পাতা:প্রবাসী (সপ্তবিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৭০০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৫ম সংখ্যা ] পরে। যা ভয়ানক রোদ এখন । তুই খেতে বোস্। মেজদিদিকে কিন্তু আজ মেয়ে দেখার কথা আমি বলব, তারপর যেন আমাকে বিপদে ফেলো না ।” স্ববীর বলিল, “না, না, তোমার ভাবনা নেই, দেখব যখন বলেছি তখন দেখবই, যা থাকে কপালে। আমাকে কি একলাই যেতে হবে নাকি ? কবে এবং কোন সময়ে ? শনি কি রবিবারে দিন ঠিক কোরে, তা না হ’লে আমি কিন্তু পারব না।” ভানুমতী বলিল, “আচ্ছা, আস্চে শনিবারের কথাই ব’লে দেব। একলা যাবি কেন, বন্ধু-বান্ধব সঙ্গে নিস্। দেওয়ানজীকেও ব’লে পাঠাব, তিনিও আসবেন । একআধজন বুড়ে মানুষ সঙ্গে থাকা ভাল ।” যবদ্বীপের পথে و هر \ স্থবীর বলিল, “একজন কেন দশজন বুড়ে তুমি সঙ্গে দিও। আর খুকীটিকে কি কি জিগগেস করতে হবে, তাও শিখিয়ে দিও। তা না হ’লে আমি হয়ত কি যা তা প্রশ্ন করব, সে ভয়ে কেঁদেই ফেলবে ।” ভানুমতী বলিল, “ধ, যা, সব তাতে ফাজলামি । আমারও ত অল্প বয়সে বিয়ে হ’য়েছিল, কৈ কত কেঁদেছিলাম ? বাঙালীর মেয়ে তেরো বছরেই বেশ পাকপোক্ত হ’য়ে যায়। দেখিস এখন, কিছু খুকী নয়।” সুবীর নীরবে থাইতে লাগিল। "যাই, মেজদিদির জন্তে গাড়ীট পাঠিয়ে দিইগে,” বলিয়া ভানুমতী ঘর হইতে বাহির হইয়া গেল । ( ক্রমশ: ) যবদ্বীপের পথে X | রেলে মাদ্রাজ শ্ৰী সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায় ১২—১৪ই জুলাই । আঁবোম্রাজ (Amboise) জাহাজ শনিবার ১৬ই জুলাই। উপরে পরিষ্কার আকাশ—ফিকে নীল, ধারে ধারে দিক্‌চক্রবালের উপরেই সাদা সাদা মেঘ ; সকালের বালস্বর্ঘ্যের মিষ্টি রোদুর সমস্ত উদ্ভাসিত করে দিয়েছেনীচে সমুদ্রের কালাপানি আর এখন ঘন নীল নয় ; সকালের সূর্যের কোমল স্পর্শে তার গাঢ় রঙটাও একটু হালকা হয়ে চমৎকার দেখাচ্ছে—এ যেন একেবারে ভূমধ্যসাগরের সমুদ্র । কাছে কাছে, দূরে সব জায়গায় টগবগে ফেনায় ছোট ছোট ঢেউ ভেঙে পড়ছে—এরি মধ্যে জল কেটে কেটে আমাদের জাহাজ চলেছে। এই জল কেটে যাওয়ায় একটা একটানা আওয়াজ বরাবর আমাদের জাহাজের জীবনের background বা চিত্র ভিত্তির মতন হ’য়ে রয়েছে-জলোচ্ছ্বাসের শব্দ, মাঝে মাঝে যেন একটা সজোর ফোস-ফোসানি-সমস্ত আওয়াজট। মিশে মনে যে-ভাব আনে সেটা হ’চ্ছে কবির কথায় “অসীম রোদন জগৎ প্লাবিয়া দুলিছে যেন।" আকাশ প্রসন্ন দৃষ্টিতে সাগরের দিকে স্নিগ্ধভাবে চেয়ে আছে । আমাদের বাঙালী কবি রবিদত্তের একটি ছোট ইংরেজী কবিতার একটি লাইন এখন মনে আসছে,— Jove on Neptune smiles così:fontsi Ryd-cwt.*; উপর স্মিতহাস্যে নেত্রপাত করছেন । কালকের দিনটা বিকাল থেকে মেঘাচ্ছন্ন ছিল । সারা বিকাল আর সন্ধ্যা আমরা উপরের ডেকে রেলিংয়ের ধারে বসে বসে বৃষ্টির কুহেলী দেখে আর জলের উপর বৃষ্টি-বিন্দুপাতের শব শুনে কাটিয়েছি। সন্ধ্যার সময়৪ মেঘ কাটেনি, যদিও স্বৰ্য্য অন্ত যাবার কালে এক চমৎকার ফিরোজ রঙের