পাতা:প্রাকৃতিকী.pdf/১৫১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১২৮
প্রাকৃতিকী

অবহেলা করার সামর্থ্য কোন অঙ্গেরই নাই। কাজেই স্নায়বিক উত্তেজনায় পেশী সঙ্কুচিত হইয়া তাপ উৎপন্ন করিতে থাকে, এবং এই তাপই ক্ষয় পুরণের পক্ষে প্রচুর হয়। অধিক শীতে দেহের যে কম্পন হয়, তাহা ঐ স্নায়বিক উত্তেজনাজাত পেশীর সঙ্কোচ ব্যতীত আর কিছুই নয়।

 জমাখরচের খাতায় জমার অঙ্কে যখন বৃদ্ধি দেখা যায়, হিসাবী লোককে ইহার দুই প্রকার কারণ উল্লেখ করিতে দেখা যায়। খরচের পরিবর্ত্তন না করিয়া জমার ঘরে নূতন কিছু যোগ করিতে থাকিলে জমার বৃদ্ধি হয়; তা’ ছাড়া খরচ কমাইতে থাকিলেও জমার অঙ্ক বাড়িয়া চলে। নানাপ্রকার ব্যাধিতে আমাদের দৈহিক উত্তাপের যে বৃদ্ধি দেখা যায় তাহাতে খরচ কমা ও জমা বাড়া এই দুইয়েরই কার্য্য ধরা পড়িয়াছে। সুস্থ মানুষের দেহের উষ্ণতা প্রায় সাড়ে আটানব্বই ডিগ্রি, কিন্তু জ্বর হইলে তাহা বাড়িয়া কখন কখন একশত ছয় বা সাত হইয়া দাঁড়ায়। সত্য সত্য তাপ বাড়িয়া এই উষ্ণতা প্রকাশ করে, কিংবা অসুস্থ মানুষ তাপ বিকিরণ করিতে না পারিয়া কি প্রকারে স্বাভাবিক তাপকে জমাইয়া এই বৃদ্ধি দেখায়, শারীরতত্ত্ববিদ্‌গণ বহু চেষ্টাতেও নিঃসন্দেহে তাহা স্থির করিতে পারেন নাই। বিখ্যাত ইংরেজ শারীরবিৎ ডাক্তার হোয়াইট্‌ (Dr. Hale White) সম্প্রতি এসম্বন্ধে যে সিদ্ধান্ত করিয়াছেন, তাহাই এখন যথার্থ বলিয়া স্বীকৃত হইতেছে। ইনি বলিতেছেন, নিউমোনিয়া অর্থাৎ শ্বাসযন্ত্রের প্রদাহ এবং রিসিপেলাস্ প্রভৃতি রোগে দেহতাপের যে বৃদ্ধি হয়, তাহা প্রকৃতই তাপবৃদ্ধির ফল। এই অবস্থায় দেহে সত্যই তাপের বৃদ্ধি হয়, কিন্তু খরচ পূর্ব্বের মতই চলে; সুতরাং দেহ পূর্ব্বাপেক্ষা উষ্ণ হইয়া পড়ে। শরীরের কোন অংশে পূঁজের সঞ্চয় হইতে থাকিলে যে তাপ বৃদ্ধি হয়, তাহার কারণ উহারি ঠিক বিপরীত। অর্থাৎ এই অবস্থায় তাপের উৎপত্তি পূর্ব্বের ন্যায়ই চলে, কিন্তু