পাতা:প্রবাহিণী-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.djvu/২১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
গীতগান

রাঙা মাটির রাস্তা বেয়ে
হাটের পথিক চলে ধেয়ে,
ছোট মেয়ে ধূলায় ব’সে খেলার ডালি একলা সাজায়,—
সামনে চেয়ে এই যা দেখি চোখে আমার বীণা বাজায়॥
আমার এযে বাঁশের বাঁশী মাঠের সুরে আমার সাধন,
আমার মনকে বেঁধেছে রে এই ধরণীর মাটির বাঁধন।
নীল আকাশের আলোর ধারা
পান করেছে নতুন যা’রা
সেই ছেলেদের চোখের চাওয়া নিয়েছি মোর দু’চোখ পুরে,
আমার বীণায় সুর বেঁধেছি ওদের কচি গলার সুরে॥
দূরে যাবার খেয়াল হ’লে সবাই মোরে ঘিরে থামায়,
গাঁয়ের আকাশ সজনে-ফুলের হাতছানিতে ডাকে আমায়।
ফুরায়নি ভাই কাছের সুধা,
নাই যে রে তাই দূরের ক্ষুধা;
এই যে এ-সব ছোটে-খাটো পাইনি এদের কূল-কিনারা,
তুচ্ছ দিনের গানের পালা আজো আমার হয়নি সারা॥
লাগলো ভালো মন ভোলালো এই কথাটাই গেয়ে বেড়াই;
দিনে রাতে সময় কোথা, কাজের কথা তাইতো এড়াই॥
মজেছে মন মজলো আঁখি,
মিথ্যে আমায় ডাকাডাকি;
ওদের আছে অনেক আশা ওরা করুক অনেক জড়ো,
আমি কেবল গেয়ে বেড়াই চাইনে হ’তে আরো বড়ো॥