পাতা:প্রাকৃতিকী.pdf/১২৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১০৪
প্রাকৃতিকী

আবশ্যক সামগ্রী সর্ব্বদাই সম্মুখে প্রস্তুত দেখিতে পায়, তাহার ভবিষ্যৎ উন্নতির আশা অতি অল্পই থাকে। পক্ষিজাতি ও স্তন্যপায়িগণ একই মাতৃগর্ভ হইতে প্রসূত হইয়াছিল, এবং উষ্ণ শোণিত-ধারায় উভয়েরই দেহ শক্তিশালী হইত। সুতরাং এই অবস্থায় উভয়েরই উন্নতি অবশ্যম্ভাবী বলিয়া মনে হইবারই কথা। কিন্তু পক্ষিজাতি উন্নতির পথ ধরিতে পারে নাই। পূর্ব্বোক্ত বিঘ্নটি আসিয়া পথ রোধ করিয়া দাঁড়াইয়াছিল। ইহারা অতি অল্পকাল মধ্যে শরীরের অনেক উন্নতি করিয়াছিল। অদ্যাপি ইহাদের উন্নতদেহের নিকট শ্রেষ্ঠ জীব মনুষ্যকেও পরাভব মানিতে হয়। কিন্তু শরীররক্ষার জন্য যাহা কিছু আবশ্যক তাহার সকলি সম্মুখে প্রস্তুত পাইয়া তাহারা বুদ্ধিচালনার সুযোগই পায় নাই। ইহাই মনুষ্যত্বের সোপানে উঠিবার পথে কণ্টক রোপণ করিয়াছিল। দৈহিক পূর্ণতার সহিত কোন প্রকারে যদি বুদ্ধির পূর্ণতা আসিয়া যোগ দিত, তাহা হইলে পক্ষিজাতি যে কি আশ্চর্য্য জীবে পরিণত হইত তাহা আমরা কল্পনাই করিতে পারি না।

 যাহা হউক সুপথগামী স্তন্যপায়িগণ ইহার পর কোন্ পথ অবলম্বন করিয়া মনুষ্যত্বের দিকে আরো অগ্রসর হইয়াছিল, এখন তাহার আলোচনা করা যাউক। এই পথ আবিষ্কারের জন্য আধুনিক জীবতত্ত্ববিদগণকে বহু গবেষণা করিতে হইয়াছিল। গবেষণাকারীদিগের মধ্যে প্রায় সকলেই এখন একবাক্যে বলিতেছেন, মহাকায় সরীসৃপ দ্বারা আচ্ছন্ন পৃথিবীতে ক্ষুদ্রকায় স্তন্যপায়ী জীবের আবির্ভাব হইলে, ঐ সকল বৃহৎ জীবের আক্রমণ হইতে রক্ষা পাইবার জন্য স্তন্যপায়ীদিগকে নিরাপদ স্থান অনুসন্ধান করিতে হইয়াছিল। সে সময় বৃহৎ বৃক্ষের অভাব ছিল না। জীবতত্ত্ববিদ্‌গণ বলেন, সম্ভবতঃ এই সময়ে অধিকাংশ স্তন্যপায়ী জীবই আধুনিক অপোসম্ (Opossum) প্রভৃতি প্রাণীর আকার ধারণ করিয়া বৃক্ষচর হইয়া দাঁড়াইয়াছিল। ভূ-তত্ত্ববিদ্-