পাতা:প্রবাসী (সপ্তবিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৪৫৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

প্রবর্তক সংঘ কর্তৃক রবীন্দ্রনাথের সম্বৰ্দ্ধন৷ প্ৰবৰ্ত্তক সংঘ কর্তৃক রবীন্দ্রনাথের সম্বৰ্দ্ধন বিষয়ে আমরা জ্যৈষ্ঠের প্রবাসীতে যাহা লিখিয়াছিলাম, তাহ একখানি লব্ধপ্রতিষ্ঠ ইংরেজী দৈনিকের মন্তব্য পড়িয়া লিখিত হইয়াছিল । প্রবর্তক সংঘ রবীন্দ্রনাথের উদ্দেশে যে অভিনন্দনপত্র পাঠ করিয়াছিলেন, তাহা আমরা তখন পাই নাই, দেখি নাই ; উহা আমাদের নিকট পরে আসিয়াছে । উহ! পড়িয়া বুঝিলাম, যে, প্রবর্তৃক সংঘ, প্রথমে অরবিন্দ তাহাঁদের আশ্রমে আসিয়াছিলেন, তাহার পর গান্ধী, এবং তাহার পর রবীন্দ্রনাথ আলিয়াছেন, ইহাই বলিয়াছিলেন ; ইহঁদের শ্রেষ্ঠতার ক্রম নির্দেশ করা তাহদের উদেশ্ব ছিল না, তাহা তাহার করেন নাই । আমরা আমাদের ভ্রমের জন্ত দুঃখিত। ইংরেজী দৈনিকাটতে যেরূপ মন্তব্য বাহির হইয়াছিল, তাহার কারণ ঠিক বলিতে পারি না। কিন্তু আমাদের মনে হয়, অভিনন্দনপত্রটির ভাষা এরূপ, যে, উহা কাহাকেও পড়িতে শুনিলে, স্বয়ং না পড়িলে, উহার অর্থ সম্বন্ধে ভ্ৰম হইবার সম্ভাবনা । নির্বাচনাদি সম্বন্ধে কংগ্রেস কমিটির নিৰ্দ্ধারণ গত মে মাসের মাঝামাঝি বোম্বাইয়ে নিখিল ভারত ংগ্রেস কমিটি ব্যবস্থাপক সভার জন্তঃপ্রতিনিধি নিৰ্ব্বাচনের বর্তমান রীতি এবং অন্যান্য কয়েকটি বিষর সম্বন্ধে আলোচনা করিয়া কয়েকটি সিদ্ধাস্তে উপনীত হন। কংগ্রেস কমিটির এই সব নিৰ্দ্ধারণ সম্বন্ধে খবরের কাগজে জনেক লেখালেখি হইয়া গিয়াছে। আমাদিগকেও কিছু লিপিক্ষে হইবে। বর্তমান সময়ে, কেবলমাত্র জাপান ব্যতীত, পৃথিবীতে আর যত শক্তিশালী দেশ বা রাষ্ট্র আছে, তাহার সবগুলিই ইউরোপে অবস্থিত, কিংবা ইউরোপীয় লোকদের দ্বারা অধূষিত। এই পাশ্চাত্য শক্তিশালী দেশগুলি কি প্রকারে শক্তিশালী হইয়াছে ? এই সব দেশের সব লোকের ধৰ্ম্মমত এক নহে, শ্রেণীগত সংকীর্ণ স্বার্থও এক নহে। সত্য বটে, পাশ্চাত্য সব দেশই খৃষ্টিয়ান দেশ বলিয়া পরিচিত, কিন্তু খৃষ্টিয়ানদের মধ্যেও ক্যাথলিক আছে এবং নান শাখায় বিভক্ত প্রটেষ্টাণ্ট অাছে। সকলের সাধারণ নাম খৃষ্টিয়ান হইলেও, ধৰ্ম্মমতের বিভিন্নতার জন্য পুড়াইয়া মারা বা অন্য প্রকারে প্রাণবধ করার হাজার হাজার দুষ্টাত্ত আছে। তা ছাড়া, ভারতবর্ষে হিন্দুমুসলমানদের দাঙ্গ মারামারির মত “ধৰ্ম্ম” হইতে উৎপন্ন দাঙ্গ মারামারি পাশ্চাত্য দেশসকলে আগে ত খুবই হইত, এখনও অল্পস্বল্প হইয়া থাকে। ধৰ্ম্মমতের পার্থক্য ছাড়া অন্য রকমের মতভেদ এবং স্বার্থের পার্থক্যও পাশ্চাত্য দেশসকলে আছে । ধনী কারখানার মালিক এবং কারখানার শ্রমজীবী মজুরদের মধ্যে সদ্ভাব নাই। তাহার জন্য দাঙ্ক মারামারিও কথন কখন হয় । আয়াল্যাণ্ডের মত দেশে ভূস্বামী ও কৃষকদের মধ্যে স্বার্থের বিরোধ বশতঃ খুব মনোমালিন্ত ছিল, এবং তাহা অনেক সময় সাংঘাতিক আকার ধারণ করিত। আয়াল্যাণ্ডে গবষ্মেন্ট কর্তৃক ভূস্বামীদের সমুদয় স্বত্ব ক্রীত হইয়া কৃষকদিগের হস্তে অর্পিত হওয়ায় এই বিবাদের নিম্পত্তি হইয়াছে, কিন্তু সকল পাশ্চাত্য দেশে এখনও তাই হয় নাই । পাশ্চাত্য দেশসকলে ধৰ্ম্মমত ও অন্যান্য নানা বিষয়ে মতভেদ ও স্বার্থভেদ থাকা সত্ত্বেও তাহারা সকলেই স্বাধীন, এবং অনেকগুলি দেশ খুব শক্তিশালীও হইয়াছে। তাহার অন্যান্য কারণের মধ্যে একটি প্রধান কারণ এই, যে, যে সকল বিষয়ে দেশের সকল লোকের স্বাধ এষ্ণ, তাহ