পাতা:প্রাকৃতিকী.pdf/১১৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
মনুষ্যসৃষ্টি
৯৩

থাকিবার জন্য যে, জীবাঙ্কুরটিকে বহু চেষ্টা করিতে হইয়াছিল তাহা আমরা অনুমান করিতে পারি। কিন্তু সেই জড়যুগে আত্মরক্ষার আকাঙ্ক্ষা ক্ষুদ্র জীবগুলির হাতে কোন্ অস্ত্র দিয়া নিজের পথ নিজে কাটিয়া লইবার পরামর্শ দিয়াছিল, তাহা এখন আর জানিবার উপায় নাই। এই সময়ের সন্ধিবিগ্রহের ইতিহাস চিরদিনই আমাদের নিকট অজ্ঞাত থাকিবে।

 দেশের প্রাচীন ইতিহাস যখন লোপ পাইয়া যায়, চতুর ঐতিহাসিক পণ্ডিত অস্পষ্ট শিলালিপি এবং জীর্ণ মন্দিরের স্থাপত্যনৈপুণ্য পরীক্ষা করিয়া ইতিহাসহীন যুগের অনেক তত্ত্বের উদ্ধার করিয়া থাকেন। জীবতত্ত্ববিদগণও এই উপায়ে তামসাচ্ছন্ন জড়যুগের এক ইতিহাস দাঁড় করাইয়াছেন। তখনকার প্রাকৃতিক অবস্থার কথা মনে রাখিয়া এবং ভূপ্রোথিত শিলাময় জীবকঙ্কাল পরীক্ষা করিয়া ইঁহাদিগকে জীবের পুরাতত্ত্ব লিখিতে হইয়াছে। আধুনিক মানুষ প্রাকৃতিক উপদ্রবকে কৃত্রিম উপায়ে দমন করিয়া চারিদিকটাকে তাহার জীবনের এত অনুকূল করিয়া রাখিয়াছে যে, এখন একবার মানুষ হইয়া জন্মগ্রহণ করিতে পারিলে জীবনটা শেষ পর্য্যন্ত বেশ সহজেই কাটিয়া যায়। ইতর জীবগণ জীবনরক্ষার এই সুবিধাটুকু হইতে বঞ্চিত। তাই বিরুদ্ধ প্রকৃতির সহিত সংগ্রাম করিতেই ইহাদের জীবনের অনেকটা সময় বায়িত হইয়া যায়। প্রাথমিক জীবগণ আধুনিক ইতর জীবের তুলনায় অনেক নিকৃষ্ট ছিল, সুতরাং ইহাদিগকেও যে, বাহিরের শক্তির সহিত সংগ্রাম করিয়া জীবন রক্ষা করিতে হইয়াছিল তাহা নিশ্চিত। এই অবস্থায় অনুকূল শক্তিকে আশ্রয় করিয়া নিষ্ঠুর প্রতিকূল শক্তির সহিত সংগ্রাম করা ব্যতীত আর উপায় থাকে না। প্রাথমিক জীবের জীবনের অনেক সময় এই প্রকার সংগ্রামেই কাটিয়া গিয়াছিল। তার পরও শত্রুর কবল হইতে উদ্ধার নাই দেখিয়া তাহাদিগকে আত্মরক্ষার