পাতা:প্রবাসী (সপ্তবিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৬৮৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

○Qや প্রবাসী-ভাদ্র, ১৩৩৪ [ २१* छांनं, *श थस হইলে এই পরীক্ষা দিবার নিয়ম ছিল না । মভেম্বর মাসের প্রথম দিকেই পরীক্ষা হইত। শারদীয় পুঙ্গার পূৰ্ব্বেই পরীক্ষার্থীর আবেদন ও ফিস্ পাঠাইতে হইত। ঐ সময় আমার বয়স ১৬ পূর্ণ হয় নাই বলিয়া আমাকে সে বৎসর হেডমাষ্টার মহাশয় পরীক্ষ। দিতে দিলেন না। তবে আসল কথাটা ছিল, আমি পরীক্ষা পাশ করিতে পারিব বলিয়া তাহার বিশ্বাস জন্মে নাই। এইজন্য ভাল পড়াশুনা করিয়া ভালরূপেই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হইতে পারিব এই আশায় আর-এক বছর আমাকে স্কুলে রাখিয়া দিলেন । র্তাহার সে আশা পূর্ণ হয় নাই। এ বর ও স্কুলের পড়াতে আমি বেশী মন দেই নাই । তবে এই বৎসরে আমি সংবাদপত্রে একটু-আধটু লিখিতে আরম্ভ করি। তখনও শ্রীহট্টে ছাপাখানা হয় নাই । স্থানীয় কোন সংবাদপত্র ছিল না। ঢাকায় । দুখানি বাংলা সাপ্তাহিক ছিল—“ঢাকা প্রকাশ” ও “হিন্দুঃিতৈষিণী” । তখন পূর্ববঙ্গের আর কোথাও কোন সংবাদপত্রের প্রতিষ্ঠা হইয়াছে কি না সন্দেহ । আমি ১৮৭৪ ইংরাজীতে ঢাকা প্রকাশ এবং হিন্দু-হিতৈবিণীতে দুই একটি লেখা পাঠাইয়াছিলাম। একটি কবিতা ; হাইকোর্টের জজ অমুকুলচন্দ্র মুখোপাধ্যায় মহাশয়ের পরলোক গমন উপলক্ষে লিখিত ; হিন্দু হিতৈর্ষিণীতে প্রকাশিত হইয়াছিল । ঢাকা প্রকাশেও দুষ্টএকট। গদ্য লেখা প্রকাশিত হয়। এগুলি আদৌ উল্লেখযোগ্য নয়। কবিতাটি পয়ার মাত্র ছিল । বড় হইয় অবধি আমি অনেক সময় কহিয়াছি যে, ১৮ বৎসরের পূৰ্ব্বে যে কবিতা লেখে না সে মানুষ নয় । ১৮ বছরের পরে যে কবিতা লেখে সে হয় পাগল না হয় কবি । আমি এ দুয়ের একটাও আশা করি নই। সুতরাং সে-কবিতার কোন মূল্য ছিল না। তবে আমার প্রথম যৌবনের এই প্রয়াস উল্লেখযোগ্য দুই কারণে, প্রথম, এই সময়েই আমার অস্তরে একটু দেশাত্মবোধ জন্মিতে আরম্ভ করে । তাহারই প্রেরণায় জীবনের প্রথমে এসকল রচনাতে প্রবৃত্ত হই। দ্বিতীয় কারণ এই যে, আমার এই অতি অকিঞ্চিৎকর সাহিত্য-সেবার আকাঙ্ক্ষীর সূত্রেই শ্ৰীযুক্ত স্বন্দরীমোহন দাসের সঙ্গে প্রথম যৌবনের সখ্য-সম্বন্ধ গড়িয়া উঠে । স্বন্দরীমোহন ১৮৭৩ ইংরাজীতেই প্রবেশিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হইয়া মাসিক ১৫ বৃত্তি লইয়া কলিকাতা প্রেসিডেন্সি কলেজে আসিয়| ভৰ্ত্তি হয়েন। এ বৎসর গ্রীষ্মের ছুটিতে শ্রীহট্টে ফিরিয়া গেলে আমার অকিঞ্চিৎকর সাহিত্যসেবার কথা শুনিয়া বিশেষ ভাবে আমাকে তাহার সথ্যসূত্রে আবদ্ধ করেন । এই বৎসরই নভেম্বর মাসে আমিও প্রবেশিকা পরীক্ষা দেই এবং কোনরকমে তৃতীয় শ্রেণীতে উত্তীর্ণ হই । ১৮৭৪ ইংরাজীতেই শ্রীহট্ট বাংলার শাসন হইতে বিচ্ছিন্ন হইয়া নব প্রতিষ্ঠিত আসাম শাসনের এলাকাভূক্ত হয়। শ্রীহট্টের শিক্ষিত সমাজ এই ব্যবস্থার গুরুতর প্রতিবাদ করেন । আমার বাবা প্রতিবাদীগণের অগ্রণীদলভুক্ত ছিলেন । কিন্তু র্তাহাদের এই প্রতিবাদ অগ্রাহ হয়। ঐট আসাম ভুক্ত হওয়াতে আমার পক্ষে বিড়ালের ভাগ্যে শিক ছড়ে । তৃতীয় শ্রেণীতে প্রবেশিকা পরীক্ষা পাশ করিয়াও এই জন্য আমি মাসিক ১০২ টাকা বৃত্তি লইয়। ১৮৭৫ ইংরাজীর প্রথমে কলিকাতায় আসিয়া প্রেসিডেন্স কলেজে ভৰ্ত্তি হই । 3& ১৮৭৪ ইংরাজী ডিসেম্বর মাসে আমার শ্রীহট্টের ছাত্রজীবনের শেষ হয় । এই মাসের শেব ভাগে আমি আত্মীয় পরিবারবর্গ সকলকে ছাড়িয়া একাকী সুদূর কলিকাতা প্রবাসে যাত্রা করি । এখন শ্রীহট্টের পথে রেল হইয়াছে। পঞ্চাশ বৎসর পূৰ্ব্বে আমরা ইহা কল্পনাতেও অনিতে পারি নাই। আমার বাব তীর্থ করিবার জন্য এবং বিষয়কৰ্ম্ম উপলক্ষে একাধিক বার কলিকাতায় আসিয়াছিলেন, তখন কুষ্ঠিয় পৰ্য্যস্ত র্তাহাকে নৌকায় আসিতে হইয়াছিল । গোয়ালন্দ পর্যন্ত তখন রেল হয় নাই । কুষ্ঠিয়াই পূর্ববঙ্গ রেলের শেষ সীমানা ছিল। তারও পূৰ্ব্বে বাবা যখন সৰ্ব্বপ্রথম কলিকাতায় আসেন তখন পূর্ববঙ্গ রেলেরও পত্তন হয় নাই। সৰ্ব্বপ্রথমে তিনি নৌকাযোগে কাশীপৰ্য্যন্ত গিয়াছিলেন। ইষ্ট ইণ্ডিয়া রেলও তখন খোলে নাই। সেকালে কাশীর ত কথাই নাই, কলিকাতায় যাতায়াত করাও সহজ ছিল না । গঙ্গাস্বান