পাতা:প্রবাসী (সপ্তবিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৮০২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

({ সংখ্যা } মুসলমানদের সাহায্যের জন্য যখন লক্ষ লক্ষ টাকা প্রেরিত হইতে পারে, খিলাফং ফণ্ডের জন্য লক্ষ লক্ষ টাকা উঠিতে পারে, তখন মুসলমান সমাজে নিশ্চয়ই টাকা আছে। কিন্তু ইহা সত্য হইতে পারে, যে, মাহারা ধনী বা সঙ্গতিপন্ন তাহারা বিদ্যাকুরাগী নহেন। তাহদের বিদ্যাকুরাগ জন্মিলে মঙ্গল হইবে । অর্থাভাববশতঃ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সংস্কৃতের অধ্যাপকের পদ উঠাইয়। দেওয়া হয় । কিন্তু অর্থাভাব প্রকৃত বা একমাত্র কারণ না হইতেও পারে। মুসলিম হল নিৰ্ম্মাণে এত বেশী টাকা খরচ করিবার একটা কারণ সম্ভবতঃ এই, যে, বাড়ীটি বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্য সব বাড়ীর মত করা হইবে। সেগুলি ঢাকায় পূৰ্ব্ববঙ্গের রাজধানী স্থাপন উপলক্ষে নিৰ্ম্মিত হইয়াছিল। কিন্তু এখন শিক্ষিত মুসলমান সমাজ হয় ত জাকাল বাড়ী অপেক্ষা সাদাসিধা বাড়ী ও অধিকতর শিক্ষাবিস্তার পছন্দ করিবেন । তাহাদের মত জিজ্ঞাসা করিলে কেমন হয় ? চামার ছাত্রের উপর ন্যায্য ব্যবহার লাহোরের আর্য্যসমাজীদের কলেজে একটি চামার ছাত্র ভৰ্ত্তি হয় ও তাঁহাকে কলেজের ছাত্রাবাসে স্থান দেওয়া হয় । তাহাতে অষ্টজাতীয় ছাত্রেঃা আপত্তি করে নাই। কিন্তু পাচক ব্রাহ্মণের। তাহাতে আপত্তি করে, এবং তাহার জন্য রাধিতে ও পরিবেযণ করিতে হইবে বলিয়া তাহার। ইস্তফা দেয় । কলেজের কর্তৃপক্ষ তাহাদিগকে অনেক বুঝান, কিন্তু তাহাদের মত পরিবর্তিত না হওয়ায় তাহাদের ইস্তফা গৃহীত হয় । শান্তিনিকেতনে একবার এইরূপ একটি ঘটনা ঘটে। সেক্ষেত্রে ছাত্রটি ছিল মুসলমান, এবং আপত্তি করিয়াছিল হাড়িজাতীয় ভূত্যের। কর্তৃপক্ষ দৃঢ়তা অবলম্বন করিয়ছিলেন । বঙ্গের নদীতে ষ্টীমার যাত্রীর দুর্দশ আমার বাড়ী পশ্চিম বঙ্গে, জীবনের অধিকাংশ সময় বাঁকুড়া, কলিকাতা ও এলাহাবাদে কাটিয়াছে। আমি গরুর গাড়ী, ঘোড়ার গাড়ী, উট গাড়ী ও রেল গাড়ীতে ভ্রমণে অভ্যস্ত ছিলাম। সম্প্রতি দুই একবার অল্প সময়ের জন্ত পূর্ববঙ্গের নদীতে ষ্টীমারে যাতায়াত করিয়াছি। ষ্টীমারগুrলর প্রথম শ্রেণীর কক্ষগুলি চলনসই, কিন্তু প্রথম শ্রেণী নামের সম্পূর্ণ অযোগ্য। পাখা নাই। তাহার স্নানাগার ও শৌচাগার অপরুঃ । দ্বিতীয় শ্রেণীতে কামরা আছে দেখিলাম একটি পুরুষদের ও একটি মেয়েদের বিবিধ প্রসঙ্গ—শ্ৰীযুক্ত সত্যেন্দ্রচন্দ্র মিত্রের মুক্তি ৭৭১ জন্য। সিন্ধুক্ষবৎ, বায়ুচলাচল নাই, এবং প্রায় এঞ্জিনের উপর স্থাপিত বলিয়া খুব গরম। পাখা নাই। স্নানগার শৌচাগার কোথায় আছে দেখি নাই । শুনিয়াছি নীচের তলায় আছে । এরূপ বন্দোবস্ত অত্যন্ত অসুবিধাজনক, বিশেবত: নারীদের জন্ত । তৃতীয় শ্রেণীর যাত্ৰীদের জন্ত বসিবার কোন বন্দোবস্তই নাই, এবং ছাদ এরূপ যে ঝড়বৃষ্টিতে মাথা বচোন দায় । আমরা রেলগাড়ীর কৰ্ত্তাদিগকে তৃতীয় শ্রেণীর যাত্রীদের স্বাচ্ছন্দ্যের প্রতি উদাসীনতার জন্য দোষ লি ; কিন্তু কোন কোন বিষয়ে তাহার। ষ্টীমারের কর্তৃপক্ষদের চেয়ে ভাগ। ষ্টীমারের তৃতীয়শ্রেণীর যাত্রীদের জন্য শৌচাগার ষােহ আছে শুনিয়াছি, তাহার আলাদা আলাদা দরজা কপাট নাই। ইহ ব্যবহার কর; পুরুষদের পক্ষে ও লজ্জাকর, নারীদের পক্ষে অসম্ভব। বাঙালী এরূপ সহিষ্ণু অথবা জড়প্রায় জাতি, যে, এইরূপ বন্দোবস্ত ও ব্যবহার বহু বস্তু বৎসর ধfয়া মুখ বুজিয়া সহ করিতেছে। পরাধীনত মাহুষের । এমনি ক্ষতিই করে ! শ্ৰীযুক্ত সত্যেন্দ্রচন্দ্র মিত্রের মুক্তি বিনা বিচারে রাজবন্দী সত্যেন্ত্ৰচন্দ্র মিত্র মহাশয় বিনাসর্তে খালাস পাইয়াছেন। তিনি ধে আবার • আত্মীয়স্বজন বন্ধুবান্ধবের সহিত মিলিত হইলেন, জনসেবার স্বযোগ পাইলেন, ইহ। আনন্দের বিবা । তাহার নিকট হইতে, রাজবন্দীদের প্রতি কিরূপ ব্যবহার করা হয়, সে-বিষয়ে সৰ্ব্বসাধারণ অনেক খাটি খবর পাইয়াছেন । মধ্যে মধ্যে খবরের কাগজে দেখা যাইত, যে, রাজবন্দীর কোন কোন সৰ্ত্তে দস্তখত করিলে গবন্মের্ণ র্তাহাদিগকে খালাস দিতে রাজী আছেন । র্তাহার নিকট হইতে জানা গিয়াছে, যে, সূৰ্ত্তগুলি এরূপ, যে, তাহাতে দস্তখত করিপে পরোক্ষভাবে নিজেকে অপরাধী বা অপরাধপ্রবণ বলিয়। মানিয়া লইতে হয় ; এবং ইহা মোটেই সত্য নহে, যে, দস্তখত করিলেই মুক্তি পাওয়া যায়। দস্তখত করান হইয়া গেলে গবষ্মেণ্ট মুক্তি দিতে পারেন, ন দিতেও পারেন। থষরের কাগজে বাহির হইয়াছে, গবন্মেণ্টের সর্ভগুলি একজন রাজবনীর নিকট উপস্থিত করায় তিনি নিজে সরকার বাহাকুরকে নিম্নলিখিত সৰ্বগুলি পালন করিতে অনুরোধ করেন :– ১ । গবন্মেণ্ট তাহাকে বন্দী করিয়া অন্যায় করিয়াছেন, তাহা স্বীকার করুন ও ক্ষমা প্রার্থনা করুন ; ২ । এতদিন তাহার স্বাধীনতা হরণ করার জন্তু ক্ষতিপূরণ করুন ;