পাতা:প্রাকৃতিকী.pdf/১২৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
মনুষ্যসৃষ্টি
১০৩

 নূতন জীব নিঃসহায় শিশুসন্তানগুলিকে প্রসব করিয়া প্রথম প্রথম বড়ই গোলযোগে পড়িত। শাবকগুলিকে শত্রুর কবল হইতে রক্ষা করা তাহাদের জীবনের একটা প্রধান কর্ত্তব্য হইয়া দাঁড়াইত। তত্ত্ববিদগণ বলেন, সন্তানরক্ষার এই চেষ্টাই জীবগণকে উন্নতির পথ দেখাইয়া দিয়াছিল। অনেক সময় দেখা যায়, কোন বিশেষ উন্নতির জন্য যখন সকল অবস্থাই অনুকূল, তখন প্রকৃতি সেই উন্নতিপথ রোধ করিবার জন্য মোহিনী বেশে আসিয়া জীবকে বিপথগামী করিয়া দেয়। নিঃসহায় শাবকগুলিকে রক্ষা করিবার উপায় উদ্ভাবনের জন্য যখন জীবগণ ব্যস্ত, তখন কাহারো উদরের নিম্নে চর্ম্মপুট নির্ম্মাণ করিয়া বা কাহারো লাঙ্গুলে শাবক ঝুলাইয়া রাখিবার ব্যবস্থা করিয়া দিয়া স্বয়ং প্রকৃতি জীবগণের চিন্তা দূর করিতে আরম্ভ করিয়াছিলেন। কাঙ্গারু প্রভৃতি জীব প্রকৃতির এই অবাচিত দান গ্রহণ করিয়া চিন্তার দায় হইতে মুক্তিলাভ করিয়াছিল। অপর জীবগণ মোহিনী প্রকৃতির মায়ায় ধরা দেয় নাই। ইহারা নৈসর্গিক উপায় ত্যাগ করিয়া, স্বাধীন চিন্তার সাহায্যে শাবকরক্ষার উপায় উদ্ভাবন করিবার জন্য চেষ্টা আরম্ভ করিয়াছিল।

 শাবকদিগকে স্তন্যদান করিলেই পিতামাতার কর্ত্তব্য শেষ হয় না। শিক্ষা প্রদানেরও প্রয়োজন। নিজের জীবনের অভিজ্ঞতা বংশধরদিগকে জানাইবার যে, একটুও আবশ্যক আছে, ইহার পূর্ব্বে কোন জীবই তাহা ভাল করিয়া অনুভব করে নাই। নিঃসহায় শিশুসন্তান প্রসব করিতে আরম্ভ করিয়া অবধি জীবগণ এই ব্যাপারটির প্রয়োজনীয়তা বুঝিতে আরম্ভ করিয়াছিল। বৈজ্ঞানিকগণ বলেন, এই জ্ঞান এবং পূর্ব্বোক্ত স্বাধীন চিন্তার চেষ্টা স্তন্যপায়ীদিগকে মনুষ্যত্বের দিকে ধীরে ধীরে অগ্রসর করিয়াছিল।

 আমরা পূর্ব্বেই বলিয়াছি, যে জাতি বা যে ব্যক্তি জীবনের সমগ্র