পাতা:প্রবাসী (সপ্তবিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৩৮৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩য় সংখ্যা দুই বার রাজা ৩৭১ শ্বেত পাথরের মেঝে,-দুটো দেয়াল প্রায় বইয়ে --ছবি খান তিন চার, সেক্সপীয়র, শেলি আর বার্ণার্ড শ’র। একটা চেয়ারের ওপর বই গাদ করা,—মেঝেতে কাং হ'য়ে শুয়ে সরোজ, একৃজামিনের পড়া পড়ছে। আর ঘরের এক কোণে ষ্ট্রোভ জালিয়ে তার বোন চায়ের জল গরম করছে আর দাদাকে বকুছে সিগারেট খায় ব'লে। অমরকে ঘরে ঢুকতে দেখে মেয়েটি আরো খানিকটা জল কেট্‌লিতে ঢেলে দিয়ে বল্লে—যাই বল দাদা, বোহিমিয়াট। আর যাই হোক আমাদের বহরমপুরের মতোই খানিকট। নইলে— সরোজ উঠে পড়ে বল্পে—এস, অমর বসে।”.....তুই লক্ষ্মী দিদি, পরেট ভেজে দিবি আমাদের ঐ দেখ না চট ক’রে— বোন চলে গেলে সরোজ তাড়াতাড়ি দরজার পর্দাটা টেনে দিয়ে শুধোল—এমনিই কি এসেছ, ন৷ কোনো কাজ আছে ? অমর সোজা হ’য়ে বল্লে-আমাকে কয়েকটা টাকা জাও,– এই গোট কুড়ি । সরোজ হাতের বইটা ছুড়ে ফেলে দিয়ে চেচিয়ে উঠগ-লুসাই, লুসাই, ও লুণী । বোন দু’হাতে ময়দার ড্যালাটা নিয়ে এসে পর্দার ফাকে চোখ রেখে বল্লে-কি হুকুম মশাইয়ের । সরোজ বল্পে-চাবিটা দিয়ে দেরাজ থেকে কুড়িটে টাকা বার ক’রে দে ত শিগগির । - ঘরে ঢুকে ময়দ চটুকাতে-চটুকাতে লুসী বল্লে— কিসের জন্যে শুনি ? —উড়োতে । তুই দে খুলে। ফফরদাঙ্গালি করিস নে । দেরাজ খুলতে খুলতে লুণী বল্পে-দাড়াও না। দিচ্ছি এবার । ঠিক মতো হিসাব দিতে না পারলে রাত্রে ঘুম থেকে উঠে কে চা করে দেয়, দেখব। ব’লে চলে গেল। পৰ্গাট খানিক স্থলে স্থির ೩'ಕ್ಲ ! টাকা দিয়ে সরোজ বল্পে— যদি আবার বিপদে পড় বলতে সঙ্কোচ ক’র না।— চা থেতে-খেতে অমর ভাবছিল সংসারে এ একটা কি চমৎকার ব্যাপার ? উজ্জল স্বাস্থ্য,—স্বচ্ছল অবস্থা,— কল্যাণী বোন্‌! নাম তার লুসী ! পেছন থেকে কে অতি কুষ্ঠিত কণ্ঠে বলছিল—একটা নতুন কাগজ বেরিয়েছে, যদি নেন সরোজ মুখ ফিরিয়ে দেখলে—অমর। খালি প, ধে স্বাকৃড়া দিয়ে কালি-পড়া লণ্ঠন মোছে তেমনি কাপড় পরনে,—ইাপানির টানে ঝবুঝরে পজির দুটো ঝোঁকে উঠছে,-কথা কইতে পারছে না। সরোজ তক্ষুনিই কাগজটা নিয়ে দাম দিল, কথা কইল না কোনো। বরঞ্চ ভারি লঙ্গ করতে লাগল ওয়ই। ট্রাম চলল। চলন্ত গাড়ি থেকে নামৃতে গিয়ে আমর পা পিছলে প’ড়ে যেতেই সবাই রোল ক’রে উঠল। হাটুটা চেপে ধ’রে কিছু-না ধলে’ অমর কাগজের বাণ্ডিলটা নিরে কাশতে লাগল। পরে ভিড়ের মধ্যে কোথায় উধাও হ’য়ে গেল । সরোজ নেমে আর খোজ পেলে না তার | ফুসফুট যেন কে চুষে শুষে ফেলেছে। অমর একটা গাছতলায় দুটো হাত মাটিতে চেপে টান হ’য়ে ব’সে আকাশের বাতাস নেবার জন্যে গলাট উচু ক’রে ধরেছে। কে যেন ওর টুটিটা টিপছে, ভিজ গামছার মতো ফুসফুট। চিপে ফেলছে। কাগজের বাগুিলটার ওপর মাথা রেখে শুতে যেতে দেখে-পাশাপাশি দুটা বিজ্ঞাপন। একটা এক ছাত্র পড়াবার জন্তে, আরেকটা কোন অরক্ষণীয়া পাত্রীর জন্ম পাত্র চাই। যেমন-কে-তেমন হ’লেই চলে—ঠিক এই কথা লেখা আছে । টানটা যদি একটু পড়ে বিকেলের দিকে,-আমর তাবছিল,—তবে কোথায় গিয়ে আগে আবুজি পেশ করবে ? টিউশানির খোজে, না পাঞ্জীর ? আগে ভাবত—এক মুটো ভাত একখানি কুঁড়ে ঘর, আর-একটি নারী । এখন মনে পড়ছে আরোও কত কথা। ইপিানিতে ভুগবে না, বড়ে কুঁড়ের চাল উড়ে যাবে না, ভাতে রোগের বীজ থাকৃবে না, নারীর ঠোটে কালকূট থাকৃবে না। এত ! তবে -