পাতা:প্রাকৃতিকী.pdf/১৪২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

প্রাণিদেহের উত্তাপ

দেহকে উত্তপ্ত রাখা প্রাণীর একটা বিশেষত্ব। উদ্ভিদের দেহেও তাপ আছে, কিন্তু প্রাণিদেহে ইহা যেমন সুস্পষ্ট, উদ্ভিদের দেহে তেমন নয়। সাধারণ নির্জীব বস্তুকে কোন স্থানে রাখিলে, সেখানকার উষ্ণতা সে গ্রহণ করে। লৌহ গোলককে রৌদ্রে রাখিলে সেটি রৌদ্রের উষ্ণতাই গ্রহণ করে; বরফে ডুবাইয়া রাখিলে বরফের উষ্ণতাই গোলকটির উষ্ণতা হইয়া দাঁড়ায়। অর্থাৎ চারিদিকের বায়ু-মৃত্তিকার ন্যায় উষ্ণ হইবার একটা চেষ্টা নির্জীব পদার্থমাত্রেই আছে। সজীব বস্তু তাপের গ্রহণ-বর্জ্জনে এই নিয়ম মানিয়া চলে না। নানাজাতীয় প্রাণীর মধ্যে প্রত্যেকেরই দেহে এক একটা নির্দ্দিষ্ট উষ্ণতা আছে। সেই উষ্ণতাকে রক্ষা করিয়া যখন চলা-ফেরা করিতে পারে, তখনি প্রাণী সুস্থ থাকে। কোন কারণে উষ্ণতার ন্যূনাধিক্য ঘটিলেই বুঝিতে হয়, তাহারা অসুস্থ। সুস্থ মানুষের দেহের উষ্ণতার মাত্রা ফার্ণহিটের যন্ত্রের প্রায় সাড়ে আটানব্বুই ডিগ্রি। খুব শীতল বা গরম স্থানে রাখিলেও সুস্থ মানবদেহের উষ্ণতা এই সীমার উপরে উঠে না এবং নীচেও নামে না। যদি সেই সাড়ে আটানব্বুই কখন নিরানব্বুই হইয়া দাঁড়ায়, তখন বুঝিতে হয় মানুষ অসুস্থ। সুস্থ মানবদেহেরই যে, উষ্ণতার মাত্রা নির্দ্দিষ্ট আছে তাহা নয়, আণুবীক্ষণিক জীবাণু হইতে আরম্ভ করিয়া অতিকায় হস্তী গণ্ডার প্রভৃতি সকল জীবেরই দৈহিক তাপ নির্দ্দিষ্ট আছে!

 প্রাণিদেহের তাপরক্ষার বিষয়টা প্রাচীন পণ্ডিতদিগেরও দৃষ্টি