পাতা:প্রবাসী (সপ্তবিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৪৬৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

88bー প্রবাসী—আষাঢ়, ১৩৩৪ [ ২৭শ ভাগ, ১ম খণ্ড । গঠিত হইলেও হিন্দুভূরিষ্ঠ প্রদেশের সংখ্যা মুসলমানভূয়িষ্ঠ প্রদেশের সংখ্যা অপেক্ষ বেশী থাকিবে । হিন্দুভূমিষ্ঠ থাকিবে ছয়টি ; যথা—মাম্রাজ, বোম্বাই, মধ্যপ্রদেশ ও বেরার, আগ্র-অযোধ্যা, বিহার-ওড়িষা, ও আসাম । মুসলমানভূধিষ্ঠ প্রদেশ হইবে পাঁচটি ; যথা—বাংলা, পঞ্জাব, সিন্ধু, বালুচীস্থান, উত্তরপশ্চিমসীমান্ত প্রদেশ । কংগ্রেস কমিটির দ্বারা গৃহীত প্রস্তাবে আছে, যে,সিন্ধুর ভাষা আলাদা বলিয়া সিন্ধুকে আলাদা প্রদেশ করা হউক, এবং সেই কারণে অন্ধদেশ ও কর্ণাটককেও আলাদা প্রদেশ করা হউক। তাহা হইলে হিন্দুভূমিষ্ঠ প্রদেশ হইবে আটটি। উৎকল, অদ্ভদেশ ও কর্ণাটক অপেক্ষা আগে হইতে স্বতন্ত্র গবর্ণর ও ব্যবস্থাপক সভার দাবী করিয়া আসিতেছে, এবং চারিট প্রদেশে ছড়াইয়া থাকায় উৎকলীয়দের অস্থবিধাও বেশী। সুতরাং স্কায়াকুসারে উৎকলকেও আলাদা প্রদেশ বানাইতে হইবে। তাহা হইলে হিন্দুভূমিষ্ঠ প্রদেশ হইবে নয়টি। তাহার পর যদি গুজরাতী, মরাঠী, তমিল, মলয়ালম, প্রভৃতি ভাবাভাষীরা নিজেদের এক একটা প্রদেশ চায়, তাহা হইলে এইগুলা সবই হিস্কৃভূমিষ্ঠ প্রদেশ হইবে। স্থতরাং ভারতবর্ষে যতগুলা হিন্দুভূমিষ্ঠ প্রদেশ, মুসলমানভূমিষ্ঠ প্রদেশও ততগুল চাই, এই আকাঙ্ক্ষা পূর্ণ হইবার আপাতত: কোন সম্ভাবনা নাই। তবে যদি কালক্রমে প্রত্যেক প্রদেশে, অন্ততঃ অধিকাংশ প্রদেশে, হিন্দু অপেক্ষ মুসলমানের সংখ্যা বাড়িয়া যায়, তখন কাহারও চালবাজি ব্যতিরেকেও মুসলমানভূমিষ্ঠ প্রদেশই বেশী হইবে। মুসলমানরা নিজেদের ধৰ্ম্ম প্রচার করুন, অন্ত ধৰ্ম্মের সমালোচনাও করুন ; তাহাতে কোন আপত্তি নাই। কিন্তু বলপ্রয়োগ, ছেলে চুরি বা নারীর উপর অত্যাচার কিম্বা অন্তবিধ অবৈধ উপায়ে দল বাড়াইবার চেষ্ট যেন কোন মুসলমান না কয়েন। এই উপায়গুলা গৰ্হিত ও জঘন্ত ; ইহাতে মুসলমান সমাজের প্রকৃত কোন লাভ হয় না। কেহ যেন মনে না করেন, আমরা কতকগুলা কাল্পনিক দোষের উল্লেখ করিয়া মুসলমানদের নিন্দ করিতেছি। আমরা জানি পূৰ্ব্বে পূৰ্ব্বে অনেক ধাৰ্ম্মিক মুসলমানের চরিত্র ও সৎকার্য্যের প্রভাবে, এবং মুসলমানসমাজে অনেকটা সামাঙ্গিক সাম্য থাকায় মুসলমান ধর্মের বিস্তার হইয়াছে। কিন্তু বলপ্রয়োগাদি দ্বারা এবং বিজিত জাতির নারীদিগকে বাজেয়াপ্ত করিয়াও যে মুসলমানের সংখ্যা বাড়ান হইয়াছে৯ তাহারও প্রমাণ ইতিহাসে আছে । সেরূপ প্রমাণ দিতে প্রস্তুত আছি । প্রস্তাবিত নূতন প্রদেশগুলির লোকসংখ্যা, ভাষা ও আয় বালুচীস্থানকে একটি গবর্ণরশাসিত ব্যবস্থাপকসভাসমম্বিত প্রদেশ করিবার প্রস্তাবে কংগ্রেস কমিটি সন্মতি দিয়াছেন । কি মু্যায্য কারণে সম্মতি দেওয়া হইয়াছে, বুঝিলাম না । কংগ্রেস ভাষার ভিত্তি অনুসারে ভারতবর্ধকে নূতন করিয়া ভিন্ন ভিন্ন প্রদেশ বিভক্ত করিতে রাজী । তদনুসারে কংগ্রেস কমিটি সিন্ধু, অন্ধু ও কর্ণাটকের আলাদা আলাদা গবর্ণরশাসিত প্রদেশ হওয়ায় সম্মত। কিন্তু ব্রিটিশশাসিত বালুচীস্থানে প্রচলিত প্রধান ভাষাগুলির মধ্যে পব তো ভাষাই সকলের চেয়ে বেশী লোকে বলে, এবং তাহার প্রায় একতৃতীয়াংশ অন্ত লোক বালোচী ভাষায় কথা বলে। অতএব ভাষার ভিত্তি অনুসারে প্রদেশ পুনর্গঠন করিতে গেলে বালুচীস্থানকে উত্তর-পশ্চিমসীমান্ত প্রদেশের সামিল করাই উচিত। কারণ, শেষোক্ত প্রদেশেরও প্রধান ভাষা পয়াতে । ব্রিটিশশাসিত বালুচীস্থানকে যাহার একটি গবর্ণরশাসিত প্রদেশ করিবার প্রস্তাব উত্থাপন করিয়াছেন এবং যাহারা তাহাতে সায় দিয়াছেন, কোন পক্ষই উহার লোকংখ্যার বিষয় অবগত আছেন মনে হয় না। উহার লোকসংখ্যা কেবল মাত্র ৪,২৩,৬৪৮। অর্থাং উহাতে কলিকাতার পাচ আনা রকম লোক বাস করে, এবং দার্জিলিং ও চট্টগ্রাম পাৰ্ব্বত্য অঞ্চল ছাড়া বাংলার ছোট ও বড় প্রত্যেকটি জেলার লোকসংখ্যা উহার অনেকগু৭ বেশী। জিজ্ঞাসা করি, যদি ব্রিটিশ বালুচীস্থানের জন্ত একজন আলাদা গবর্ণর ও একটা আলাদা ব্যবস্থাপক সভ} চাই, তাহা হইলে মৈমনসিং জেলা কি দোষ কৰিল ? উহার লোকসংখ্যা ৪৮,৩৭,৭৩১, ব্রিটিশ বালুচীস্থানের যার গুণ। ব্রিটিশ বালুচীস্থানের লোকের কি এতই ধনী,