পাতা:প্রবাসী (সপ্তবিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/২০১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

* سيسراخ" এবং অপরটি সেতার বাজাইতেছিলেন। আমি বসিয়া শুনিতে লাগিলাম। রামদাস-বাবু নীচে আসিয়া আমার স্বরবোধ আছে কি না জানিবার নিমিত্ত কণ্ঠে সরগম বাহির করিতে বলিলেন। আমার বঁাশী বাজান পূৰ্ব্বে অভ্যাস ছিল এবং গানও অল্প অল্প করিতে পারিতাম বলিয়া স্বর বাহির করা কঠিন হইল না। যে দুইটি গান দুইজন শিক্ষা করিতে আরম্ভ করিয়াছিলেন, রামদাস-বাবু সে দুইটি আমাকেও শিখাইতে আরম্ভ করিয়া দিলেন । প্রথম গানটি কোকব বেলাবল, “শুভ সগন শুভ লগন ছত্র ধরাউ, আজ মিলি পণ্ডিত লগন ধরাউ”; দ্বিতীয় গানটি সিন্ধু, "কঠিন দুখ পায়ে মোহন প্যারে তেহারে দরশন বিন ঘড়ি পল ছন দিন রয়ন পড়ত নহি চয়ন ।” গোস্বামী মহাশয়ের সঙ্গে সঙ্গে আমি গান দুইটি তিন চারি বার গাহিলাম ; পরে আমি একলাই দুইটি আস্থায়ী গান করিলাম। সেদিন প্রাতঃকালে প্রায় দুই ঘণ্ট। কাল কাটিয়া গেল ; রামদাস-বাবু আমাকে পুনরায় বৈকালে আসিতে বলিলেন, আমি যথাসময়ে উপস্থিত হইলাম; গোস্বামী মহাশয় সে-সময়ে পাশ খেলিতেছিলেন, আমাকে দেখিয়া খেলিতে-খেলিতে গান দুইটির অন্তর শিথাইতে লাগিলেন । আমি তাহার সঙ্গে-সঙ্গেই গান করিতে লাগিলাম, পাচ সাত বার গান করিবার পর আমি একলাই গান করিলাম। দুই একস্থানে ভুল হইল, কিন্তু তিনি সেগুলি সংশোধন করিয়া দিলেন। গুরুদেব তাম্বুরার সহিত গান করিতে বলিলেন। তাম্বুবা ধরিতেই পারি না, স্বর কেমন করিয়া ছান্ডিতে হয় জানি না, গান করা কঠিন বোধ হইতে লাগিল। প্রায় সপ্তাহ কাল পরে তাম্বুরার স্বর ছাড়িতে পারিলাম এবং ঐ দুইখানি গান দুই তুকের বলিয়া এই কয় দিনে আদায় হইয়াছিল, তাহাও তাম্বুরার সহিত গান করিতে পারিলাম। তাল বড় ভাল হইল না, তালের জন্য তিনি বলিলেন, পরে হইবে । পরদিন হইতে আমার গান শিক্ষা আরম্ভ হইল, গুরুদেবের আদেশ হইল প্রাতে দুই ঘণ্টা, অপরাহ্লে দুই ঘণ্ট এবং রাত্রে দুই ঘণ্ট। শিক্ষা করিতে হইবে, প্রাতে প্রবাসী - জ্যৈষ্ঠ, ১৩৩৪ [ ২৭শ ভাগ, ১ম খণ্ড সুরসাধনা অর্থাৎ মন্ত্ৰ-সপ্তক-সাধন এবং অন্ত সময়ে গান শিক্ষা এই বন্দোবস্ত হইল। আমি তদনুযায়ী শিক্ষণ ও সাধনা করিতে লাগিলাম, মাস দুই মধ্যে চারি পাচখান আদায় হইল, কিন্তু সেগুলি সাধনাভাবে পরিষ্কার (অর্থাৎ ‘সুরিলি’) হইল না । ক্রমে ক্রমে সময়ে বাড়াইতে হইল এবং তfহার আদেশ মত এক-একখানি গান একশত বার করিয়া সাধন করিতে লাগিলাম। মুসলমান ওস্তাদের এক-একটি গান .পাচ শত বার, এবং কোন কোন গান এক সহস্ৰ বার গান করিয়া তৈয়ার করিয়া রাখে । এই নিমিত্তই উহাদের গান মিষ্ট, এক্ষণে আর এ-প্রথা নাই । আমাদেরও গানের পঙ্গি যেমন যেমন বৃদ্ধি পাইতে লাগিল, সাধনার কালও অল্প হইতে লাগিল । এইরূপে এক বৎসর কাটিয়া গেল, যেখানে গোস্বামী মহাশয় গান করিতেন সেখানে আমাকেও লইয়। যাইতেন এবং সঙ্গে গাওয়াইতেন। যে গান আমাকে শিথাইতেন সেই গান গাহিতেন এবং আমাকে কখনও একলা গাওয়াইতেন, কখন কথন সঙ্গে গান করিতে বলিতেন । এই সময়ে শ্রীরামপুর হইতে নিমাইচরণ ঘোষাল নামে একজন ( আমারই সমবয়স্ক ) গান শিথিবীর নিমিত্ত গুরুদেবের নিকট উপস্থিত হুইল । আমাদেরও শিক্ষার পক্ষে বড়ই সুবিধা হইল, একসঙ্গেই আমরা গুরুদেবের নিকট থাকিতাম এবং শিক্ষা ও সাধনা উত্তমরূপেই হইতে লাগিল । তিন বৎসর এইরূপ কঠোর পরিশ্রমের পর গুরুদেব আমাদিগকে ঐaামপুরে লইয়া যান এবং আমাদের গান শুনাইবার নিমিত্ত নিকটস্থ গুণীfদগকে আহবান করেন। তখন প্রাচীন গুণী ও গায়কমণ্ডলীর মধ্যে গোপাল চক্রবর্তী ( মুলো গোপাল ), মহেশচন্দ্র মুখোপাধ্যায়, মধু বাড়ুৰ্য্যে এবং আরও দুই-চারিটি শ্রীরামপুরে মধ্যে মধ্যে আসিতেন। আমরা একমাস সেথানে ছিলাম ; প্রত্যহই সকালে, বৈকালে ও রাত্রিতে ধ্রুপদ গান হইত। কাশী ফিরিবার সময় বিষ্ণুপুর, কাশীপুর, হেতমপুর প্রভৃতি রাজস্থান এবং গুণীদিগের গান বাঞ্জনা দেখিবার শুনিবার ইচ্ছ। আমরা গুরুদেবকে জানাই এবং তদনুযায়ী তিনি তৎ তৎ স্থানে পত্র লিথিয়া জানাষ্টলেন । আমরা