পাতা:প্রবাসী (সপ্তম ভাগ, প্রথমাংশ).djvu/৩৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১ম সংখ্যা I.] , জীবনোপক্রম তাহার মোটেই ভাল লাগিতেছিল না। জীবন মৃত্যুর মধ্যে ইটািইটি করার চেয়ে যে কোন অবস্থায় নিশ্চিন্ত হইতে পারিলে সে বঁাচিয়া যায়। নদীতে নিরালম্ব ভাসমান কাষ্ঠখণ্ডের জোয়ার ভাটার টানে ইতস্ততঃ ভ্রমণ অপেক্ষ সমুদ্র সমাধি বোধ হয় অধিক বাঞ্ছনীয়। মণিভদ্রের কায়স্থ কৰ্ম্মচারী দ্বারমঞ্জুষার কুঞ্চিকাগুচ্ছঝনৎকারে মণিভদ্রের প্রাণে আনন্দ সঞ্চার করিয়া আসিয়া নমস্কার করিল এবং কৰ্ম্মস্থানে প্রভুর ঝটিতি উপস্থিতি প্রার্থনা করিল। বৈদ্য ও জ্যোতিমী উপস্থিত জিজ্ঞাসু হটলে মাধবিকা বলিল, কেমন ধারণা হইয়াছে যে উমি ব্যক্তি নহেন ।” বৈদ্য গম্ভীরভাবে নাড়ী টিপিয়া বলিল, “অতিরিক্ত অর্থ চিস্তায় মস্তিষ্কবিকৃতি ঘটিয়াছে । প্রকোপ অল্প ভূত হইতেছে । হইয়া আহবানের কারণ *নিদ্রাভঙ্গের পর ঈষ্টার মৃত, প্রেতাত্মা, জীবিত নাড়ীতে বায়ুর বিযম প্রথমত শৈত্যক্রিয় কর্তব্য । তাঙ্গতে উপকার না হইলে মধ্যমনারায়ণ ( উত্তম মধ্যমও চলিতে পারে ) ব্যবস্থ ।" জ্যোতিষী হাত দেগিয়া বলিল, “বুদ্ধিস্থানে চন্দ্র নীচস্থ হওয়াতে এরূপ ভ্রম ঘটিতেছে । শাস্তি ( শাস্তিও বটে ) কর্তব্য ।” প্রাপ্ত-পুনর্জীবন মণিভদ্র উৎফুল্ল হইয়া বলিল, “তোমাদের মুখে আকৃচন্দন বর্ষিত হৌক ; আমি মানিয়া লষ্টতেছি যে আমি জীবিত । কাল তোমরা গণনা ও নাড়ী পরীক্ষণ দ্বারা আমার মৃত্যু নিশ্চিত এবং পরে আমার মৃত্যু ও আমাকে প্রেতাত্মা • বুলিয়া রটনা করিয়া তোমরা কেন আমাকে বিপৰ্য্যস্ত করিয়া তুলিয়াছিলে ?” 'আশ্চৰ্য্য করিলে মণি ভদ্র, ওহে অবাক করিলে ! আমরা তোমার মৃত্যু রটনা করিলাম ! কবে ? কখন ? শিব শিব শিব ! সুস্থ হও মণিভদ্র মুস্থ হও, ওহে আত্মস্থ হও । বোধ হয় কোন দুঃস্বপ্ন দেখিয়া তোমার বুদ্ধি-ভ্রংশ ঘটিয়াছে। তোমার উত্তম-মধ্যম নারায়ণ আবশ্বক ? তোমার শান্তিস্বস্ত্যয়ন কৰ্ত্তব্য ।” ৰৈষ্ঠ ও জ্যোতিষীর এই বাক্যে আশ্বস্ত হইয়া মণিভদ্র বলিল, “যদি সমস্ত ব্যাপারটা স্বপ্ন হয়, তবে ইহা নিশ্চিতই মণিমঞ্জীর । రిు নিতান্ত দুঃস্বপ্ন ! দেখি বাহির হইয়া জননী ধরণীর মুখখান চিরপরিচিত আশ্বাসশাস্তিদায়ক কি না !’ বাহির হইয়া সে দ্বারে কোন মৃত্যুলক্ষণ দেখিল না । পথে নন্দকের সহিত সাক্ষাৎ হইলে নন্দক বলিল, “ভদ্র, কাল সমস্ত রাত্রি বড় দুঃস্বপ্ন দেখিয়াছি । নানা অঘটনের মধ্যে তোমার মৃত্যুর পর তোমার প্রেতমূৰ্ত্তি দেখিয়া, ভ্রাতঃ, বড় ব্যথিত ও ভীত হইয়াছিলীম ! তোমাকে অদ্য প্রভাতে সুস্থ স্বচ্ছন্দ দেখিয়া বড় প্রীত হইলাম।” মণি ভদ্র হাসিয়া বলিল, “আমিও কাল সমস্ত রাঞ্জি ঐরূপ স্বপ্ন দেখিয়া কষ্ট পাইয়াছি । “দুঃস্বপ্নে স্মর গোবিন্দম্।’ স্বপ্নপ্রসঙ্গে আর কাজ নাই ।” অবশেষে মণিভদ্র নিশ্চিন্ত হইয়া শাস্তি করাইল, এবং তাঙ্গর অর্থকামুকতার শাস্তিস্বরূপ ভগবানের এই দুঃস্বপ্ন দেখান মনে করিয়া সে কুসীদ-ব্যবসায় ছাড়িয়া দিল । কেহ কখন তাহার নিকট প্রকত রহস্ত উদঘাটন করে নষ্ট ; সে আমরণ ইহা দুঃস্বপ্ন বলিয়াই জানিয়া রাথিয়াছিল । মাধবিকা আপনার কতকার্যাতায় উৎফুল্ল হইয়া মণিমঞ্জীর লাভ অতিনিশ্চিত স্থির করিয়া অপর সখিদুয়ের পরিহাস পরিসমাপ্তির অপেক্ষা করিয়া রহিল । মালবিকার অনুবন্ধ । যখন মাধবিক জ্যোতিষী ও বৈদ্যের সাহায্যে তাহার স্বামীকে মৃত্যুপরিহাস করিতেছিল, তখন মালবিক স্বামীর চরিত্র শোধন ও মণিমঞ্জীর লাভের উপায়স্বরূপ পরিহাস আয়োজন করিতে নিশ্চিন্ত ছিল না । এক লোষ্ট্র নিক্ষেপে দুই পক্ষী বধ ক{িার ব্যবস্থা তিন সখীরই উদেষ্ঠ ছিল। মালবিক তাহার ভ্রাতা শক্রস্তুপের সাহায্যে, স্থপতি, চিত্রকর, ভাস্কর ও স্বত্রধরের সাহায্যে একটি অপসরণীয় বহিদ্বার প্রস্তুত করাষ্টয় তাহার খণ্ডাংশগুলি লুকায়িত করিয়া রাখিয়া দিল । একদিন সন্ধ্যা হইতে না হইতে নন্দক বাসকসজ্জায় মনোযোগ করিল। চন্দন-কুকুমামুলিপ্ত দেহ, ধূপধূম্রশোধিত কুঞ্চিতকেশে সন্নদ্ধ সুবর্ণ-কঙ্কতিক, শিরোললাটবেষ্টিত-মল্লীকদম্ব, কর্ণস্থ কুণ্ডল, গ্রীবাশোভন কাঞ্চনবিক্রমমালা, বলয় ও কেয়ুর, পুষ্পসারসুগন্ধিত উত্তরীয় ও বসন, কাঞ্চন