খুড়াকে সঙ্গে লইয়া পাত্র একদিন স্বয়ং আসিয়া মেয়েকে দেখিয়া গেল । পাড়াগায়ে এ বট অমানান হষ্টবে না । কাজকৰ্ম্ম৪ শিথিয়াছে । গরীবের ঘরের মেয়ে, নিজের অবস্থায় সন্তুষ্ট থাকিবে । পূৰ্ণ তাহারা চায় না, তবে মেয়েকে থান-তিনেক গঠন দিতে হইবে, বরকেও আংটি ৪ রিটওয়াচ দিতে তাহার পছনষ্ট হইল । বড়সড় আছে, হঠrব । পিসীম! আবার বরের দিকেরও সম্পকিত, তিনি বলিলেন, “কিছু অন্যায্য বলছে না বাপু । কাজ নাইবা করল, খেতে পরতে দিতে ত পারবে ?" বড় জলিীয় মালতীর মায়ের কথা ফুটিল, তিনি বলিলেন, “কিছু লুকিয়ে ছাপিয়ে রাখিনি ঠাকুরঝি, তুমি বরং বাকী ডেক্স খুলে দেখ । কোথাও এক কুচি সোনা কি রূপে নেই । মা লাড়ী বেচবাব নামে আত্মঘাতী হ’তে চান, এগল তোমরাই পাঁচ জনে বল কোথা থেকে আমি গহন দিষ্ট আর বরাভরণ দিই ? যেমন ক’রে হোক হাজার টীক। বাব না করলে, এসব হচ্ছে কি ক’রে ? আত্মীয় কুটুম সব আসবে, তাদের পাতেও দুমুঠো দিতে হবে । মেয়েকেও খানকয়েক কাপড় জামা ক’রে না দিলে সে গিয়ে শ্বশুরবাড়ী দাড়ায় কি ক’রে ?” মোহিনী অনেকক্ষণ চুপ করিয়া ভাবিলেন। গহনাগাটি তাহার আছে অনেকগুলাই, কিন্তু পরার দিন আর নাই । পুত্রবধুর উপর তিনি বিন্দুমাত্রও সন্তুষ্ট নন, তাহার দেমাক বড় বেশী। তাহাঁকে এসব দিয়া যাওয়ার চিস্ত তিনি স্বপ্নেও করেন না। তবে নাতি নাতনী একটি একটি করিয়া ঘরে আসিতেছে, তাহারা প্রত্যাশা করিবে ত ? আর বুড়া বয়সে নিজের বলিতে এই ক’থানাই ত, আর কিসে বা তাহার অধিকার ? কাজেই সব বেহাত করা চলে না। তবু ভাইঝিটার বিবাহ না দিলেই নয়, উহার দিকে যে আর চাওয়া যায় না ? তাহীদের দিনের গহনা ছিল সব