পাতা:প্রবাসী (সপ্তবিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৬৯৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৫ম সংখ্যা ] পরভৃতিক もy" এনে দিই। বারণ করলুম যে, একাদশীর দিনট। অমন টে। টাে ক’রে বেড়িও না বাপু, শেষে নিজেই ভূগবে, ত কারে কথা শুনবার মেয়ে ত তুমি নও! এখন কিছু ভাল মন্দ না হ’লেই হয় । ওরে ও মাধী, তেল দিয়ে যা না । নবাবের বেটিদের এখনও ঘুমই ভাঙেনি নাকি ?” নবাবের বেটীদের ঘুম ভাঙিয়াই ছিল। একজন ঝি তেলের বাটি হাতে তৎক্ষণাৎ ঘরের ভিতয় আসিয়া হাজির হইল । ভানুমতী খাট হুইতে নামিয়া একখানি পাটির উপর বসিল । গলা হইতে একগাছি সরু বিছ|হার খুলিয়া পাশে রাথিয় বলিল, “নে, তেলট দিয়ে দে। জানিস্ ভবানী, এইটুকু যে পরি, তাও লোকের পোড়! চোখ এড়ায় না। ভাবে, বুড়ে মাগী, বিধবা হয়েছে, তবু গয়না পরার সর্থ যায় না । এক এক সময় ভাবি খুলে রাখি, কিন্তু মন ওঠে না রে ।” যে ঝিটি তাহার স্বদীর্ঘ চুল খুলিয়া তেল দিয়া দিতেছিল সে বলিল, “লোকের মুখে আগুন মা, তাদের কথায় তুমি কান দিও না । তোমার ছেলে রয়েছে অমন রাজপুত্তরের মত, গলা খালি করলে তার অকল্যাণ হবে ।” পুত্রের নাম হইতেই ভানুমতীর মুখের উপর একটি গভীর স্নেহের ছায়া ঘনাইয়া আসিল । সে হাসিয়া বলিল, “মনে আছে রে ভবানী, যেদিন প্রথম থান কাপড় পৰ্বসুম, সেদিন থোকা কি রাগারগিটাই না করলে। বলে তোমার হাতে আর আমি খাব না, তুমি বিচ্ছিরি। তখন ত তবু ছোটটি ছিল, বড় হ'য়েই কি জ্ঞান-বুদ্ধি কিছু বেশী হয়েছে ? ও বছর বল্লুম, ‘প্রয়াগে গিয়ে এবার চুল কটা ফেলে আসব, বয়েস ত হ’চ্ছে, এখন তিথি-ধৰ্ম্ম কিছু করি, তাতে বলে কি, ‘অমন বেলের মত মাথা ক’রে যদি তুমি এসে, তা হ’লে আমি বাড়ীর থেকে বেরিয়ে যাব, তোমার মুখ দেখবো না । বাবা যে কেন তোমাকে টাকাকড়ি খরচ ক’রে লেখা-পড়া শিখিয়েছিলেন তা জানি না, সবই তোমার পাড়াগেয়ে বুড়ীদের মত।’” ভানুমতী সব কথাই প্রায় ভবানীকে লক্ষ্য করিয়া বলিতেছিল, কিন্তু সে কোনে কথার উত্তরে কিছু না বলিয়া নীরবে আপনার কাজ করিতেছিল। পারতপক্ষে কথা না বলাই তাহার স্বভাব হইয়া দাড়াইয়াছিল। উত্তর দিবার ভার লইয়াছিল মাধবী কি । সে বলিল, "দাদাবাবুর যা কথা, মা ! সেটের কোলে বড়টি হ’য়েছেন, এখন বিয়ে-থাওয়া দিয়ে দিলে বেশ হয়। তখন আর মাকে কেমন দেখাচ্ছে, সে-কথা বেশী ভাববেন না । যে বয়সের যা মা ; একটি বৌরাণী এলে আমাদেরও বাড়ী সাজস্ত হয়। এত বড় বাড়ী সেন খ খ করছে, লোক নেই, জন নেই।” ভাতুমতী বলিল, “আমারই কি অসাধ বাছা ? বয়সও হয়েছে, রোগেও ধরেছে, এথন খোকার বিয়ে দিয়ে যেতে পাবুলে আমি নিশ্চিস্তে চোথ বুজতে পারি। কিন্তু নাতিনাতনী দেখে মরার সুখ কি আর এ পোড়া কপালে আছে ? যা সন্ন্যাসী ছেলে, ওর জমিদার-বাড়ীর ছেলের মত কোনো হাল-চাল নেই । বিয়ে করতেও রাজী হয় না, তা না হ’লে মিত্তিররা কি কম সাধাসাধি করছে মেয়ে নিয়ে ? ঘরও ভাল, মেয়েও ভাল। তবে একটু ছোট, এই ধা। তা বাঙালীর ঘরে কিছু অসাঞ্জস্ত হ’ত না, কিন্তু ছেলের পছন্দই অন্য রকম ।” ভবানী এতক্ষণে কথা বলিল, “ষে-সময়ের যেমন, তেমন ত হ’বে বাছ ? আজকালকার কোনো ছেলেই কচি বেী পছন্দ করে না, তা তোমার ছেলেই বা করতে যাবে কেন ? তার চায় বে। তাদের সঙ্গে সব বিষয়ে সমানে চলুক ! আমি ত ভালই বলি সেট, ঘরে বে। ঘোমটা টেনে শাশুড়ী-ননদের মধ্যে বসে থাকবে, আর ছেলে ওদিকে কোথায় বাইঞ্জি, কোথায় নাচওয়ালী এই সব নিয়ে ঘুরবে, সেই কি ভাল ? বউ যদি সব দিক দিয়ে মন জোগাতে পারে, তাহ’লে কি আর ছেলেদের ওসব বদখেয়াল হয় ? তুমি বাপু, ছেলের অমতে বে। জোটাতে ষেও না, তাতে ভাল হবে না, এই তোমাকে বলে দিলুম। দেখতে না জ্ঞানদা কেমন করত তোমাকে ইংরিজি শেখাবার জন্তে, গান-বাজনা শেখাবার জন্তে ? তোমার শ্বশুর চালাক মাছুষ ছিলেন, কোনোদিন আপত্তি করেন行”