পাতা:প্রবাসী (সপ্তম ভাগ, দ্বিতীয়াংশ).djvu/৬৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

*৪১২ རྩེ་གྷེ་ དག་དག་ কাগক্ষুে কাটা অক্ষরে ফুলার সাহেবের প্রতি স্বাগত সম্ভাষণস্থচক শব্দসমষ্টি বসাইতেছিলেন, এমন সময় জাতীয় বিদ্যালয়ের কতিপয় যুবক ও বালক আসিয়া তাহার সহিত সাক্ষাৎ করিল। একজন যুবক তাহাকে বিনীত নমস্কার কারয়া বলিল—“আপনি এ কি করছেন ?” সুবোধচন্দ্র অত্যন্ত ভাল মানুষের মত ৰলিলেন-—“কাল লাটসাহেব আসছেন কিনা,—তাই বাড়ীটে একটু সাজাচ্ছি।” “কেউ বাড়ী সাজাচ্ছে না—আপনি সাজাচ্ছেন কেন ?” “কেন, তাতে দোষটা কি ?” “বঙ্গচ্ছেদের জন্তে সবাই এখন শোকে মগ্ন রয়েছে— এই কি উৎসবের সময় ?” “শোকে মগ্ন রয়েছে নাকি ?—কেন শোক কিসের ? সবাই ত বেশ হেসে খেলে বেড়াচ্ছে দেখছি।” “আপনি কি তবে বঙ্গচ্ছেদ আনন্দের বিষয় বলে মনে করেন ?” স্থবোধচন্দ্র একটু বিপদে পড়িলেন। বিগত ৩০শে আশ্বিন যে সভা হইয়াছিল—তাহাতে তিনি উচ্চকণ্ঠে বলিয়াছিলেন--“ভাই বাঙ্গালী—মায়ের অঙ্গে এ খঙ্গাঘাত— এ রুধিরপাত—যতদিন এর প্রতিশোধ আমরা না নিতে পারব —ততদিন যেন কোন রকম বিলাস বিভ্ৰমে আমরা মগ্ন না হই”—ইত্যাদি । স্ববোধচন্দ্র নীরব রহিলেন। বালকেরা অনেক কাকুতি মিনতি করিল। একজন বলিল—“আপনার পায়ে ধরি-- এসব ভেঙ্গে ফেলুন।” সুবোধচন্দ্র বলিলেন--"এত খরচ করে করলাম সব নষ্ট হবে ?” বালকের বলিল—“আপনার যা খরচ হয়েছে বলুন,— আমরা ইস্কুল থেকে চাদ তুলে—নিজেদের জলখাবারের পয়সা থেকে বাচিয়ে—আপনার ক্ষতিপূরণ করে দেব। অনুমতি করুন—আমরা নিজে এসব ভেঙ্গে ফেলি।” সুবোধ চন্দ্রের বুকের মধ্যে ঝনাৎ করিয়া একটা ব্যথা বাজিয়া উঠিল। কিন্তু তাহ একমুহূর্তের জন্ত মাত্র। একটু ক্রোধের ভাণ করিয়া বলিলেন-“যাও যাও বিরক্ত কোরোনা। সকল কাষেই তোমরা খোচা দিতে শিখেছ । যাও লেখা পড়া করগে।” প্রশ্বাসী। [ १थ छाण । বালকেরা তখন হতাশ হইয়া ফিরিয়া গেল। স্ববোধ ভাবিলেন-এ সকল বালক যেরূপ দুর্গান্ত, কি জানি রাত্রে যদি আসিয়া সব ভাঙ্গিয় দেয় ? তৎক্ষণাৎ পোষাক পরিয়া পুলিস সাহেবের কুঠীর অভিমুখে ছুটিলেন। সেখানে পৌছিয়া"গুনিলেন সাহেব বাড়ী নাই—ম্যাজিষ্ট্রেট্‌ সাহেবের কুঠতে গিয়াছেন। স্থবোধ বাৰু ম্যাজিষ্ট্রেট, সাহেবের বাঙ্গলায় গিয়া, পুলিস সাহেবের নিকট নিজ কার্ড পঠাইয়া দিলেন । * অবিলম্বে র্তাহার আহবান হইল। ম্যাজিষ্ট্রেট ও পুলিস সাহেব একত্র বসিয়া ছিলেন। সুবোধ বাবু গিয়া উভয়কে সেলাম করিয়া দাড়াইলেন। পুলিস সাহেব বলিলেন—“কি বাবু ? কি চাই ?” “হুজুর, কাল লাট সাহেব আসিবেন বলিয়া আমি আমার বাড়ী কিঞ্চিৎ সাজাইয়াছি। লোকপরম্পরায় শুনিলাম, ইস্কুলের ছেলের রাত্রে আসিয়া সমস্ত ভাঙ্গিয় দিবে।” পুলিস সাহেব বলিলেন—“আপনি কি আজ বাজি পোড়াইবার অনুমতি চাহিয়াছিলেন ?” “হুঁ হুজুর—আমিই।” ম্যাজিষ্ট্রেট সাহেবকে পুলিস সাহেব বলিলেন—“ইহঁারই কথা আপনাকে বলিতেছিলাম।” সুবোধকে বলিলেন— “আচ্ছা সে জন্ত আপনার কোনও চিন্তা নাই। আপনার বাড়ীর সম্মুখে সমস্ত রাত্রি পাহারা দিবার জন্ত আমি এখনি চারিজন কনেষ্টবল হুকুম করিতেছি।” ম্যাজিষ্ট্রেট সাহেব স্মিতমুখে জিজ্ঞাসা করিলেন—“আপনি ऎकीौल ?” - “আজ্ঞা হুঁ ৷” “বেশ । আপনার রাজভক্তি দেখিয়া সন্তুষ্ট হইলাম। আপনি কল্য দরবারে উপস্থিত হইতে ইচ্ছা করেন ?” সুবোধ সবিনয়ে বলিলেন---“হুজুর, সেত আমার বিশেষ সৌভাগোর কথা ।” “অলরাইট । আমি আপনাকে নিমন্ত্রণ কার্ড দিতেছি । আপনার নামটি কি ?” সুবোধ নাম বলিল। ম্যাজিষ্ট্রেট সাহেব একখানি কার্ড লইয়া, স্বহস্তে স্থবোধের নাম পূরণ করিয়া, তাহাকে দিলেন!