পাতা:প্রবাসী (সপ্তবিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৬৯৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৬৭e প্রবাসী—ভাদ্র, ১৩৩৪ [ ২৭শ ভাগ, ১ম খণ্ড স্বীর বলিল, “ধ খুশী ক’রগে, আমি এখন চললাম। আজ যেন বেশী ঘোরাঘুরি কোরো না । এমন-কি বামুনঠাকুরুণের রান্নার তদারক করবার লোভও ত্যাগ কোরে। প্রতি একাদশীর পর অমুখ করা ত তোমার এক রুটন দাড়িয়ে গেছে। অন্ততঃ বৈচিত্র্যের খাতিরেও দু একবার সেটা বাদ দাও।” এই বলিয়া সে চলিয়া গেল । ভানুমতী ভবানীকে ডাকিয়া বলিল, “রান্না-বান্নাগুলো দেখিল একটু আজ। আমার অভিভাবক বাবাটি আমার আঞ্জ নীচে নাম বারণ ক’রে দিয়ে গেলেন। নতুন বাম্নী মগীর যা রয়োর ছিরি, তা ভূতেও খেতে পারে না। মেয়ে মানুষের হাতে যে আবার এমন অখাদ্য স্বষ্টি হয় তাও জানতুম না। আর পাশের বাড়ীর বুড়োঠাকৃরুণকে একটু ডেকে দিয়ে যা, গল্প-স্বল্প করি, একলা হ৷ ক’রে বসে থেকে আর কি করব ?” ভবানী ঘাড় নাড়িয়া নীচে নামিয়া গেল। এ বাড়ীর রান্নাঘর, ভাড়ারঘর, থাইবার ঘর প্রভৃতি সবই নীচে । তবে বাড়ীতে লোকের সংখ্যা এত কম যে, আজকাল আর ঘটা করিয়া খাইবার ঘরে কেহই খাইতে যায় না । সাহেবী ধরণে সজ্জিত খাইবার ঘরটি তাল। বন্ধই থাকে, কারণ সাহেব-স্ব বাকে খানা দিয়া তাহাদের অনুগ্রহ অর্জনের দিকে বর্তমান জমিদারটির একটুও উৎসাহ নাই ; নিজেও সে উপরেই খায়, বসিবার ঘরে পড়ার টেবলের উপর । বাহারের ডাইনিং রুমটি মাঝে মাঝে খোলা হয় । দামী রূপার বাসন, চীন। মাটির বাসন প্রভৃতি ভবানীর তদারকে একবার ধুইয়। মুছিয়া, ঝাড়িয়া ভূত্যেরা আবার অালমারী সাজাইয়। রাখে, তারপর দরজায় আবার তালা চাবাঁ বন্ধ হয় । ভানুমতী ত নিজের গুইবার ঘরেই খাওয়া-দাওয়া চুকাইয় লয়, ডাক্তারের হুকুমে তাহার দিনে দুইবারের বেশী সিড়ি ওঠা-নাম কর। বারণ । বেলা ক্রমেই বাড়িয়া চলিল। স্থবীর থাইয়া-দাইয়া, গাড়ী চড়িয়া কলেজে চলিয়া গেল। ভানুমতীরও খাওয়াদাওয়া শীঘ্রই চুকিয় গেল। বাকি রহিল কেবল বাড়ীর বি-চাকরের मण । उशब रेशमउ शश्न ५नि খাইয়া, মাদুর, কম্বল, চট, খবরের কাগজ যে যঃ পাইল, তাহাই পাতিয়া মুখে নিস্ত্র। দিল। উপরের তলায় ঘরে ঘরে গরম হাওয়ার ভয়ে দরজা জানূল বন্ধ হইয়া গেল । বৈদ্যুতিক পাখার ডানার ঝপটায় বিশেব কিছু যে আরাম পাওয়া গেল তাহা নহে, তবু মন্দের ভাল বলিয়া ভানুমতী পাথার তলায় শীতলপাটী বিছাইয়া, একখানা যোগবাশিষ্ট রামায়ণের বাংলা অনুবাদ হাতে করিয়া দীর্ঘ দুপুরবেলাটা কোনো গতিকে কাটাইয়৷ দিল । মে রেীত্রের ঝাজ কমিয়া আসিল । জানলা-দরজা একে একে খুলিতে লাগিগ। বই মুড়িয়া রাখিয়া ভানুমতী উঠিয়া বসিয়া, তাকাইয়া দেখিল দেয়ালের গায়ে ঝোলানে। বড় ঘড়িটার দিকে । তাহার পর দাসীকে ডাকিয়া বলিল, "ওরে মাধী, ফলটলগুলো, আর মিষ্টি সব দিয়ে যা, অমনি ছোট বঁটিটাও আনিস খোকা কলেজ থেকে ফিরেছে কি না একটু খবর নেত।” - মাধবী আসিল, রঙীন বেতের ডালায় নানারকম ফল ও একটি বঁট লইয়া, পিছনে মিষ্টি লইয়া আসিঙ্গ ভবানী । ঘরে ঢুকিয়া বলিল, “ছেলের আঞ্জ মেনে আজ ভালই আছ দেখছি । না হয়, আমিই আজ ফলটলগুলো ছাড়িয়ে দিই ?” ভানুমতী বলিল, “ন, না, আমি বেশ পারব, তুই দে। সারাদিন কি হাত প। গুটিয়ে ব’সে থাকা যায় ? খোকা ফিয়েছে, মাধী ?” নীচে মোটরকার থামিবার ও দরজা-খোলার শব্দ শোনা গেল। “এই এলেন”,“এই এলেন,” বলিয়। মাধবী তাড়াতাড়ি বাহির হইয়। গেল। ভানুমতী বঁট লইয়। ফল কাটিতে বসিল । কয়েক মিনিটের মধ্যেই সব ঠিকঠাক করিয়া ঝির হাতে দিয়া ভামুমতী ছেলের ঘরের দিকে চলিল । স্থবীর মুখ ধুইতেছিল। মায়ের পদশকে তোয়ালে দিয়া মাথা-মুখ ঘষিতে ঘষিতে বসিবার ঘরে আসিয়। বলিল, “এই যে আজ দিব্যি লক্ষ্মী মেয়ে হয়েছ, অমুখ-বিমুখ কিছু করেনি ত? মাসীমার জন্তে গাড়ী প্লাঠাতে পার এখন, অামার আর দরকার নেই।” ভাতুমতী বসিয়া বলিল, “এই যে পাঠাব জার-একটু